ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে এবার ৪০টি স্বর্ণের বার জব্দ

সংগৃহীত ছবি

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে এবার ৪০টি স্বর্ণের বার জব্দ

অনলাইন ডেস্ক

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে আবারও ৪০টি স্বর্ণের বার জব্দ করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। এ সময় সুশঙ্কর দাস নামের এক ট্রাকচালককে আটক করা হয়েছে। জব্দ হওয়া স্বর্ণের বারগুলোর ভারতীয় বাজারমূল্য প্রায় দুই কোটি ৭৮ কোটি লাখ রুপির বেশি।

বিএসএফ জানায়, শনিবার (১৮ মার্চ) স্থানীয় সময় প্রায় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা নাগাদ সুসংহত চেকপোস্ট পেট্রাপোলে, বিএসএফ সদস্যর ১৪৫ ব্যাটালিয়ন আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে ৪ হাজার ৬৬৭ গ্রাম ওজনের ৪০টি স্বর্ণের বারসহ একটি ট্রাকচালককে আটক করা হয়।

বাজেয়াপ্ত হওয়া সোনার বাংলাদেশি মুদ্রায় তিন কোটি ৫৭ লাখ টাকার বেশি।

বিএসএফের জানায়, তারা গোপন তথ্য পায় এক ট্রাকচালক বাংলাদেশ থেকে পেট্রাপোল হয়ে ভারতে সোনা পাচার করতে চলেছেন। অবিলম্বে অপেক্ষায় থাকেন বিএসএফ সদস্যরা। এর কিছুক্ষণ পর বাহিনীর সদস্য দেখতে পান সন্দেহভাজন একটি বাংলাদেশি ট্রাক পেট্রাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে।

ওই ট্রাকে করে বাংলাদেশ থেকে ভারতে মাছ আনা হচ্ছিল। বিএসএফ অনুসন্ধান দল ট্রাকটিকে আটক করে পুঙ্খানুপুঙ্খ তল্লাশি করে। তল্লাশি চলাকালে মাছের বাক্সের নিচে থেকে ৪০টি স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। অবিলম্বে ট্রাকচালককে আটক করে বিএসএফ ক্যাম্পে নিয়ে আসে। পরিচয় নিয়ে জানা যায়, পাচারকারীর সাতক্ষীরা জেলার বাসিন্দা সুশঙ্কর দাস।

সুশঙ্কর বিএসএফকে জানিয়েছে, তিনি ১৫ বছর ধরে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত ট্রাক চালাচ্ছেন। ট্রাকের মালিক সাতক্ষীরার বাসিন্দা সফিকুল ইসলাম। সাতক্ষীরা থেকে ট্রাকে মাছবোঝাই করা হয়েছিল। এসব মাছ কলকাতার বাবা ইন্টারন্যাশনাল নামে এক সংস্থার কাছে হস্তান্তর করার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই পেট্রাপোলে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএসএফফের অনুসন্ধান দল স্বর্ণের বারসহ ট্রাক এবং ড্রাইভারকে আটক করে। পরে পেট্রাপোল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

বিএসএফের তরফে জানানো হয়েছে এ ধরনের ঘটনা সীমান্তে হামেশাই ঘটে চলছে। তবে বাহিনীও তৎপর রয়েছে।

এর আগে ৯ মার্চ উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার বর্ডার আউট পোস্টের মালিদা সীমান্ত থেকে ২৩টি সোনার বার উদ্ধার করেছিল বিএসএফ। বাজেয়াপ্ত স্বর্ণের ওজন ২ কেজি ৬৮৩ গ্রাম ০৪ মিলিগ্রাম। এর বাংলাদেশি বাজার মূল্য প্রায় ১ কোটি ৭০ লাখ।

৬ই মার্চ ভারতীয় বর্ডার আউটপোস্ট (কল্যাণী) দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তে, একটি সূত্রের মারফত খবর পেয়ে পুকুর থেকে ৪০টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার করে বিএসএফ। জব্দ করা সোনার ওজন ছিল ৪ কেজি ৬শ গ্রাম। বাংলাদেশি বাজারমূল্য ৩ কোটি  ৩০ লাখ ১৬ হাজার টাকার কিছু বেশি। বিএসএফের ধারণা ওই সোনা বাংলাদেশ হয়ে ভারতে পাচার হয়ে পুকুরে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল।

এর আগে, ২রা মার্চ পশ্চিমবঙ্গের জয়ন্তীপুর সীমান্ত থেকে ২২টি সোনার বার উদ্ধার এবং দুই চোরাকারবারিকে আটক করে বিএসএফ। ওসব স্বর্ণ বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচার হয়েছিল। ২২টি সোনার বারসহ দুইজনকে আটক করেছিল সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ার, বিএসএফ। উদ্ধার হওয়া ২২টি স্বর্ণের বারের মোট ওজন ছিল দুই কেজি ৫৬৬ গ্রাম, আটক সোনার আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার মতো।

বিভিন্ন উপায়ে শুধু মার্চ মাসেই একাধিকবার সোনা উদ্ধার করল বিএসএফ। এ বিষয়ে দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিএসএফের কর্মকর্তারা সীমান্তে বসবাসকারীদের সোনা চোরাচালান সংক্রান্ত তথ্য প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন।

বিএসএফের ‘সীমা সাথী’ নামে এক হেল্পলাইন নম্বরে (১৪৪১৯) যোগাযোগ করার কথা জানানো হয়েছে।  এছাড়া দক্ষিণবঙ্গ সীমান্ত আরেকটি নম্বর (৯৯০৩৪৭২২২৭) জারি করেছে।  সোনা চোরাচালান সংক্রান্ত তথ্য হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ বা ভয়েস মেসেজ করে পাঠানো যায়।  সঠিক তথ্য প্রদানকারী ব্যক্তিকে উপযুক্ত পুরস্কারের অর্থ দেওয়া হবে এবং তার পরিচয় গোপন রাখা হবে বলে জানিয়েছে বিএসএফ।