সৌদি-ইরান চুক্তি: কীভাবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্রসহ আঞ্চলিক দেশগুলো?

সংগৃহীত ছবি

সৌদি-ইরান চুক্তি: কীভাবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্রসহ আঞ্চলিক দেশগুলো?

অনলাইন ডেস্ক

চীনের মধ্যস্থতায় কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে রাজি হয়েছে সৌদি আরব ও ইরান। এর অংশ হিসেবে দেশ দুটিতে তারা পুনরায় দূতাবাস চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলেও ইরানের গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। তবে তাদের সম্পর্কের এই নতুন মাত্রা প্রতিবেশী দেশগুলোর কূটনীতিতে কী প্রভাব ফেলবে? চীন ও ইরানের অবন্ধু রাষ্ট্র্র যুক্তরাষ্ট্রওবা এই সম্পর্ককে কীভাবে দেখছে তা নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। আরব নিউজের একটি বিশ্লেষণে এ বিষয়ে বিস্তারিত উঠে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, ইরান ও সৌদি আরবের নতুন কূটনৈতিক সম্পর্কের বিষয়ে তারা অবহিত। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি জানিয়েছেন, ইয়েমেনে যুদ্ধের অবসান এবং মধ্যপ্রাচ্যে যেকোনো ধরনের উত্তেজনা প্রশমনের প্রচেষ্টাকে যুক্তরাষ্ট্র স্বাগত জানায়। তিনি বলেন, দেশ দুটির মধ্যে যে চুক্তি হয়েছে, তাকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে ইরান এই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে কিনা সে ব্যাপারে আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।

 

সংযুক্ত আরব আমিরাত বলছে, তারা এই চুক্তিকে স্বাগত জানায এবং আলোচনায় চীনের ভূমিকাকে তারা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। দেশটির রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা আনোয়ার গারগাশ বলেন, ‘আমরা প্রতিবেশীদের সঙ্গে 
উন্নত সম্পর্কে বিশ্বাস করি। আমরা চাই, এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে ইতিবাচক যোগাযোগ হোক এবং সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হোক।  

শুক্রবার কাতার নিউজ এজেন্সি জানায়, কাতারের প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান বিন জসিম আল-থানি সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহানের সঙ্গে ফোনালাপের সময় ইরানের সঙ্গে সৌদির সম্পর্কোন্নয়নের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।

তিনি দুই দেশের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতা চুক্তির পুনঃসক্রিয়তা এবং অর্থনীতি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি, ক্রীড়া এবং যুব ক্ষেত্রে সাধারণ সহযোগিতা চুক্তিকে স্বাগত জানান।

আল-থানি আরও জানান, তিনি মনে করেন, এই চুক্তি এই অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখবে এবং সমগ্র অঞ্চলের স্বার্থে দুই দেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে।

ইরাক ও ওমানও দেশদুটির সম্পর্ক পুনঃপ্রবর্তনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে।  

রিয়াদ ও তেহরানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের বিষয়ে ত্রিপক্ষীয় বিবৃতিকে স্বাগত জানিয়েছে ওমান। ওমান নিউজ এজেন্সি বলেছে, ইরাক, ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে ‘একটি নতুন অধ্যায় চালু করার’ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানয় ওমান।  

ওমানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আলবুসাইদি বলেছেন, ‘এটি সবার জন্য একটি একটি উইন উইন সিচুয়েশন। এটি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তাকে উপকৃত করবে। আমরা আশা করি, দীর্ঘমেয়াদে সবার জন্য অর্থনৈতিক সুবিধা  বাড়াবে। ’ 

বাহরাইন, আলজেরিয়ান, তুর্কি, লেবানিজ এবং সুদানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতি প্রকাশ করেছে।

বাহরাইন বলেছে, তারা আশা করে যে চুক্তিটি ‘পার্থক্য নিরসনের দিকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ এবং আলোচনা ও কূটনৈতিক উপায়ে সমস্ত আঞ্চলিক সংঘাতের অবসান ঘটাবে।

কুয়েতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, চুক্তিটি ‘আস্থা তৈরি এবং উভয় দেশের মধ্যে এমনভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার চাবিকাঠি, এই অঞ্চলের দেশ এবং সমগ্র বিশ্বের স্বার্থে কাজ করবে।

জর্ডানের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আম্মান আশা করেছে, সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে চুক্তিটি দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করতে অবদান রাখবে।

শনিবার সিরিয়া চুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে বলেছে, এটি এই অঞ্চলে আরও স্থিতিশীলতার দিকে নিয়ে যাবে।

news24bd.tv/আইএএম