আমেরিকার সাথে ইরানের রাজনৈতিক সম্পর্ক খুব খারাপ। ইরানে, আমেরিকান এম্বাসি পর্যন্ত নেই। অথচ অবাক করা বিষয় হলো, ইরানের বহু টেলেন্টেড লোক আমেরিকায় কাজ করে। বহু সেক্টরে ইরানের তরুণরা গবেষণা করছে। আমেরিকার ইউনিভার্সিটিগুলোতে ইরানের মেয়েদের সংখ্যাও অনেক।
এই বিষয়টা প্রমাণ করে, আমেরিকা তার রাজনৈতিক শত্রুর দেশ থেকেও মেধাবীদের লুফে নিতে দ্বিধা করে না। তাদের জন্য দরজা খুলে রাখে। এই বিষয়টা এখন বহু দেশ করে। ইউরোপের দেশগুলো করে। আমি যখন সুইডেনে ছিলাম, তখন আইন হয়েছিলো যে পিএইচডি করলেই সেদেশ গ্রিন কার্ড দিবে। সে আনুযায়ী ওরা দিচ্ছেও। চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর এখন বিদেশের স্টুডেন্টদের গবেষণার জন্য টেনে নিচ্ছে। শিক্ষকতার জন্য সুযোগ দিচ্ছে। বিদেশের প্রফেসরদের উচ্চ বেতন ভাতা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
অন্যান্য দেশগুলো বুঝে গেছে, আমেরিকার উন্নতির পেছনে একটা বড় কারণ হলো সারাদুনিয়ার মেধাবীদের সুযোগ দেয়া। একই পথে বহু দেশ এগুচ্ছে। দেশ, ধর্ম, জাত যাই হোক না কেন—মেধাবীদের জন্য আলাদা একটা স্পেইস দিচ্ছে। এতে করে তুমুল প্রতিযোগিতা গড়ে উঠে। প্রচুর আইডিয়া, ইনোভেশন বেরিয়ে আসে। এজন্যই গুগলের সিইও ভারতীয়। কিংবা নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ বাঙালী।
দক্ষিণ এশিয়ার প্রত্যন্ত কোন অঞ্চলের একটা মেয়ে আমেরিকার বড়ো কোন ইউনিভার্সিটির জাঁদরেল প্রফেসর।
আজ থেকে ত্রিশ-চল্লিশ বছর আগেও চীনে পড়াশুনা করার জন্য তেমন স্টুডেন্ট যেতো না। আজ ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল, ভিয়েতনাম, মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা থেকে বহু স্টুডেন্ট সেখানে যায়। তাদের ক্যাম্পাসগুলো ধীরে ধীরে বৈচিত্র্যতায় পূর্ণ হচ্ছে। এই ডাইভার্সিটি একটা শক্তি। এই ডাইভার্সিটি একটা সম্পদ। বিশ্বতারুণ্যকে সম্পদে রূপ দিচ্ছে উন্নত দেশগুলো।
আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এমন ডাইভার্সিটি আনার চেষ্টা করতে হবে। সে লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। আর তার জন্য আগে চাই শক্তিশালী জ্ঞান-গবেষণার সংস্কৃতির ভিত। বিশ্বতারুণ্যকে সম্পদে পরিণত করার ইচ্ছে ও পরিকল্পনা কি আমাদের আছে? আমরা কি সেটা নিয়ে ভাবি?
রউফুল আলম, যুক্তরাষ্ট্র।
news24bd.tv/আলী