বরিশালে রসের হাঁড়িতে শিকল-তালা!

সংগৃহীত ছবি

বরিশালে রসের হাঁড়িতে শিকল-তালা!

অনলাইন ডেস্ক

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ফুলশ্রী গ্রামের বাসিন্দা দীপক মজুমদার। খেজুর রস চুরি ঠেকাতে এক অভিনব পন্থা অবলম্বন করেছেন তিনি। খেজুর রসের হাঁড়ি শিকল দিয়ে তালাবদ্ধ করেছেন দীপক মজুমদার নামে ওই গাছি। গ্রামের ১৭টি গাছ কাটছেন দীপক।

বাবার কাছ থেকে খেজুর গাছ কাটা শিখেছেন। বাবার আমলে দেড়শ গাছ কাটতেন। বর্তমানে গ্রামের বিভিন্ন জায়গা ঘুরে ১৭টি গাছ কাটেন। সপ্তাহে তিনদিন গাছ কাটেন।
দুই দিনের রস নেন গাছি। একদিন নেন গাছের মালিক। এভাবে দীর্ঘদিন ধরে খেজুর গাছ কাটছেন।

স্বাধীনতা পরবর্তী আগৈলঝাড়ার পাঁচ ইউনিয়নে প্রচুর খেজুর গাছ ছিল জানিয়ে দীপক মজুমদার বলেন, দিনেদিনে প্রত্যেক বাড়ির লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় গাছ কেটে সেখানে বসতি গড়া হয়েছে। এখন যে কয়েকটি খেজুর গাছ আছে, তাও রক্ষা করা যাচ্ছে না। এবার পুরো গ্রামে ১৭টি খেজুর গাছ পেয়েছি। গাছগুলো কেটে রস ও গুড় বিক্রি করছি।

তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন ১৭টি গাছে চার থেকে পাঁচ হাঁড়ি রস হয়। গত কয়েকদিন ধরে দুটি খেজুর গাছের রস প্রতিদিন চুরি হচ্ছে। রসের সঙ্গে হাঁড়িও চুরি হয়ে যাচ্ছে। কোনোভাবে রক্ষা করা সম্ভব ছিল না। এজন্য বেশ কয়েকদিন কষ্ট করে পাহারা দিয়েছি। তাতেও লাভ হয়নি। পাহারা শেষ হলে আবারও চুরি হয়। এ কারণে এক মাস আগে ৬০০ টাকা খরচ করে দুই হাঁড়িতে লোহার শিকল ও তালা দিয়েছি। এরপর আর রস ও হাঁড়ি চুরি হয় না। বাকি ১৫টি গাছের রস চুরি না হওয়ায় তাতে তালা দিইনি।

দীপক আরও বলেন, রসের চেয়েও দামি হচ্ছে কালো হাঁড়ি। কারণ এখন লাল রংয়ের হাঁড়িতে রস ধরলে অনেকে নিতে চায় না। ওই হাঁড়ি পূজার কাজে লাগে। এজন্য কালো হাঁড়ি কিনতে হয়। প্রতিটি হাঁড়ির দাম ৮০ টাকা। ওই দুটি গাছের জন্য আমাকে এ পর্যন্ত ২০টি হাঁড়ি কিনতে হয়েছে।  

লোহার শিকল ও তালা দেওয়ার পাশাপাশি নিপাহ ভাইরাসরোধে হাঁড়ির মুখে জাল পেঁচিয়ে রেখেছি উল্লেখ করে দীপক বলেন, গাছ থেকে রস নামানোর সময় আগে মানুষজন দেখলে মনে হতো রস নিতে এসেছেন। কিন্তু এখন হাঁড়িতে যে তালা মেরেছি, তা দেখতে আসছেন মানুষজন। আমার কিছুই করার ছিল না। রসের চেয়ে হাঁড়ি রক্ষায় এই কাজ করতে বাধ্য হয়েছি বলে জানান তিনি।  

news24bd.tv/আলী