কৌশল পাল্টাচ্ছে মাদক চোরাকারবারীরা

মাদক ব্যবসার অন্তহীন কৌশল। বাজারের ব্যাগে সবজি’র আড়ালে, মোটরসাইকেলের তেলের ট্যাংকিতে, জুতার মধ্যে, এমন কি ঝাড়ুর মধ্যে করেও, মাদক চোরাচালান হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মাদক সিন্ডিকেটের সাথে পেরে উঠছে না আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। তবে, প্রশাসনের দাবি, সাময়িকভাবে হয়তো চোরাকারবারীরা কিছুটা সফল হয়, কিন্তু জিরো টলারেন্স নীতির কাছে তারা ধরাশায়ী হবেই।

দেখতে বাজারের ব্যাগ। ওপরে ধনিয়া পাতা। কিন্তু ভেতরে আরেক ধরণের সবজি মানে গাঁজা। রাস্তায় সাইকেলে চেপে চলা এই ঝাড়ু বিক্রেতা কিন্তু প্রায় লাখোপতি। কারণ, এই ঝাড়ুগুলো যেন তেনো ঝাড়ু নয়, ইয়াবায় ভরা। শৈল্পিক কৌশলে তাতে রাখা হয়েছে ইয়াবা।

খুঁজে পাওয়া গেলো এক ফেন্সিডিল মানবকে। পুরো শরীরে যুদ্ধের বর্মের আদলে তৈরি করা বিশেষ জামা, ফেন্সিডিলে ভরা। ইয়াবা ব্যবসায়ীরা ১০০ টাকার জুতা-স্যান্ডেলকে লাখ টাকার বানিয়ে ফেলেছে। যার পরতে পরতে শুধুই গোলাপী রঙের মরণ-পিল।

এতো ঝুঁকি নিয়ে কেনো, মাদকের চোরাচালানে প্রতিদিনই নতুন নতুন মুখ যোগ দিচ্ছে? বিশ্লেষকরা বলছেন, কাঁচা টাকার লোভ আর চোখের সামনে অনেক সফল মাদক ব্যবসায়ীদের উদাহরণ তাদের উৎসাহিত করছে।

অপরাধ বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান বলছেন, যারা সাপ্লাইয়ার আর যারা তাদের উপরে তাদের মধ্যেই এটি সীমাবদ্ধ থাকছে। কোন কোন সময় সাড়াশি অভিযানে কেউ হয়তো ধরা পড়ছে। কিন্তু বেশিরভাগই থাকছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য এবং মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, চোরাচালানের অভিনব কৌশলের বাস্তবতা স্বীকার করে বলছেন, জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নের চেষ্টায় কমতি নেই।

গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলছেন, এরা নানা অভিনব কৌশল অবলম্বন করছেন। এমনকি মাদক বহনে পাকস্থলীও ব্যবহার করছে। বড় সংঙ্কার বিষয় হলো শিশুদেরও ব্যবহার করা হচ্ছে মাদক চোরাচালানে।

আরও পড়ুন

‘স্বপ্নে’ নাকি আম পেয়েছে, তাই দেখতে আমজনতার ঢল

বিশ্বনবীর (সা.) আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ইরানে ইসলামিক বিপ্লব হয়: আয়াতুল্লাহ খামেনি

এ দেশে অন‍্যায়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াটাই অন‍্যায় : সারোয়ার আলম

অর্থ আত্মসাৎও ব্ল্যাকমেইলের মামলায় গ্রেপ্তার অভিনেত্রী স্বর্ণা

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আহসানুল জব্বার বলছেন, আমরা সব সময় চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের চেষ্টার কোন কমতি নেই।

কিন্তু, বিশেষজ্ঞরা, সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির মাঠ পর্যায়ের বাস্তবায়ন নিয়ে সন্দিহান। জাতীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী বলছেন, মাদকের চাহিদা বাড়ছে তাই সাপ্লাইও বাড়ছে। আগে মাদকের চাহিদা কমাতে হবে। এছাড়াও মাদকাসক্তদের চিকিৎসা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন তিনি। সুষ্ঠু চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না বলে দাবি তার।  

করোনা কালে সব থেমে গেলেও মাদক ব্যবসায়ীরা থেমে ছিলোনা, এখনো নেই। তাই, নিত্য-নতুন কৌশলে মাদক চোরাকারবার ঠেকাতে কর্তৃপক্ষকে আরো কৌশলি হবার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।

news24bd.tv আহমেদ