বিশ্বকাপে দলগুলোর ডাকনাম, নামকরণের কারণ

সংগৃহীত ছবি

বিশ্বকাপে দলগুলোর ডাকনাম, নামকরণের কারণ

অনলাইন ডেস্ক

প্রথমবারের মতো ফুটবল বিশ্বকাপের মহাযজ্ঞ বসছে মরুভূমির দেশ কাতারে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারের মাটিতে দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ'র মহারণ শুরু হতে বাকি আর মাত্র ৫ দিন। এরপরই পর্দা উঠছে কাতার বিশ্বকাপের। প্রথম দিনে স্বাগতিক কাতারের মুখোমুখি হচ্ছে ইকুয়েডর।

তবে এর আগে থেকেই বিশ্বকাপের রোমাঞ্চ ছড়িয়ে পড়েছে ফুটবল ভক্ত-সমর্থকদের মধ্যে। ফুটবল বিশ্বকাপের প্রতিটি দলেরই রয়েছে ডাকনাম। যেমন ব্রাজিলকে ডাকা হয় সেলেসাও, আর্জেন্টিনাকে ডাকা হয় আলবিসেলেস্তে। কিন্তু ৩২ দলের ডাক নাম কি সবাই জানেন? আসুন জেনে নেয়া যাক কাতার বিশ্বকাপে অংশ নেয়া ৩২ দলের ডাক নাম এবং তাদের নামকরণের কারণ।

ব্রাজিল- সেলেসাও/ক্যানারি
পর্তুগিজ ভাষায় সেলেসাও খুবই সুপরিচিত একটি শব্দ। এর অর্থ ‘নির্বাচিত খেলোয়াড়রা’। প্রত্যেক ফুটবল দলকেই ব্রাজিলিয়ানরা সেলেসাও বলে থাকেন। তবে নিজেদের ক্ষেত্রে তারা বলেন ‘দ্যা সেলেসাও’। এছাড়া ক্যানারি, এক ধরনের ছোট হলদে পাখি যারা গুনগুনাতে ভালোবাসে। ব্রাজিল আর হলুদ তো একই বৃন্তে দুটি ফুল।

আর্জেন্টিনা- লা আলবিসেলেস্তে
আর্জেন্টিনার জার্সি ও পতাকায় রয়েছে সাদা ও আকাশি রঙ। সেটি থেকেই তাদের লা আলবিসেলেস্তে বলা হয়।

অস্ট্রেলিয়া- সকারুজ
‘সকারুজ’ শব্দটা পরিচিতি পায় সিডনি-ভিত্তিক সাংবাদিক টনি হর্সটিডের কল্যাণে। অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় প্রাণী ক্যাঙ্গারুকে গুরুত্ব দিয়ে ইংরেজি ‘সকার’-এর সঙ্গে ক্যাঙ্গারুর ‘রু’ মিলে গঠিত হয়েছে ‘সকারু’।

আরও পড়ুন : বাদ যাবে আর্জেন্টিনা, চ্যাম্পিয়ন হবে ব্রাজিল

ইরান- টিম মেল্লি
টিম মেল্লি একটি ফারসি শব্দ। যার অর্থ ‘জাতীয় দল’। ইরানের আরেকটি ডাকনাম হলো ‘শিরান-ই-ইরান’ অর্থ ‘ইরানের সিংহ’। অন্য আরেকটি নাম হলো ‘শিরদেলান’ মানে ‘সিংহহৃদয়’ এবং ‘প্রিন্সেস অব পার্সিয়া’ বা ‘পার্সিয়ান রাজপুত্র’ নামেও তারা পরিচিত।  

জাপান- সামুরাই ব্লু
সামুরাই যোদ্ধাদের জন্য বিখ্যাত জাপান। তাদের জাতীয় ফুটবল দলকেও তাই ‘সামুরাই ব্লু’ নামে ডাকা হয়।

কাতার- দ্য মেরুন
বিশ্বকাপের আয়োজক কাতার ফুটবল দলের  নিকনেইম ‘দ্য মেরুন’। মূলত তাদের হোম জার্সির মেরুন রংয়ের প্রতি নির্দেশ করে এটি।  

আরও পড়ুন :  ব্রাজিলকে হারিয়ে শিরোপা জিতবে আর্জেন্টিনা, গোল্ডেন বুট মেসির

সৌদি আরব- আল আখদার
সৌদি আরবের কয়েকটি ডাকনাম রয়েছে। সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো ‘আল আখদার’। অর্থ ‘সবুজ’। তারা ‘আস-সাকার আল-আখদার’ মানে হলো ‘সবুজ বাজপাখি’। আরেকটি নিকনেইম ‘আল-সাকার আল-আরাবিয়া’ মানে ‘আরবের বাজপাখি’।

দক্ষিণ কোরিয়া- তেগুকে ওয়ারিয়র্স
সমর্থকরা প্রায়ই দক্ষিণ কোরিয়াকে বলে ‘দ্য রেডস’ নামে। তাদের প্রাইমারি জার্সির রং লাল। দলটির অন্য নাম ‘তেগুকে ওয়ারিয়র্স’ এবং ‘লায়নস অব এশিয়া’। তেগুকে একটি প্রতীক যা দক্ষিণ কোরিয়ার পতাকায় রয়েছে।

ক্যামেরুন- লা লায়নস ইনডমটেবলস
ক্যামেরুনকে বলা হয় ‘লেস লায়নস ইনডেমটেবলস’ বাংলায় যার অর্থ দাঁড়ায় ‘আফ্রিকান অদম্য সিংহ’।

আরও পড়ুন : বিশ্বকাপের জন্য ‘সাজগোজ’ শুরু নেইমারের 

ঘানা- ব্ল্যাক স্টারস
ঘানাকে ‘ব্ল্যাক স্টারস’ বলার কারণ তাদের পতাকার মাঝখানে রয়েছে কালো তারকা চিহ্ন।

মরক্কো- দ্য অ্যাটলাস লায়নস
বিশ্বকাপে ছয়বার অংশ নেয়া মরক্কোর ডাকনাম ‘দ্য অ্যাটলাস লায়নস’। তাদের জাতীয় পশু বারবারি সিংহ। যার অন্য নাম অ্যাটলাস সিংহ। বিপন্ন প্রজাতির এই সিংহ কেবল মরক্কোতেই দেখতে পাওয়া যায় এখন।

সেনেগাল- লায়নস অব তেরাঙ্গা
‘তেরাঙ্গা’ একটি সেনেগালিজ শব্দ। এর অর্থ ‘সুন্দর আতিথেয়তা’। এভাবেই সেনেগাল পরিচিত তেরাঙ্গা লায়নস নামে।

তিউনিসিয়া- ইগলস অব কার্থেজ 
তিউনিসিয়ার একটি প্রাচীন নগরী হলো কার্থেজ, যা প্রাচীন কার্থাজিনিয়ান সভ্যতার রাজধানী ছিল। দেশটির ফুটবল ফেডারেশনে রয়েছে ইগলের ছবি। এজন্যই তাদেরকে বলা হয় ইগল অব কার্থেজ।  

কানাডা- দ্য রেডস
হোম জার্সির রং লাল হওয়ায় কানাডাকে ডাকা হয় ‘দ্য রেডস’ নামে। জাতীয় পতাকার সঙ্গে মিলিয়ে তাদের অন্য আরেকটি নাম ‘ম্যাপলস লিফ’ বা ‘ম্যাপল পাতার দেশ’।  

কোস্টারিকা- লস তিকোস
কোস্টারিকার স্প্যানিশ ভাষী লোকদের একটি বাচনভঙ্গি ‘তিকো’। এভাবেই ‘দ্য তিকো’ নামে পরিচিতি পেয়েছে দলটি। তাদের আরও দুটি নাম রয়েছে- দ্য সিলেকশন (লা সিলে) এবং দ্য ট্রিকালার (লা ট্রিকালার)।

মেক্সিকো- এল ট্রি
মেক্সিকান ভাষায় এল ট্রি মানে হলো তিন রং। তাদের জাতীয় পতাকার তিনটি রং নির্দেশ করে এটি।  

ইকুয়েডর- লা ট্রি
জাতীয়  পতাকার তিনটি রং নিদের্শ করে ইকুয়েডরকে বলা হয় লা ট্রি।

উরুগুয়ে- লা সেলেস্তে
লাতিন ভাষায় লা সেলেস্তে অর্থ আকাশী-নীল। তাদের জার্সির রংকে নির্দেশ করে এটি।  

বেলজিয়াম- ডাই রোটেন টুয়েফল
জার্মান শব্দ ডাই রোটেন টুয়েফল অর্থ ‘রেড ডেভিলস’ বা ‘লাল শয়তান’। ১৯০৬ সালের জার্সির রং থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে সাবেক ম্যানেজার পিয়ের ওয়ালক্রিয়ার্স নামটি যুক্ত করেন বেলজিয়ামের সঙ্গে।

ক্রোয়েশিয়া- কোকাস্তি
জাতীয় পতাকায় বাহারি চেক ডিজাইনের জন্য ক্রোয়েশিয়ার পরিচিত ‘কোকাস্তি’ বা ‘দ্য চেকার্ড ওয়ানস’ নামে।

ডেনমার্ক- দ্য রড-ভি
ডেনিশ শব্দ দ্য রড-ভি মানে হলো লাল ও সাদা। ডেনমার্কের প্রধান জার্সির রংকে নির্দেশ করে এটি।

ইংল্যান্ড- থ্রি লায়নস
ইংল্যান্ডের জার্সির লোগোতে রয়েছে তিনটি সিংহ। এভাবেই নামটি পরিচিতি লাভ করেছে।

ফ্রান্স- লা ব্লুজ
জাতীয় ফুটবল দলের জার্সির রং নীল। তাই ফ্রান্সের নাম ‘লা ব্লুজ’।

জার্মানি- নেশনালেফ
এগারো জন ফুটবলারকে বোঝাতে জার্মানিকে বলা হয় ‘নেশনালেফ’। এছাড়াও ‘ডিএফবি ইলাভেন’ নামে পরিচিত তারা। বর্তমানে সবচেয়ে প্রলচিত নামটি হচ্ছে ‘ডাই মানশাট’।

নেদারল্যান্ডস- অরেঞ্জ
জার্সির রং কমলা হওয়ায় নেদারল্যান্ডসকে বলা হয় ‘অরেঞ্জ’ নামে। কোনো ম্যাচে ভালো খেললে তাই বলা হয় মাঠে ‘কমলা ঝড়’ তুলেছে নেদারল্যান্ডস।

পোল্যান্ড-  বিয়াতো-চাবোনি
ইংরেজিতে উচ্চারণ করা কষ্টের। তবে পোলিশরা সহজেই বলে বিয়াতো-চাবোনি। যার অর্থ দাঁড়ায় সাদা-লাল।

পতুর্গাল- ওস নেভিগাদোরেস
বিখ্যাত সব সমুদ্র অভিযাত্রীদের দেশ পতুর্গাল। ওস নেভিগাদোরেস মানে হলো ‘দ্য নেভিগেটরস’ বা নাবিকরা। এভাবেই ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোরা পরিচিতি পেয়েছে এই নামে।  

সার্বিয়া- অরলভি
সার্ব ভাষায় অরলভি অর্থ ইগল। সার্বিয়ার জাতীয় প্রতিক দুই মাথা ইগলকে নির্দেশ করে এটি।

আরও পড়ুন : কাতার বিশ্বকাপে যা কিছু প্রথম

স্পেন- লা রোহা
লা রোহা মানে ‘দ্য রেড ওয়ান’। আরেকটি নাম লা ফুরিয়া রোহা বা ‘দ্য রেড ফিউরি’।

সুইজারল্যান্ড- রোজোক্রোসিয়াতি
রোজোক্রোসিয়াতি মানে হলো ‘রেড ক্রস’। সুইজারল্যান্ড ফুটবল জাতীয় দল ‘নাটি’ নামেও পরিচিত।

ওয়েলস- দ্য ড্রাগনস
ওয়েলসের পতাকায় আগুনমুখো ড্রাগনের ছবি রয়েছে। এভাবেই গ্যালেথ বেলের দল পরিচিতি পেয়েছে দ্য ড্রাগনস নামে।  

যুক্তরাষ্ট্র- স্টার স্ট্রাইপস
জাতীয় পতাকার তারকা এবং যুক্তরাষ্ট্র ফুটবল ফেডারেশনের স্ট্রাইপ লগো মিলে এই নাম। তাদের অন্য নাম ‘দ্য ইয়াংকস’।

news24bd.tv/আলী