র‍্যাপিড ক্যাশ নামক অ্যাপ ব্যবহার করে প্রতারণা, এজেন্টসহ আটক ২৬

সংগৃহীত ছবি

র‍্যাপিড ক্যাশ নামক অ্যাপ ব্যবহার করে প্রতারণা, এজেন্টসহ আটক ২৬

অনলাইন ডেস্ক

র‍্যাপিড ক্যাশ নামক অ্যাপ ব্যবহার করে প্রতারণাকারী চক্রের মূলহোতা মাহের এবং এজেন্টসহ ২৬ সদস্যকে আটক করেছে এন্টি টেররিজম ইউনিট (এটিইউ)।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উত্তরা ১১ নম্বর সেক্টরের ৬ নম্বর বাসার পাঁচ তলা থেকে তাদের আটক করে এটিইউর সাইবার ক্রাইম উইং। তবে মাহের ছাড়া আটক বাকিদের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানায়নি এটিইউ।

এটিইউ বলছে, র‍্যাপিড ক্যাশ একটি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশন।

এই অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে ডাউনলোড করার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহারকারীর মোবাইলের সম্পূর্ণ এক্সেস নিয়ে নেয়। যার মধ্যে রয়েছে ব্যবহারকারীর সমস্ত কন্টাক্ট নম্বর, গ্যালারি তথ্য ছবি এবং ভিডিও এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।

বাংলাদেশে ব্যবহারযোগ্য যেকোনো মোবাইল সিমের নাম্বারের মাধ্যমে অ্যাপটি রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে হয়। রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হওয়ার পর র‍্যাপিড ক্যাশ ব্যবহারকারীকে পাঁচশ বা এক হাজার টাকার একটি ক্ষুদ্র ঋণ প্রদান করেন এবং ওই দিন হতেই ওই টাকার উপর প্রায় একশ টাকা হারে সুদ আরোপ করে।

ঋণ প্রদানের কয়েক দিনের মধ্যেই লোন পরিশোধ করার জন্য বা কমপক্ষে সুদের টাকা পরিশোধ করার জন্য র‍্যাপিড ক্যাশ তাদের হট লাইন নাম্বারের ( ০১৯৫৬৭২৮৭৭৬) মাধ্যমে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন দেয়। কোনো গ্রাহক যদি এই উচ্চ হাড়ের সুদ দিতে অস্বীকৃতি জানালে র‍্যাপিড ক্যাশ গ্রাহককে বিভিন্নভাবে প্রতারণা বা ব্ল্যাকমেল করা শুরু করে। যার মধ্যে রয়েছে ব্যবহারকারীর গুরুত্বপূর্ণ এবং গোপনীয় তথ্যের জনসমক্ষে প্রকাশ।

ব্যবহারকারী নিজের সামাজিক অবস্থান বিবেচনা করে যখন ঋণ এবং সুদের টাকা দিতে চান, তখন রেপিড ক্যাশ থেকে তিনটি নগদ এজেন্ট নাম্বার দেয়া হয়।

ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে এটিইউ বলছে, কেউ কেউ সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধের পরও তাদের জোর করে আরও ঋণ দিয়ে সেই টাকা এবং সুদ পরিশোধে বাধ্য করা হতো। এজন্য প্রয়োজনে ভয়-ভীতিও দেখানো হতো।

এটিইউ’র সাইবার ক্রাইম উইংয়ে এ সংক্রান্ত একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে। সেসব অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। পরে অনুসন্ধান প্রথমে দুইজন এজেন্টকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য ও অনুসন্ধানের মাধ্যমে এই চক্রের মূলহোতা মাহিরের সন্ধান পাওয়া যায়।

অনুসন্ধানে এটিইউ জানতে পারে, মাহিরের নেতৃত্বে একটি চক্র উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের ৬ নম্বর বাসার ৫তলায় একটি ফ্লোর ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এই প্রতারণা করছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে ওই বাসায় অভিযান চালায় এটিইউ। এ সময় বাসা থেকে চক্রের মূলহোতা মাহিরসহ একাধিক সদস্যকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যে আরও ১৯ জনকে আটক করা হয়।  

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা রেপিড ক্যাশ নামক অ্যাপ ব্যবহার করে লোন দেয়া এবং এর টাকা ফেরত দেয়ায় বাধ্য করার কথা স্বীকার করেছেন।

অনুসন্ধানে এটিইউ আরও জানতে পারে, এই গ্রুপের সদস্যরা কোন একটি অ্যাপ বেশিদিন চালান না। যখনই কোন অ্যাপ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরে আসতে পারে বলে সন্দেহ হয়, তারা অ্যাপ চালানো বন্ধ করে এবং নতুন নামে একই কাজের অপর একটি অ্যাপ তৈরি করে। এভাবেই তারা প্রতারণা করে আসছে। মাহিরসহ আটক সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

news24bd.tv/SHS