অত্যাচারী স্বামীর হাতে প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হতেন ৮ সন্তানের জননী আফগান নারী মারওয়া (ছদ্মনাম)। পাষণ্ড স্বামী মেরে তার দাঁত ও হাতের হাড় ভেঙে দিয়েছিলো। কোনোক্রমে পালিয়ে সে যাত্রায় প্রাণ বাঁচে তার। সে সময় আমেরিকান সেনার নিয়ন্ত্রণাধীন আফগান সরকারের উদ্যোগে স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় মারওয়ার।
তবে আফগানিস্তানে মার্কিন সমর্থিত সরকারের পতন ও তালেবান ক্ষমতায় আসার পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। মারওয়ার প্রাক্তন স্বামী অভিযোগ করেন, জোর করে ডিভোর্স দেওয়া হয়েছে তাকে। তারপরই মারওয়াকে স্বামীর কাছে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তালিবান।
তালেবানের দাবি, ইসলামি আইন মেনে ডিভোর্সের আবেদন করেননি মারওয়া।
স্বামীর হাতে নিগৃহীত হওয়ার অভিজ্ঞতা জানিয়ে সংবাদ সংস্থা এএফপিকে মারওয়া বলেন, ‘দিনের পর দিন আমায় মারধর করা হত। মারের চোটে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে থাকতাম। আমার ছেলেমেয়েরা বলত, মা পালিয়ে যাও। খেতে না পেলেও অন্তত শান্তিতে বাঁচতে পারব। ’ ছেলেমেয়েদের মুখ চেয়েই তিনি ১০০ কিলোমিটার দূরে এক আত্মীয়ের বাড়ি পালিয়ে গিয়েছিলেন।
নাজিফা নামের এক আইনজীবী এই প্রসঙ্গে জানান, কাবুলে যখন আমেরিকার নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল, তখন মারওয়ার মতো অনেকেই ডিভোর্সের আবেদন জানিয়েছিলেন। গার্হস্থ্য হিংসা নিয়ে কোনও রকম আপসের পথে যেতে চায়নি আফগান সরকার। তিনি নিজেই বেশ কিছু ডিভোর্সের মামলা লড়েছেন বলে জানান নাজিফা। তবে ২০২১ সালের ১৫ অগস্ট আফগানিস্তান পুনর্দখল করার পরই মেয়েদের বিরুদ্ধে একাধিক ফতোয়া জারি করে তালিবান। বাধ্যতামূলক হয় হিজাব এবং বোরখা। পুরুষসঙ্গী ছাড়া বাইরে বের হওয়া নিষিদ্ধ হয়। তাদের উচ্চশিক্ষায় বাঁধা পড়ে।
news24bd/ARH