ঈদযাত্রায় ৯ সুন্নত

প্রতীকী ছবি

ঈদযাত্রায় ৯ সুন্নত

অনলাইন ডেস্ক

ঈদুল ফিতর প্রত্যেক রোজাদারের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি উপহার। প্রতিবছর আপনজনের সঙ্গে ঈদ করতে কর্মস্থল থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে যান ঘরমুখো মানুষ। এ সময়ের সুন্নত সম্পর্কে অনেকে বেখবর। অথচ অনিরাপত্তা ও নানারকম ভোগান্তি থেকে বাঁচতে সুন্নত মেনে চলার বিকল্প নেই।

তাছাড়া প্রত্যেক বিষয়ে নবীজির অনুসরণে রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও পরকালীন সাফল্যের নিশ্চয়তা।

নিচে ঈদযাত্রার সময়ের কিছু সুন্নত তুলে ধরা হলো—

১। সফরের আগে যানবাহন, আসবাবপত্র ও যাত্রাপথ সম্পর্কে যতটুকু সম্ভব খোঁজখবর নেয়া এবং আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করা।

আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তারা (মুসলমানরা) পারস্পরিক পরামর্শক্রমে কাজ করে।

(সুরা আশ-শুরা: ৩৮)

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং (গুরুত্বপূর্ণ) বিষয়ে তাদের সঙ্গে পরামর্শ করুন। অতঃপর আপনি যখন (কোনো বিষয়ে) মনস্থির করবেন, তখন আল্লাহর ওপর নির্ভর করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওয়াক্কুলকারীদের ভালোবাসেন। ’
(সুরা আলে ইমরান: ১৫৯)

২। বের হওয়ার আগে দুই রাকাত নামাজ পড়া। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, সফরকারী তার পরিবারের জন্য দুই রাকাত নামাজের চেয়ে ভালো কিছু রেখে যায় না।
(মুসান্নাফ ইবনু আবি শাইবা: ৪৯১২)

৩। যতটা সম্ভব একাকী সফর পরিহার করা। মহানবী (স.) বলেছেন, সঙ্গীহীনতায় কত কী সমস্যা আমি যেমন জানি, তোমরাও জানলে রাতে একাকী কখনো সফর করার সাহস পেতে না।
(বুখারী: ২৯৯৮)

৪। বেশ কয়েকজন মিলে সফর করলে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন কাউকে গ্রুপ লিডার নির্বাচন করা। যিনি পরামর্শের ভিত্তিতে সফরের দায়িত্বগুলো সম্পন্ন করবেন। অন্যদের কাজ হবে তার নির্দেশনা মেনে চলা।

রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, সফরে তোমরা যদি তিনজন হও, একজনকে আমির নিযুক্ত করো।
(আবু দাউদ: ২৬০৯)

৫। যতটা সম্ভব ভোরবেলায় যাত্রা করা। সাহাবি সাখর আল গামিদি ব্যবসায়ী ছিলেন।

রাসুলুল্লাহ (স.) তাকে বলেন, ‘ভোরবেলাকে আমার উম্মতের জন্য বরকতে পূর্ণ করে দেয়া হয়েছে। ’ এরপর থেকে সাখর গামিদি (রা.) সকাল সকাল ব্যবসায় নেমে পড়তেন। কিছুদিনের মধ্যেই তিনি ধনাঢ্য ব্যবসায়ী হয়ে ওঠেন।
(ইবনু হিব্বান: ৪৭৫৪)

৬। পরিচিত ও প্রিয়জনদের থেকে সুন্দরভাবে বিদায় নেয়া। বিদায় দানকারী বলবেন, আল্লাহ তোমাকে তাকওয়া-পরহেজগারি দান করুন, তোমার গুনাহ ক্ষমা করুন আর যেখানেই থাকো তোমাকে তিনি কল্যাণ দিন।
(তিরমিজি: ৩৪৪৪)

আর সফরকারী বলবেন, আল্লাহর নিরাপত্তায় তোমাকে অর্পণ করছি, তিনি অনন্য আস্থাভাজন।
(মুসনাদে আহমদ: ৯২১৯)

৭। সফরের জিকির এবং দোয়াগুলো পড়া। যেমন— উঁচু জায়গায় উঠার সময় ‘আল্লাহু আকবার’ বলা এবং নীচু জায়গায় নামার সময় ‘সুবহানাল্লাহ’ বলা, সমতলে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা। ‘তকবির’ ইত্যাদি উঁচু আউয়াজে বলা যাবে না।

গাড়িতে উঠে এই দোয়াটি পড়া— ‘সুবহানাল্লাজি সাখখরা লানা হাজা ওয়া মা কুন্না লাহু মুকরিনিন। ’ অর্থ: ‘পবিত্র ওই সত্তা, যিনি এটিকে আমাদের আয়ত্তাধীন করেছেন, অথচ আমরা একে নিজেরা আয়ত্তাধীন করতে পারতাম না। ’

আর সফর শেষে পড়বেন- ‘আ-ইবুনা ইনশাআল্লাহ, তা-ইবুনা, আবিদুনা, লি রাব্বিনা হামিদুন। ’ অর্থ: ‘আমরা ফিরে এসেছি, পাপের জন্য অনুতপ্ত হয়ে, আনুগত্যের প্রত্যয় নিয়ে এবং আল্লাহর প্রশংসায় মুখর হয়ে। ’
(মুসলিম: ১৩৪২)

৯। যাত্রা সুন্দরভাবে শেষ হওয়ার পর নিজ এলাকার মসজিদে দুই রাকাত নামাজ পড়ে নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা।
(বুখারী: ২৬)

news24bd.tv/আলী