ঐতিহ্যবাহী নোয়াখালী প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী কমিটি নির্বাচনে বাংলাদেশ বেতারের জেলা প্রতিনিধি বখতিয়ার শিকদার সভাপতি এবং ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশন ও দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার আবু নাছের মঞ্জু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
একইসাথে বাংলাদেশ প্রতিদিন ও নিউজ ২৪ টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি আকবর হোসেন সোহাগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন।
শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না মাহমুদ।
ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী সভাপতি পদে বখতিয়ার শিকদার পেয়েছেন ৩৫ ভোট, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী দৈনিক ইত্তেফাকের জেলা প্রতিনিধি আলমগীর ইউসুফ পেয়েছেন ১৪ ভোট, দৈনিক যুগান্তরের জেলা মনিরুজ্জামান চৌধুরী পেয়েছেন ৫ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক পদে আবু নাছের মঞ্জু পেয়েছেন ২৮ ভোট, তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী দৈনিক কালেরকণ্ঠের সামছুল হাসান মিরণ পেয়েছেন ১৬ ভোট, দৈনিক দিশারী সম্পাদক আকাশ মো. জসিম পেয়েছেন ১০ ভোট এবং ৭১ টেলিভিশনের জেলা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান পেয়েছেন ০ ভোট।
শনিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত জেলা প্রশাসন স্কুলে বিরামহীন ভোট গ্রহণ চলে। এসময় ক্লাবের ৫৬ জন সদস্যের মধ্যে ৫৪ জন সদস্য তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।
ভোটে নির্বাচিত কমিটির অন্যান্যেরা হলেন সিনিয়র সহসভাপতি মাসুদ পারভেজ (৩৫ ভোট), সহ সভাপতি শাহ্ এমরান মো. ওসমান সুজন (৩২) ভোট, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন সোহাগ (২৬ ভোট) এবং এআর আজাদ সোহেল (২৪ ভোট), কোষাধ্যক্ষ মো. আলাউদ্দিন শিবলু (২৪ ভোট), ক্রীড়া ও সমাজসেবা সম্পাদক নাসির উদ্দিন শাহ্ নয়ন (৩০ ভোট), সাহিত্য, সংস্কৃতি প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক গাজী মো. আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া রুবেল (৩০ ভোট), কার্যনির্বাহী সদস্যদের মধ্যে আবদুল মোতালেব (৩০ ভোট), নুর রহমান (২৩ ভোট) ও মো.মাহবুবুর রহমান (২৩) পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজিমুল হায়দার সহ নির্বাহী ম্যাজিস্টেট, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মোল্লা হাবিবুর রাছুল মামুনসহ ঊর্ধ্বতন সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তা ও গণমাধ্যম কর্মীগণ এ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেন।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের রায়ে দীর্ঘদিন স্থগিত থাকা নোয়াখালী প্রেসক্লাব নির্বাচনের বাধা কাটে। এদিন বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামান ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের বেঞ্চ এ রায় দেন।
এ সংক্রান্ত রিটে প্রতিপক্ষের আইনজীবী মো. ওমর ফারুক জানান, দীর্ঘদিন নোয়াখালী প্রেসক্লাবের নির্বাচন বন্ধ থাকার মধ্যে স্থানীয় সাংবাদিক ও প্রশাসন ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারি একটি এডহক কমিটি গঠন করে নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়। পরে এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়।
এই রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর হাই কোর্ট বেঞ্চ ২০১৮ সালের ১৪ অগাস্ট নোয়াখালী জেলা প্রশাসককে শিগগির নির্বাচন করার নির্দেশ দেন। এরপর জেলা প্রশাসন ভোটার তালিকা তৈরি করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন যাতে ভোটের তারিখ দেওয়া হয় ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর।
কিন্তু ১৮ ডিসেম্বর আরও একজন আরেকটি রিট করেন, যেখানে তিনি নিজেকে নোয়াখালী প্রেস ক্লাবের সভাপতি দাবি করেন। উল্লেখ করেন, তার কার্যকালের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ আছে। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত নির্বাচন স্থগিত ও রুল দেয়।
ওই রিটে নোয়াখালীর মূলধারার কোনো সাংবাদিককে পক্ষ করা হয়নি বলে জানিয়ে আইনজীবী ওমর ফারুক জানান, পরে মূলধারার ৪২ জন স্থানীয় সাংবাদিক এই মামলায় পক্ষভুক্ত হয়ে রুল খারিজের আবেদন করেন। রুলের শুনানি শেষে রায় দেন আদালত। এই মামলার সেই ৪২ জন সাংবাদিকের তদবিরকারী ছিলেন আবু নাছের মঞ্জু।