দিনের শেষ বলে উইকেট দিলেন তামিম, ১৮০ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ

সংগৃহীত ছবি

দিনের শেষ বলে উইকেট দিলেন তামিম, ১৮০ রানে পিছিয়ে বাংলাদেশ

অনলাইন ডেস্ক

আয়ারল্যান্ড ইনিংস গুটিয়ে যাওয়ার পর দিনের খেলা শেষ হতে তখনও বাকি ১০ ওভারের মতো। অগত্যা বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে নামতেই হলো। তবে পড়ন্ত বেলায় ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ও শেষ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছে স্বাগতিকরা। ইনিংসের প্রথম ওভারে নাজমুল হোসেন শান্তর পর দিনের শেষ বলে বিদায় নিয়েছেন তামিম ইকবাল।

দুই ওপেনারের উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩৪ রান।

এর আগে, তাইজুল ইসলামের ফাইফারে আয়ারল্যান্ডের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে যায় ২১৪ রানেই। ৫৮ রান দিয়ে ৫ উইকেট নেন তাইজুল। আগামীকাল বুধবার আইরিশদের চেয়ে ১৮০ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় দিনের খেলা শুরু করবে টাইগাররা।

নতুন ব্যাটারের সঙ্গে ১২ রানে অপরাজিত থেকে মাঠে নামবেন মুমিনুল।

আয়ারল্যান্ডের প্রথম ইনিংসের জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় বাংলাদেশ। প্রথম বলেই খালি হাতে সাজঘরে ফেরেন শান্ত। তার স্টাম্প উপড়ে দেন মার্ক অ্যাডায়ার। শুরুর সেই ধাক্কা মুমিনুলকে নিয়ে সামাল দেন তামিম। এ জুটিতে দিনটা ভালোভাবেই শেষ করার পথে ছিল টাইগাররা। কিন্তু শেষ বলে অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইনের স্পিনে বোকা বনে যান তামিম। বল বাড়তি বাউন্স করে তার ব্যাটের কোণায় লেগে চলে যায় স্লিপে দাঁড়ানো অ্যাডায়ারের হাতে।

শেষ বেলায় বাংলাদেশের দুই উইকেট তুলে নেওয়ার আগে আয়ারল্যান্ড ব্যাটিং ইনিংস মোটেও সুবিধা করতে পারেনি। করতে দেননি তাইজুল। সাকিব আল হাসান এদিন বল হাতে নিতে ৬৬তম ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও, আগেভাগে বোলিং পেয়ে উইকেট তুলে নেওয়ার কাজটি সারেন এই বাঁহাতি স্পিনার।

আজ মিরপুরে টস হেরে বোলিংয়ে নামা বাংলাদেশ একাদশে ছয় বিশেষজ্ঞ বোলার রাখে। এর মধ্যে তিনজনই পেসার। ২০১৪ সালের পর ঘরের মাঠে বাংলাদেশ এই প্রথম তিনজন বিশেষজ্ঞ পেসার নিয়ে খেলতে নামল। আর পেসারদের সৌজন্যে আইরিশ টপ অর্ডারে ফাটল ধরায় বাংলাদেশ। বাকি কাজটা করেছেন স্পিনাররাই।

পেসার শরীফুল ইসলাম এনে দেন প্রথম ব্রেকথ্রু। পঞ্চম ওভারে ফুল লেংথ থেকে ভেতরের দিকে ঢোকা বলে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে মিস করে এলবিডব্লিউ হন বাঁহাতি মারে কমিন্স। অষ্টম ওভারে খালেদের জায়গায় ইবাদতকে বোলিং আনেন সাকিব, নিজের দ্বিতীয় ওভারে জেমস ম্যাককলামকে ফেরান তিনি। অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বলটায় ব্যাট চালিয়ে নিজের বিপদ ডেকে আনেন আইরিশ ওপেনার। দ্বিতীয় স্লিপে নাজমুল হোসেন শুরুতে গড়বড় করে ফেললেও সামনে ঝুঁকে ক্যাচ নেন।

বল পুরোনো হওয়ার আগেই স্পিনের সঙ্গে আইরিশদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন সাকিব। নিজের প্রথম ওভারেই সম্ভাবনাও তৈরি করেন তাইজুল ইসলাম। অ্যান্ড্রু বলবার্নির বিপক্ষে নেওয়া কট-বিহাইন্ডের রিভিউ নিয়ে অবশ্য ব্যর্থ হয় বাংলাদেশের। শেষ পর্যন্ত সেই তাইজুলকেই সুইপ করতে গিয়ে বলবার্নি ফেরেন ৫০ বলে ১৬ রান করে।  

প্রথম সেশনে ৩ উইকেট হারানোর ধাক্কাটা অবশ্য ভালোই সামলে নিয়েছিল হ্যারি টেক্টর ও কার্টিস ক্যাম্ফার জুটি। দুজন মিলে ১২২ বল খেলে ৭৪ রান যোগ করেন। মিরপুরে ব্যাটিংয়ের জন্য সেরা সময়টাও পাচ্ছিলেন দুজন। বল পুরোনো হয়ে যাওয়ায় পেসারদের বলে তেমন প্রাণ ছিল না। স্পিনও ঝুঁকিপূর্ণ মনে হচ্ছিল না। সবকিছুই যখন আইরিশদের পক্ষে, তখনই ভুলটা করেন টেক্টর। ইনিংসের ৪২তম ওভারে মিরাজের ফুল লেংথের বলে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হন। ৯২ বলে ৫০ রানেই থামে তার অভিষেক ইনিংস।  

পরের ওভারেই আরেক স্পিনার তাইজুলের আঘাত। তাতে আউট হন সদ্য ক্রিজে আসা পিটার মুর। সামনের পা সরিয়ে মিড অফের ওপর দিয়ে মারতে গিয়ে তামিমের হাতে সহজ ক্যাচ তুলেছেন তিনি। এরপর আর দীর্ঘ হয়নি ক্যাম্ফারের ইনিংসও। তাইজুলের আর্ম বলে আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর রিভিউ নিয়েও রক্ষা পাননি এই অলরাউন্ডার। আউট হওয়ার আগে করেছেন ৭৩ বলে ৩৪ রান।

৩ উইকেটে ১২২ রান থেকে আয়ারল্যান্ড পরিণত হয় ৬ উইকেটে ১২৪ রানে। মাত্র ২ রানের মধ্যে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে প্রবলভাবে ফিরে আসে বাংলাদেশ। আইরিশদের ‘মিনি ধস’-এর পর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন লরকান টাকার (৩৭)। প্রথমে অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইন (১৯) ও পরে মার্ক এডেয়ারের (৩২) জুটি গড়েন তিনি। আয়ারল্যান্ড ইনিংসের স্থায়িত্বও বাড়ে তাতে। লেজের সারির ব্যাটসম্যানদের লড়াইয়ে আইরিশরা ৭৭.২ ওভার পর্যন্ত ব্যাটিং করে। তাইজুল ২৮ ওভারে ৫৮ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন মিরাজ ও ইবাদত। শরীফুলের শিকার ১ উইকেট।