দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র ও একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে ১০ হাজার মানুষ বাস করে। আর দ্বীপটিতে বর্তমানে প্রায় পাঁচ হাজার কুকুর বিচরণ করছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান এ তথ্য জানান।
মুজিবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, কয়েক হাজার কুকুর রাত-দিন এখানে সেখানে বিচরণ করছে।
এর ফলে দ্বীপের পরিবেশের ভারসাম্য মারাত্মকভাবে বিনষ্ট হচ্ছে। প্রায়ই দ্বীপের স্থানীয় বাসিন্দা ও আগত পর্যটকরা কুকুরের আক্রমণের শিকার হচ্ছেন।এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক হাফিজুর রহমান বলেন, কুকুর ও পরিবেশ জীববৈচিত্র্যের অংশ। সব প্রাণী নিয়েই পরিবেশ।
তিনি বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের কয়েক হাজার কুকুর রাতে সাগরের বিশাল বালুচরে বিচরণ করে। কুকুরের উৎপাতে সাগর থেকে মা কচ্ছপদের ডিম পাড়তে বালুচরে আসা কমে গেছে। মা কচ্ছপ সাগরে থেকে সৈকতে আসলেই কুকুরের দল হামলে পড়ে। এমনকি সৈকতের কোনো স্থানে ডিম পাড়লে সে ডিম খেয়ে ফেলে কুকুর।
জানা গেছে, দ্বীপে কুকুরের সংখ্যা কমাতে উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর সেন্টমার্টিন থেকে ২ হাজার কুকুরকে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের ঘোলারচরে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সে অনুযায়ী, গত বছরের মার্চে সেন্টমার্টিন থেকে ৩৬টি কুকুর আটক করে খাঁচায় রাখা হয়। কিন্তু পরে কয়েকটি পরিবেশবাদী সংগঠন এর বিরোধিতা করে। তাদের দাবির মুখে কুকুর স্থানান্তরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়।
এ বিষয়ে পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান রাকিবুল হক বলেন, ২০১৯ সালের প্রাণীকল্যাণ আইন অনুযায়ী, কোনো মালিকবিহীন প্রাণী হত্যা বা অপসারণ করা দণ্ডনীয় অপরাধ। এই আইনের কারণে রাষ্ট্রের কোনো নাগরিক তো বটেই প্রশাসনও কুকুর নিধন কিংবা অপসারণ করতে পারে না।
তবে বিষয়টি সমাধানে শিগগিরই আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক হাফিজুর রহমান। তিনি জানান, সেন্টমার্টিনের প্রতিবেশ-পরিবেশ সুরক্ষায় জাতিসংঘের উন্নয়ন তহবিলের (ইউএনডিপি) সহযোগিতায় একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন কমিটির আগামী সভায় সেন্টমার্টিনে কয়েক হাজার কুকুরের অবস্থান বিষয়ে ও আলোচনা হবে এবং সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
news24bd.tv/ইস্রাফিল