কনস্টেবল বাদল হত্যা মামলায় ৫ জনের ফাঁসির আদেশ

সংগৃহীত ছবি

কনস্টেবল বাদল হত্যা মামলায় ৫ জনের ফাঁসির আদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ বছর আগে রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় পুলিশ কনস্টেবল বাদল মিয়া হত্যা মামলায় ৫ জনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (৬ জুন) ঢাকার ৭ম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা তেহসিন ইফতেখারের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। পর্যবেক্ষণে বিচারক বলেন, আসামিরা এতটা বেপরোয়া যে পুলিশ সদস্যকে পর্যন্ত খুন করতে দ্বিধাবোধ করেনি।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-রিপন নাথ ঘোষ, বিশ্বজিৎ চন্দ্র দাস,  ইব্রাহিম খলিল ওরফে কসাই খলিল, রতন চন্দ্র দাস ও হুমায়ন কবীর।

মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে একলাখ টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে। এছাড়া লাশ গুমের দায়ে তাদের আরও সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ১৫ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ের তাদের আরও ৫ মাস কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

আসামিদের মধ্য বিশ্বজিৎ, ইব্রাহিম ও রতনকে রায় ঘোষণার আগে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

অপর দুই আসামি পলাতক রয়েছে। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মাহবুবুর রহমান এসব তথ্য জানান।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি মতিঝিল থানাধীন টিএন্ডটি কলোনীস্থ এলাকা থেকে পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয়ে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে তার পকেট থেকে পরিচয়পত্র উদ্ধার হয়। সেখানে দেখা যায়, তিনি একজন পুলিশ কনস্টেবল। এ ঘটনায় মতিঝিল থানার সাব-ইন্সপেক্টর আব্দুল লতিফ মামলা করেন।

পরে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিদের আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১২ সালের ৯ নভেম্বর মতিঝিলের এজিবি কলোনী এলাকায় রিপন নাথ, বিশ্বজিৎ চন্দ্র ও খোকন নাথ বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গ্রেপ্তার হয়। এ ঘটনায় তাদের আত্মীয় রাজিব ও গোপাল চন্দ্র ঘোষের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করা হয়। তারা সন্দেহ করেন, বাদল মিয়া থানা পুলিশকে তথ্য দিয়ে সজিবকে গ্রেপ্তার করিয়েছে। রিপনের আত্মীয় গোপালের নাম প্রকাশ করে। এ ধারণার বশবর্তী হয়ে ২০১৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি আসামিরা বাদল মিয়াকে কর্তব্যস্থল শাহবাগ চত্তর থেকে অপহরণ করে অজ্ঞাত হলুদ ট্যাক্সিতে তুলে মতিঝিল থানাধীন কালভার্ট রোড সংলগ্ন এলাকায় নিয়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করে। লাশ গোপন করতে সিএন্ডটি স্কুল এন্ড কলেজের পাশের রোডে ফেলে যায়।

মামলাটি তদন্ত করে ২০১৫ সালের ৫ এপ্রিল পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক জিয়াউল আলম। এরপর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ৩৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। বাদল মিয়া গণজাগরণ মঞ্চের সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে ছিলেন।

এই রকম আরও টপিক

সম্পর্কিত খবর