বাগদাদ মধ্যযুগীয় বিশ্বের বৃহত্তম নগরকেন্দ্র!

৭৬২ খিস্টাব্দের ৩০ জুলাই আব্বাসিয় খলিফা আল মনসুর টাইগ্রিস নদির পশ্চিম পারে বাগদাদ নগরী প্রতিষ্ঠা করেন। বাগদাদ  দ্রুত বৃদ্ধি পেয়ে মধ্যযুগীয় বিশ্বের বৃহত্তম নগরকেন্দ্র হয়ে ওঠে এবং একটি অর্থনৈতিক ও বৌদ্ধিক কেন্দ্রে পরিণত হয়।

এই শহরটিতে ছিল অসংখ্য বইয়ের দোকান এবং পাবলিক লাইব্রেরি যেখান থেকে তৈরি হয়েছিল এক বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ ফলে বাগদাদ জ্ঞানের সন্ধানকারী সকল শিক্ষার্থীদের একটি গন্তব্য হয়ে উঠেছিল।

নতুন আব্বাসীয় শহরটির আনুষ্ঠানিক নামকরণ করা হয়েছিল মদিনাত আল-সালাম। এই নামটিই পরবর্তীকালে শহরের সমস্ত সরকারী রেফারেন্সে প্রকাশিত হয়েছিল, মুদ্রার শিলালিপি থেকে শুরু করে রাজকীয় কারখানায় বোনা কাপড়ের লেখাগুলিতে  পর্যন্ত এই নাম ব্যবহার করা হয়েছিল। তবে কোন এক অজানা কারণে বাগদাদ নামটি জনপ্রিয় হয়ে যায়।

একাদশ শতাব্দীর খতিব আল-বাগদাদী বাগদাদকে ঘিরেই তাঁর বিস্ময়ের অনুভূতিটিকে দারুণভাবে বর্ণনা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন: “সমগ্র বিশ্বে এমন কোন শহর নেই যার সাথে বাগদাদের আকার ও জাঁকজমকের তুলনা করা যেতে পারে। শুধু তাই নয়, আপনি এই শহরে বিদ্বানদের সংখ্যা বা মহান ব্যক্তিত্ব, নগরের অসংখ্য রাস্তা, বাজার, লেন, মসজিদ, স্নানাগার এবং দোকানগুলি বিবেচনা করুন - এসবই অন্য শহর থেকে বাগদাদ শহরকে আলাদা করে দেয়  ""

সেই সময়, বাগদাদ হাউজ অফ উইজডম সহ বিশ্বের বৃহত্তম একাডেমিক প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিল এবং 'সেন্টার অফ লার্নিং' হিসাবে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছিল।  

হিউ কেনেডির মতে, বাগদাদে নতুন রাজধানী স্থাপনের জন্য বেশ কয়েকটি কারণ ছিল। এগুলির মধ্যে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছিল সুরক্ষা। সুরক্ষাকে কেবল দুর্গ-প্রাসাদ নির্মাণের মাধ্যমে নিশ্চিত করা যায়।  

দ্বিতীয়ত, এই অঞ্চলটিতে ইসলামিক ও প্রাক-ইসলামী বহু রাজবংশের পরিচয় ও প্রতিপত্তি প্রদর্শনের জন্য নতুন রাজধানী নির্মানের খায়েশ ছিল। আব্বাসীয়দেরও এমন একটি জায়গার দরকার ছিল যেখানে তারা তাদের সরকার এবং আমলাতন্ত্রের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করতে পারে।

নতুন রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রটি ছিল রাউন্ড সিটি যেখানে প্রাসাদ, প্রধান মসজিদ এবং কিছু প্রশাসনিক ভবন এবং সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার ছিল। রাজ প্রাসাদ এবং মসজিদটি একসাথে কেন্দ্রীয় উদ্যানের মাঝখানে ছিল এবং প্রাসাদটিতে ছিল একটি সবুজ গম্বুজ যা এই ছবির শেষ প্রান্তে দেখা যাচ্ছে।

বাইতুল হিকমাহ ছিল আব্বাসীয় আমলে ইরাকের বাগদাদে প্রতিষ্ঠিত একটি গ্রন্থাগার, অনুবাদকেন্দ্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটিকে ইসলামি স্বর্ণযুগের একটি প্রধান বুদ্ধিবৃত্তিক কেন্দ্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মোঙ্গলদের বাগদাদ অবরোধের সময় শহরের পতন হলে এই গ্রন্থাগারটিও ধ্বংস হয়ে যায়।

আরও পড়ুন:

জলাবদ্ধতার সাথে মশা, ব্যাঙ বিষাক্ত প্রাণীর সাথে বসবাস

দক্ষিণের পথে পথে ঢাকামুখি মানুষের স্রোত বগুড়ায় করোনা ও উপসর্গে ৯ জনের মৃত্যু বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর ১২ দিন পর চালু

news24bd.tv / কামরুল