লোকালয়ে দুই বাঘের গর্জন, আতঙ্কে গ্রামবাসী

লোকালয়ে দুই বাঘের গর্জন, আতঙ্কে গ্রামবাসী

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

বাগেরহাটের সুন্দরবন সংলগ্ন আবারও লোকালয়ে দুটি রয়েলে বেঙ্গল টাইগারের গর্জনে নির্ঘুম রাত পার করছে গ্রামবাসী। মাত্র ১৭ দিন পর রোববার (২৯ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে সুন্দবন সংলগ্ন বাগেরহাটের মোড়েগলগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম আমুরবুনিয়া গ্রামের লোকজন দুটি বাঘের গর্জন শুনতে পান। এরপর আতঙ্কিত এলাকাবাসী সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের জিউধারার স্টেশনে খবর দেয়।

সুন্দরবনের জিউধারার স্টেশনের কর্মকর্তাসহ বনরক্ষীরা দ্রুত পশ্চিম আমুরবুনিয়া গ্রামের পৌঁছে জারি করে সর্বোচ্চ সতর্কতা।

জনসাধারণকে সচেতন করতে বন বিভাগের পক্ষ থেকে করা হয় মাইকিং। বন বিভাগসহ সুন্দরবন সুরক্ষায় নিয়োজিত কমিউনিটি প্রেট্রোল গ্রুপের (সিপিজি) সদস্যরা এলাকায় টহল দিতে শুরু করে। এরমধ্যে রাত ২টার দিকে দুটি বাঘ একসাথে গর্জন শুরু করলে আবারও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

এর আগে গত ১২ জানুয়ারি রাতে সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ভোলা নদী পার হয়ে দুটি বাঘ বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সোনাতলা গ্রামে ঢুকে পড়ে।

বাঘ লোকালয়ে ঢুকে পড়ায় তখনো গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।

তবে, সুন্দরবন বিভাগের সতর্ক পাহারার মধ্যে দু’দিন পর বাঘ দুটি লোকালয়ে জানমালের কোনো ক্ষতি না করে তাদের আবাসস্থল সুন্দরবনে ফিরে যায়।

সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের জিউধারার স্টেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, রোববার রাত ৮টার দিকে সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাটের মোড়েগলগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম আমুরবুনিয়া গ্রামের লোকজন দুটি বাঘের গর্জন শুনতে পান। এ খবর জানতে পেরে দ্রুত বনরক্ষীরা পশ্চিম আমুরবুনিয়া গ্রামের গিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করে রাতে লোকজনকে ঘর থেকে বের না হতে এলাকায় মাইকিং করা হয়। বনরক্ষীসহ সুন্দরবন সুরক্ষায় নিয়োজিত কমিউনিটি প্রেট্রোল গ্রুপের (সিপিজি) সদস্যরা এলাকায় রাতভর টহল দেয়।

এর মধ্যে রাত ২টার দিকে দুটি বাঘ এক সাথে গর্জন শুরু করলে এলাকায় আবারও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সুন্দরবনের ভরাট হয়ে যাওয়া ভোলা নদী তীরবর্তী লোকালয় হচ্ছে পশ্চিম আমুরবুনিয়া গ্রাম। আমরা অনুমান করছি, বাঘ দুটি লোকালয়ে ঢোকেনি।

সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের জিউধারার স্টেশন এলাকার ২৭ নম্বার কম্পার্টমেন্টের মিস্ত্রীর ছিলা ও সুধীর ছিলার লোকালয়ের খবি কাছে রয়েছে বাঘ দুটি। শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে ২৭ নম্বার কম্পার্টমেন্টের মিস্ত্রীর ছিলা এলাকার খালে মাছ ধরার সময় বাঘের আক্রমণে গুরুতর আহত অনুকূল গাইন (৩৫) এক জেলে। ওই জেলে অন্য জেলেরা বাঘের মুখ থেকে ফিরিয়ে আনতে পেরেছে। এ ঘটনার পর একই এলাকার সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়ে এক সাথে দুটি বাঘের গর্জনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভোলা নদী ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে সুন্দরবনের বাঘসহ বণ্যপ্রাণীরা সহজেই লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। এই বাঘ দুটি যাতে লোকালয়ে ঢুকে পড়তে না পারে সেজন্য বনরক্ষীসহ সুন্দরবন সুরক্ষায় নিয়োজিত কমিউনিটি প্রেট্রোল গ্রুপের (সিপিজি) সদস্যরা এলাকায় টহল দিচ্ছে।

এর আগে গত ১২ জানুয়ারি রাতে সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ভোলা নদী পার হয়ে দুটি বাঘ বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার সোনাতলা গ্রামে ঢুকে পড়ে। বিভাগের সতর্ক পাহারার মধ্যে দু’দিন পর বাঘ দুটি লোকালয়ে জানমালের কোনো ক্ষতি না করে সুন্দরবনে ফিরে যায় বলে জানান সুন্দরবন বিভাগের এই কর্মকর্তা।

বাগেরহোটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, রোববার রাতে সুন্দরবনের ২৭ নম্বার কম্পার্টমেন্টের লোকালয়ের লোকজন দুটি বাঘের গর্জন শুনতে পারার পর পশ্চিম আমুরবুনিয়া গ্রামে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। লোকজনকে ঘর থেকে বের না হতে এলাকায় মাইকিং করা হচ্ছে। লোকালয়ে বাঘের পায়ের ছাপ দেখতে না পাওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে বাঘ দুটি লোকালয়ে ঢুকে পড়েনি। তবে, খুব কাছাকাছি রয়েছে। লোকালয়ে যাতে ঢুকে পড়তে না পারে সেজন্য বনরক্ষী ও সিপিজি সদস্যরা সার্বক্ষণিক এলাকায় টহল দিচ্ছে। তবে, লোকালয়ে ঢুকে পড়লে লোকজন যাতে বাঘকে পিটিয়ে মেরে না ফেলে সেজন্য সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে।