স্টোকস হারিয়েছিলেন, স্টোকস জিতিয়েছেন

সংগৃহীত ছবি

স্টোকস হারিয়েছিলেন, স্টোকস জিতিয়েছেন

অনলাইন ডেস্ক

কী দারুণভাবেই না আক্ষেপ ঘোচালেন বেন স্টোকস। ২০১৬ বিশ্বকাপের ফাইনালে কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের কাছে শেষ ওভারে চার ছক্কা হজম করেছিলেন এ ইংলিশ অলরাউন্ডার। তাতে ইংল্যান্ডের হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচ জিতে নিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ছয় বছর পর সেই স্টোকসের অবদানেই শিরোপা জয় করল ইংল্যান্ড।

দলের বিপদের মুহূর্তে তার ব্যাটে চড়েই পাকিস্তানকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় শিরোপা পেল তারা।

কী হয়েছিল আসলে ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে? তা সবারই জানা। ভালোমতো জানা অবশ্য স্টোকসের। কলকাতার ইডেন গার্ডেনের সেই ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হয়েছিল ইংল্যান্ড।

দুই দলের সামনেই ছিল দ্বিতীয় শিরোপা জয়ের হাতছানি।

আগে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ১৫৫ রান করেছিল ইংল্যান্ড। ব্যাট হাতে স্টোকসের অবদান ছিল সামান্যই, ৮ বলে ১৩ রান। লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজ এক পর্যায়ে খেই হারিয়ে ফেলে। শেষ ওভারে ক্যারিবীয়দের দরকার ছিল ১৯ রান।

ক্যারিবীয়দের টপ অর্ডারের ছয় ব্যাটারের বিদায়। চাপে তখন দলটি। সপ্তম উইকেট জুটিতে কার্লোস ব্রাথওয়েটের সঙ্গে ছিলেন মারলন স্যামুয়েল। শেষ ওভারে স্ট্রাইকে ব্রাথওয়েট। বল করতে আসেন স্টোকস। আগের দুই ওভারে মাত্র ১৭ রান দিয়েছিলেন স্টোকস। সেই ভরসায় তার হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক মরগান।

কিন্তু ব্যাট হাতে খুনে মেজাজে থাকবেন কার্লোস ব্রাথওয়েট। তা কেন জানত। জানতেন না স্টোকসও। তার ইয়র্কার লেন্থের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান ব্রাথওয়েট। দ্বিতীয় বলেও ছক্কা। বিস্ময়ে বিমূড় ইংলিশ শিবির। তৃতীয় বলেও ছক্কা। শেষ তিন বলে দরকার যখন এক রান, চতুর্থ বলেও ছক্কা হাঁকিয়ে ইংলিশদের কাঁদিয়ে বিশ্বকাপ জেতে ক্রিস গেইলরা।

টানা চার ছক্কা হজম। শিরোপা বঞ্চিত ইংল্যান্ড। বেন স্টোকসের চেহারায় ছিল রাজ্যের হতাশা। সেই হতাশা বেন স্টোকস অবশ্য কাটান ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে। তার ব্যাটেই নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথম শিরোপা জেতে ইংল্যান্ড। এর তিন বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও স্টোকস দেখালেন তার কারিকুরি। তার ব্যাটে এবার পাকিস্তানকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ট্রফি জিতল বাটলাররা।

আজ রোববার (১৩ নভেম্বর) পাকিস্তানের বিপক্ষে ফাইনালে তার ইনিংসটি ঠিক টি-টোয়েন্টিসুলভ না হলেও বুদ্ধিদীপ্ত তো বটেই। মেলবোর্নে উইকেটের মিছিলে ৪৯ বলে ৫২ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। তার ইনিংসে ছিল ৫টি চার ও ১টি ছয়। শেষদিকে ঝড় তুলে স্টোকসের কাজটা সহজ করে দিয়ে যান মঈন আলি। ১৩ বলে ১৯ রান করে আউট হন মঈন।

আরও পড়ুন : বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে যা বললেন ইংলিশ ক্রিকেটাররা

বেন স্টোকস যখন ব্যাটিংয়ে এসেছিলেন, ২ উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ড তখন করেছিল কেবল ৩২ রান। সেখান থেকে জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন তিনি। ইনিংসটা শম্বুক গতির হলেও স্টোকসের তাই কৃতিত্ব তো পাওনাই! চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সিরিজ ও ম্যাচসেরা স্যাম কুরানও কৃতিত্ব দিলেন স্টোকসকে। বললেন, ‘মনে হয় এটা আমার পাওয়া উচিত হয়নি। এটা স্টোকসের কৃতিত্ব।

উল্লেখ্য, অল্প পুঁজি নিয়েও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের মাঝামাঝি সময়ে ফাইট করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু শেষদিকে পুরো ১ ওভার হাতে রেখে হেসেখেলেই ৫ উইকেটে জয় পায় বেন স্টোকসরা। এনিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতল ইংলিশরা, আগেরবার জিতেছিল ২০১০ সালে।

ইংলিশদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পাকিস্তানের ইনিংসে শাদাব খান ছাড়া কেউই টি-টোয়েন্টিসুলভ খেলতে পারেননি। ফলে ৮ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৩৭ রান করে বাবর আজম বাহিনী। জবাবে ইংল্যান্ডও একটা পর্যায়ে ভীষণ চাপে পড়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বারর আজমের দলের বিপক্ষে পূর্বপুরুষদের হারের প্রতিশোধ নিয়েছে জস বাটলারের ইংল্যান্ড।

news24bd.tv/আলী