ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আজ মুখোমুখি হবে আবাহনী-মোহামেডান

সংগৃহীত ছবি

ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আজ মুখোমুখি হবে আবাহনী-মোহামেডান

অনলাইন ডেস্ক

ফেডারেশন কাপের হাইভোল্টেজ ফাইনাল আজ। ঢাকা ডার্বিতে মাঠে নামছে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডান ও আবাহনী। মর্যাদার লড়াইয়ে ট্রফির দিকে চোখ দুই দলের। কুমিল্লার ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে বেলা সোয়া তিনটায় শুরু হবে শিরোপার লড়াই।

 

আবাহনী-মোহামেডান ম্যাচের জন্য এক সময় অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকতো এ দেশের ফুটবলপ্রেমীরা। সময়ের পরিক্রমায় সেই জৌলুস হারিয়ে গেলেও এবারের ফেডারেশন কাপ ঠিকই উত্তাপ ছড়াচ্ছে। কারণ ১৪ বছর পর এ টুর্নামেন্টের ফাইনালে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী।  

এ মৌসুমে স্বাধীনতা কাপ ও বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ দুইটি শিরোপাই জিতেছে দেশের ফুটবলের জায়েন্ট বসুন্ধরা কিংস।

বাকি আছে শুধু ফেডারেশন কাপ। তাই মৌসুমের শেষ শিরোপা জিততে আবাহনী ও মোহামেডান দুই দলই যে ঝাপিয়ে পড়বে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

মর্যাদার লড়াইয়ে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ স্নায়ুচাপ। সবশেষ প্রিমিয়ার লিগে দুদলের ম্যাচটি ড্র হয় ১-১ গোলে। মোহামেডানের অধিনায়ক সুলেমান দিয়াবাতে সানডেদের সাথে সাজ্জাদ, ইমনরা কোচ আলফাজের বড় ভরসা।

প্রতিপক্ষকে সমীহ করেই রণকৌশল সাজিয়েছেন আবাহনীর কোচ। দলে নেই ইনজুরি। তাই কলিন্দ্রেস, নাঈম, সোহেলদের নিয়ে অলআউট খেলার পরিকল্পনা মারিয়ো লেমসের।

সর্বশেষ ২০১১ সালে তারা বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল কোটি টাকার সুপার কাপ ফাইনালে। সেই ফাইনাল জিতেছিল আবাহনী। এবারও কাগজে-কলমে তারা শক্তিশালী, দেশি-বিদেশি খেলোয়াড় সজ্জায় তারা এগিয়ে। লিগ শিরোপা বসুন্ধরা কিংস নিয়ে গেলেও তারা আছে দ্বিতীয় স্থানে। মোহামেডান শক্তিতে পিছিয়ে থাকলেও মানসিকতায় অনেকখানি এগিয়ে। আলফাজের অধীনে চমৎকার খেলা দলটি যেন হঠাৎ একই সমতলে দাঁড়িয়ে গেল আজ কুমিল্লার ফাইনালে। মোহামেডান কোচ আলফাজ আহমেদও মনে করেন ফেডারেশন কাপ শিরোপার বড় চ্যালেঞ্জার মোহামেডান, ‘টুর্নামেন্ট আর লিগ এক নয়। ফাইনাল যেকোনো দলের। মাঠের খেলার সঙ্গে ভাগ্যও জড়িয়ে থাকে। ’ আবাহনীর পর্তুগিজ কোচ মারিও লেমোসও স্বীকার করছেন, ‘ফাইনাল মানে অন্য রকম উদ্দীপনা কাজ করে ফুটবলারদের মধ্যে। তাই ম্যাচে শেষ পর্যন্ত মনোযোগী থাকতে পারাটাই বড় কথা। ’

মৌসুম শুরুর মোহামেডান এত দুর্বার ছিল না। বাজে পারফরম্যান্সের কারণে চাকরি খুইয়েছেন কোচ শফিকুল ইসলাম মানিক। এরপর দায়িত্ব নেন তাঁর সহকারী আলফাজ আহমেদ। এই তারকার হাতেই দলটির রংবদল হয় এবং দারুণ এক সাফল্যের বাঁকে এসে দাঁড়িয়ে তারা। এই কোচ মনে করছেন, ‘বসুন্ধরা কিংসকে হারানোর পর আমরা যেভাবে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলছি, সেটাই আগামীকাল খেলব। দল আত্মবিশ্বাসী, তবে সাবধানী ফুটবল খেলতে হবে। কারণ আবাহনী অনেক বড় দল। ’ শক্তির পার্থক্যে বড় হেরফের থাকলেও টানা চারবারের লিগ চ্যাম্পিয়ন বসুন্ধরা কিংসকে বিদায় করে মোহামেডান পৌঁছেছে ফেডারেশন কাপের ফাইনালে। এই ম্যাচটাই বদলে দিয়েছে তাদের খেলা এবং আত্মবিশ্বাস। দেশের সেরা দলকে যখন হারাতে পেরেছে তখন যেকোনো দলকে তারা চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত। কদিন আগে এই কুমিল্লায় আবাহনী-মোহামেডানের লিগ ম্যাচ ড্র হয়েছিল ১-১ গোলে। অর্থাৎ সেই ম্যাচে শক্তিতে আগুয়ান আবাহনী নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।

তবে পরিসংখ্যান বলছে, গত পাঁচ ম্যাচে আবাহনীর বিপক্ষে মোহামেডানের কোনো জয় নেই। নীল-আকাশি কোচ অবশ্য সেই পরিসংখ্যানে যেতে চান না, ‘আমাদের সামর্থ্য আছে, কিন্তু এই ম্যাচে সেটা প্রমাণ করতে হবে। ফাইনালে শক্তির বিচারের চেয়ে আত্মবিশ্বাস বজায় রাখা ও গোলের সুযোগের সদ্ব্যবহার করাটাই আসল কাজ। ’ তাদের আসল ভরসা দানিয়েল কলিনদ্রেস লিগে করেছেন ১১ গোল। এ ছাড়া কিংসলে (৭ গোল) ও ফাহিম (৪ গোল) চমৎকার খেলছেন। ওদিকে মালির ফরোয়ার্ড সোলেমানে দিয়াবাতে লিগে ১২ গোল করে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা। এই ফরোয়ার্ডের ওপরই বিশেষভাবে নির্ভর করবে মোহামেডান। সেই নির্ভরতার প্রতিদান দিতে পারলে ২০১৩ সালের পর কোনো ট্রফি জিতবে সাদা-কালোরা। আবাহনীর সে রকম ট্রফিখরা নেই, গতবারের ফেডারেশন কাপটাই তাদের।

news24bd.tv/আইএএম