এরশাদকে নিয়ে মন্তব্য, সংসদে হট্টগোল

সংগৃহীত ছবি

এরশাদকে নিয়ে মন্তব্য, সংসদে হট্টগোল

অনলাইন ডেস্ক

‘সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের নির্বাচনে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে’- রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় লালমনিরহাট ১ আসনের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেনের বক্তব্যর পরিপ্রেক্ষিতে সংসদে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। এ সময় সংসদে অচলাবস্থা তৈরি হয়। অধিবেশন পরিচালনা করছিলেন ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু। পরে তড়িঘড়ি করে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশন পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) সংসদে এসব পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

মোতাহার হোসেনের বক্তব্যর এক পর্যায়ে কাজী ফিরোজ রশীদ দাঁড়িয়ে মাইক ছাড়াই কথা বলতে শুরু করেন। এ সময় মোতাহার হোসেন থেমে যান। কিছুক্ষণ পর সভাপতির দায়িত্বে থাকা ডেপুটি স্পিকার তাকে বলতে বলেন এবং পরে চাইলে পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর দেবেন বলে জানান।

তবে তাতে তিনি নিবৃত্ত না হলে মাইক ছাড়াই কথা অব্যাহত রাখেন। এ সময় সংসদে চিৎকার চেচামেচি শোনা যায়।

মোতাহার হোসেনের বলেন, ‘‌আপনি সিনিয়র সংসদ সদস্য, আমার সময়ে আরেকজন বক্তৃতা দেবেন কীভাবে?’

এ সময় স্পিকার মোতাহার হোসেনের মাইকও বন্ধ করে দেন। বলেন মোতাহার হোসেনকে দাঁড় করিয়ে রেখে কাজী ফিরোজ রশীদকে এক মিনিটের জন্য ফ্লোর দেন। ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘‌অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলছি সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদের জামানত নাকি বাজেয়াপ্ত করেছেন। এরশাদ সাহেব ইলেকশনই করেননি। এরশাদ সাহেব যখন কারাগারে ছিলেন রংপুরের মাটিতে তিনি ৫টি আসনে জয়লাভ করেন। কারাগারে থেকে দুইবার ৫টি আসন করে জয়লাভ করেছেন। আর এখন বলে এরশাদের জামানত বাজেয়াপ্ত করেছে। ’

ফিরোশ রশীদের বক্তব্যর এক পর্যায়ে ডেপুটি স্পিকার বলেন, ‌‘আপনি পরে সময় নিয়ে যদি কোন বক্তব্য থাকে বলবেন। ’ এ সময় রাঙা মাইক ছাড়াই কথা বলতে শুরু করেন। এ সময় ডেপুটি স্পিকার মোতাহার হোসেনকে একটু অপেক্ষা করতে বলে বলে রাঙাকে ফ্লোর দেন।

রাঙা ফ্লোর নিয়ে মোতাহার হোসেনের ব্ক্তব্যে এরশাদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবার বিষয়ে বিরোধিতা করেন।  এক পর্যায়ে তার মাইক বন্ধ হয়ে যায়। পরে ডেপুটি স্পিকার তাকে বসতে বলেন। জাতীয় পার্টির এমপিদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনারা পয়েন্ট অব অর্ডারে কথা বলবেন। সময় দেয়া হবে। আপনি বসুন। তার (মোতাহার হোসেন) বক্তব্য শেষ হোক। তবে ডেপুটি স্পিকারের কথায় কর্ণপাত না করে জাতীয় পার্টি এমপিরা চিৎকার করতে থাকেন। এ পর্যায়ে ডেপুটি স্পিকার বলেন আপত্তিকর কিছু থাকলে তা এক্সপাঞ্জ করা হবে। আর পয়েন্ট অব অর্ডারে অন্য সুযোগে আপনি কথা বলবেন। আপনারা বসেন আমি পয়েন্ট অব অর্ডারে সুযোগ দেব।

মোতাহার হোসেনকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনি এজেন্ডার ওপরে কথা বলবেন। এমন কথা বলবেন না যাতে সংসদ পরিচালনায় বিঘ্ন ঘটে এবং তার বক্তব্য শেষ করার জন্য ফ্লোর দেন। এই সময়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী হাউসে প্রবেশ করে সভাপতির আসনে বসেন।

স্পিকার হাউসে ঢুকে সবাইকে বসতে বলেন। বিরোধীদলের কাজী ফিরোজ রশীদ ও মসিউর রহমানের রাঙার নাম উল্লেখ করে বসতে বলেন। তিনি বলেন, হাউসের একটি ডেকোরাম আছে। এখানে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনা হচ্ছে। এখানে একজন বক্তা তার বক্তব্য রাখছেন। সেই বক্তব্যে আপত্তিকর কিছু থাকলে সেটা আপনারা উত্থাপন করতে পারেন। কিন্তু এজন্য আপনাদের অপেক্ষা করতে হবে। উনি (মোতাহার) উনার বক্তব্য শেষ করবেন। আপনারা হাত তুলবেন। আমরা যখন মনে করবো- আপনাদেরকে সুযোগ দেয়ার বিষয় আছে আমরা সেই সুযোগ দেবো। আপনাদের কথাও শোনা হবে। যদি এমন কোনো বিষয় থাকে যেটা এক্সপাঞ্জ করার প্রয়োজনীয়তা আছে, সেটা বিবেচনায় নিয়ে ব্যবস্থা নেয়ারও সুযোগ আছে। কিন্তু মহামান্য রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনা চলমান থাকার সময়ে একজন বক্তা যখন বক্তব্য চলাকালীন হাত তুলে আপত্তি করেছেন সেটা ঠিক আছে। কিন্তু তারপরে সেই মুহূর্তে পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনা করা সমীচিন নয়। সেটা পরমুহূর্তে হতে পারে। আমার এজেন্ডার মাঝখানে নয়। কাজেই আমি আপনাদের কাছ থেকে সেই সহযোগিতা আশা করছি। আপনাদের বিষয়টিও শোনা হবে। ' এরপর স্পিকার মোতাহার হোসনকে তার বক্তব্য শেষ করার জন্য ফ্লোর দেন।  

মোতাহার হোসেনের বক্তব্যের শেষে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী জানান, যদি কোনো তথ্যগত ত্রুটি থেকে থাকে তাহলে সেটা বিবেচনা করে তা পরীক্ষা করে এক্সপাঞ্জ করার ব্যবস্থা নেয়া হবে।

news24bd.tv/ইস্রাফিল