পরিচয় গোপন করে কোনো নারীকে বিয়ে করলে সর্বোচ্চ ১০ বছর সাজা ভোগ করতে হবে। শুধু তাই নয়, বিয়ে, পদোন্নতি কিংবা চাকরি পাইয়ে দেওয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে কোনো নারীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে তার সর্বোচ্চ সাজাও হবে ১০ বছরের জেল।
শুক্রবার (১১ আগস্ট) ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদ অধিবেশনে এমন একটি প্রস্তাব আনেন। এর ফলে ‘ভারতীয় দণ্ডবিধি’র নাম পরিবর্তন করে ‘ভারতীয় ন্যায়সংহিতা’ রাখার প্রস্তাবসহ একাধিক নতুন আইন আনার কথা জানান।
অমিত শাহ বিল পেশ করার সময় বলেন, নারীদের অনেক সময় মিথ্যা প্রলোভন দিয়ে বিপদে ফেলা হয়। কিন্তু এতদিন আইন না থাকায় তারা এর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। এখন নতুন প্রস্তাব পাস হলে নারীরা এর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে।
মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের বিষয়ে এতদিন ভারতীয় দণ্ডবিধিতে নির্দিষ্টভাবে কিছু বলা ছিল না।
বিজেপি বলছে, অনেক রাজ্যে মুসলিম পরিচয় গোপন করে হিন্দু নারীদের বিয়ে করা হচ্ছে। পরে তাদের ধর্ম পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়া হয়। নতুন আইনে এই প্রবণতা কমাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
নতুন আইনে দলবদ্ধ ধর্ষণের সাজা কঠোর করা হয়েছে। দলবদ্ধ ধর্ষণ প্রমাণিত হলে অপরাধীদের ২০ বছর বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে। ধর্ষণের শিকার নারীর বয়স ১৮ বছরের কম হলে অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে। একই সুপারিশ করা হয়েছে গণপিটুনিতে কেউ নিহত হলে অপরাধীদের সাজার ক্ষেত্রেও।
বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর স্বঘোষিত গোরক্ষকদের গণপিটুনিতে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু কোনো বিজেপিশাসিত রাজ্যে কোনো ঘটনায় প্রচলিত আইনে এখনো একজনেরও শাস্তি হয়নি।
নতুন এই আইন নিয়ে আইনজীবী শিল্পী জৈন মতামত জানিয়েছেন। ওই আইনজীবীর মতে, নির্দিষ্ট আইন না থাকায় বিয়ে, চাকরি বা পদোন্নতির বিষয়ে ভুয়া প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস করলেও বিষয়টিকে অপরাধ বলে গণ্য করা হয় না। মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নারীর কাছে থেকে সহবাসের অনুমতি আদায় করা হয়, যা স্বেচ্ছায় যৌন সম্পর্ক স্থাপন হতে পারে না।
তিনি মনে করেন, নতুন আইন এই প্রবণতা কমাতে সহায়ক হবে।
সূত্র: এনডিটিভি
News24bd.tv/AA