সায়েম সোবহান আনভীরকে বর্ণাঢ্য সম্বর্ধনা দিল কলকাতার ‘ইস্টবেঙ্গল ক্লাব’

দেশের শীর্ষ স্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাংলাদেশের বিশিষ্ট ক্রীড়াপ্রেমী শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের কর্ণধার সায়েম সোবহান আনভীরকে আজ বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বর্ণাঢ্য সম্বর্ধনা দিল ভারতের জনপ্রিয় ক্লাব ‘ইস্টবেঙ্গল ক্লাব’। একই সঙ্গে তাঁকে আজীবন সদস্য পদও প্রদান করা হয়। এই আনন্দঘন অনুষ্ঠানে সায়েম সোবহান আনভীরের সহধর্মিনী, বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক সাবরিনা সোবহান উপস্থিত ছিলেন।

‘আলো আমার, আলো ওগো, আলো ভুবন-ভরা’ জনপ্রিয় এই গানটির সুরের মূর্ছনা ও নৃত্য পরিবেশনার সঙ্গে বরণ করে নেওয়া হয় বাংলাদেশের স্বনামধন্য ও শীর্ষ শিল্প প্রতিষ্ঠানের এই কর্ণধারকে।  এরপর মঞ্চে একে একে আসন গ্রহণ করেন ইস্টবেঙ্গল ফুটবল ক্লাবের প্রাক্তন ফুটবলারগণ। এসময় ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের পক্ষ থেকে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের হাতে ক্লাবের লাল-হলুদ জার্সি, উত্তরীয়, ক্লাবের গোল্ড কয়েন, ফলের বাস্কেট, কলকাতার নানা স্বাদের মিষ্টি, বাংলার পাঞ্জাবি, শাড়ি ইত্যাদি উপহার তুলে দেয়া হয়।  

সম্মাননা গ্রহণ করে সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, আপনারদের এ অমূল্য ভালোবাসা ও আন্তরিকতায় আমি রীতিমতো মুগ্ধ হয়েছি। বাংলাদেশে আপনাদের যাবার আমন্ত্রণ রইলো।  

তিনি বলেন, আমি অনেকবার শুনেছি, ‘এপার বাংলা, ওপার বাংলা’। আসলে বাংলা তো একটাই, ভাষা এক, মানুষগুলোও তো এক। আমি চাই, শেখ রাসের ক্রীড়াচক্রের সঙ্গে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের খেলাধুলা হোক। আশা করবো এটা গ্রহণ করবেন ক্লাবের কর্মকর্তারা। পুরো স্পন্সর করবে বসুন্ধরা গ্রুপ।

 

শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জাতির পিতার সন্তান হলেন শেখ রাসেল। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা। উনি আমাকে এই ক্লাবের দায়িত্ব দিয়েছেন ক্লাবটিকে ভালোভাবে চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। বসুন্ধরা কিংস এর সঙ্গে ইস্ট বেঙ্গলের খেলাধুলায় সার্বিক সহযোগিতায় প্রয়োজনীয় সব করা হবে।   এরপর পুরো অনুষ্ঠানে হাততালির বন্যা বয়ে যায়। সবাই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।

ইস্টবেঙ্গল ক্লাব কর্মকর্তা নীতু সরকার বলেন, বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সাহেবের শব্দচয়ন আমাকে মুগ্ধ করেছে। ভারতের ফুটবল ক্যালেন্ডারের সাথে সিডিউল ম্যাচ করলে নিশ্চয় বাংলাদেশে গিয়ে খেলব আমরা।   তিনি আরও বলেন, আগামীতে শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র এবং ইস্টবেঙ্গলের মধ্যে কী সমন্বয় ঘটে তা পরবর্তীতে জানতে পারবেন। এখনই সবকিছু বলবো না।  

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সচিব কল্যাণ মজুমদার, ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট শান্তিরঞ্জন দাসগুপ্ত, অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট সুব্রত দত্ত, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইমরুল হাসানসহ ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপের শীর্ষ ব্যক্তিরা।

     ইস্টবেঙ্গল ক্লাব সম্পর্কে  ভারতের ইতিহাসে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্লাব। ১৯২০ সালের ১ আগস্ট অধুনা পূর্ববঙ্গে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই ক্লাবটি। সুরেশ চন্দ্র চৌধুরী, শৈলেস বসু ও নসা সেন-এই তিন পূর্বপুরুষের হাত ধরে শুরু হয়েছিল খেলার মাঠে পূর্ববঙ্গের অস্তিত্ব ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াই। দলটি প্রথম মাঠে নামে ১১ অগাস্ট ‘হারকিউলিস কাপে’।  

ঠিক এক বছর পর ইস্টবেঙ্গল ক্লাব মোহন বাগানের সাথে ভাগাভাগি করে চলে ময়দানে আসে। যা বর্তমান ভারতীয় সেনাবাহিনী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এরপর ভারতীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের অনুমোদন পাওয়া এবং কলকাতা ফুটবল লিগের প্রস্তুতি। ১৯২৫ সালে ইস্টবেঙ্গল সুযোগ পায় প্রথম ডিভিশনে খেলার। সুযোগ পেয়েই হারায় মোহন বাগান দলকে।

 

১৯৩১ সালে আবার ক্লাব উঠে আসে প্রথম ডিভিশনে। এরপর ভারতের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশে প্রভাব বিস্তার করে ইস্টবেঙ্গল। চীনের অলিম্পিক দলকে হারানোর পর ইউরোপ সফর শুরু করে এই ক্লাব। পরপর জেতা, ড্র, খালি পায়ে ইস্ট বেঙ্গলের লড়াই দেখে গোটা ইউরোপ বিস্মিত হয়।  

এরপর ৭০ এর দশকে শুরু হয় ইস্ট বেঙ্গলের সোনালী যুগ। তখন বাংলাদেশ থেকে আসা শরণার্থীদের অন্যতম বিনোদন ছিল এই ইস্টবেঙ্গল ক্লাব। শতাব্দীর প্রাচীন সেই ক্লাবের পথচলা আজও বিরামহীন। সেই ইস্টবেঙ্গল ক্লাব এই প্রথম বাংলাদেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ক্রীড়াপ্রেমী সায়েম সোবহান আনভীরকে সম্মাননা জানালো।

news24bd.tv/এমি-জান্নাত