শেখ হাসিনা দেশকে মহাবিপদ থেকে রক্ষা করেছেন: ড. সেলিম মাহমুদ

সংগৃহীত ছবি

শেখ হাসিনা দেশকে মহাবিপদ থেকে রক্ষা করেছেন: ড. সেলিম মাহমুদ

অনলাইন ডেস্ক

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেছেন, শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশের বৈপ্লবিক উন্নয়নই করেননি, দেশকে কয়েকটি মহাবিপদ থেকে রক্ষা করেছেন। শতাব্দীর ভয়াবহ মহামারী কোভিড থেকে তিনি দেশকে রক্ষা করেছেন, এই মহামারী যেখানে বিশ্ব মানবতার জন্য এক মহাবিপদ ছিল এবং যেখানে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতেও লক্ষ লক্ষ মানুষ এই মহামারীতে মৃত্যুবরণ করেছে। আবার কোভিড পরবর্তী যুদ্ধের ভয়াবহ প্রভাব থেকে তিনি দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করেছেন। এই যুদ্ধের কারণে পৃথিবীর অনেক দেশের অর্থনীতি ধসে পড়েছে।

শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগের বাইরে অন্য কোন সরকার প্রধান ক্ষমতায় থাকলে দেশের অবস্থা যে ভয়াবহ হতো, সেটি সকলেই অনুধাবন করতে পারেন।  

চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার ৪ নম্বর পালাখাল মডেল ইউনিয়নের ভুইয়ারা গ্রামে এবং ৫ নম্বর পশ্চিম সহদেবপুর ইউনিয়নের মালচোয়া গ্রামে দেশের উন্নয়ন ও মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন, শেখ হাসিনার অবদান’ শীর্ষক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উঠান বৈঠকে প্রধান আলোচক হিসেবে ড. সেলিম মাহমুদ এসব কথা বলেন।

ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে দিয়ে গেছেন, তাঁর কন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা দেশকে স্বল্পোন্নত রাষ্ট্র থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করেছেন। বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর এটি ছিল জাতি হিসেবে আমাদের সবচেয়ে বড় সাফল্য।

জাতির পিতা শুধু বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে দিয়ে যাননি, তিনি এই রাষ্ট্রকে একটি টেকসই এবং শক্তিশালী অর্থনীতির রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার সকল ব্যবস্থা করে দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার পর বাংলাদেশের আদর্শ বিরোধী শক্তি বাংলাদেশকে সকল ক্ষেত্রে পিছিয়ে রেখেছিল। জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশের হাল ধরেছেন। তিনি যুগান্তকারী সকল উন্নয়নের মাধ্যমে দেশকে পাল্টে দিয়েছেন। এত অল্প সময়ের মধ্যে বিশ্বে কোন রাষ্ট্রনায়ক তার দেশে এতো ব্যাপকভিত্তিক উন্নয়ন করতে পারেনি।  

আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক বলেন, শেখ হাসিনার এই ব্যাপক উন্নয়নের মূল সুবিধাভোগী এদেশের জনগণ। তিনি সত্যিকার অর্থে এদেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করেছেন। ২০০৬ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতা ছাড়ে তখন দেশের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৫১০ মার্কিন ডলার। শেখ হাসিনা মাত্র ১৪ বছরে মাথাপিছু আয় ২৯০০ ডলারে উন্নীত করেছেন। বিএনপি ৭১ বিলিয়ন ডলারের জিডিপি রেখে গিয়েছিল। শেখ হাসিনা এটিকে ৪৬১ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করেছেন। তারা শিক্ষার হার রেখে গিয়েছিল মাত্র ৪৫ শতাংশে। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা শিক্ষার হার ৭৫% এ উন্নীত করেছেন।  

শেখ হাসিনার উদ্যোগে দারিদ্র্যের হার ৪১.৫% থেকে কমে ২০ শতাংশে এবং অতিদারিদ্র্যের হার ১০.৫% দাঁড়িয়েছে। বিএনপি ২০০৬ সালে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩.৪৮ বিলিয়ন ডলার রেখে গিয়েছিল। শেখ হাসিনার সরকার এই রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করেছিল। বিদ্যুৎ খাতে শেখ হাসিনার মাত্র ১৩ বছরের উন্নয়ন এ খাতে দেশের ১০০ বছরের অর্জনকে অতিক্রম করেছে। ১৯১০ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত মোট ১০০ বছরে বাংলাদেশে মাত্র ৪৭% মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পেয়েছিল। শেখ হাসিনা মাত্র ১৩ বছরে আরও ৫৩% মানুষকে বিদ্যুতের সুবিধায় এনে দেশের শতভাগ মানুষকে বিদ্যুতের সুবিধা দিয়েছেন।  

ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, শেখ হাসিনার মতো রাষ্ট্রনায়ক কোন দেশে যুগে যুগে জন্মায় না। একটি জাতি শত বছরে এরকম একজন রাষ্ট্রনায়ক পায়। আওয়ামী লীগ ছাড়া এদেশের অতীতের সরকার গুলো ক্ষমতায় এসেছিল নিজেদের ভাগ্য গড়ার জন্য। ‌দেশের মানুষকে তারা কিছুই দিয়ে দিতে পারেনি। শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে পাঁচ বছর কিংবা ১০ বছরের পরিকল্পনা করেন না। তিনি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের বহু প্রজন্মের কথা চিন্তা করে পরিকল্পনা গ্রহণ করেন এবং সে পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য নিরলস ভাবে কাজ করেন। ‌‌উন্নয়নশীল বিশ্বে তিনিই একমাত্র রাজনীতিবিদ যিনি তার দেশে ১০০ বছরের উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন এবং সেটি বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছেন।  

কচুয়ায় এই উঠান বৈঠকগুলোতে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আইয়ুব আলী পাটোয়ারী, কচুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন চৌধুরী সোহাগ, কচুয়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নাজমুল আলম স্বপন, কচুয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর যুবলীগের সভাপতি মাহবুব আলম, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল মুবিন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউদ্দিন হাতেম, পালাখাল রোস্তম আলী ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম, ৩ নং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইসহাক সিকদার, ৪ নং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিব মজুমদার জয়, ৪ নং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান, ৫ নং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন, ৬ নং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আখতার হোসেন, ৯ নং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আহসান হাবীব জুয়েল, ১০ নং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কবির হোসেন, ৩ নং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কবির হোসেন মজুমদার, ৪ নং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজী আহাদ, সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক, ৫ নং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সুমন মিয়া, আওয়ামী লীগ নেতা আহসান হাবিব প্রাঞ্জল, আওয়ামী লীগ নেতা আক্তার হোসেন রানা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সাবেক সদস্য এডভোকেট শওকত আলী পাটোয়ারী, উপ কমিটির সাবেক সদস্য সাইদুল ইসলাম বাদল, আওয়ামী লীগ নেতা সোহাগ মিয়া, চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের উপসম্পাদক কামাল পারভেজ মিয়াজী, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান, কচুয়া উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক সালাউদ্দিন সরকারসহ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সহ স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

news24bd/ARH