শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলায় প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আপন ভাগনের গলা কেটে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন হত্যায় জড়িত তিন ব্যক্তি। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
শনিবার বিকেলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নালিতাবাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) দিদারুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
এর আগে গত শুক্রবার সকালে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার লিলুখালের পাড় থেকে পুলিশ যোগানিয়া ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের আপন ভাগনে শাহ কামালের (৩৮) গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে।
পরে শুক্রবার রাতেই নিহত শাহ কামালের মা অছিরন বেগম বাদী হয়ে নালিতাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। রাতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে নিহতের মামাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে।গ্রেপ্তাররা হলেন- নিহতের মামা হাবিবুর রহমান হবি (৫৫)৷ তাঁর স্ত্রী আমেলা খাতুন ঝর্না (৪৫), তাদের ছেলে সারোয়ার জাহান শান্ত (২৬), হাবিবুরের দুই ভাতিজা মোস্তফা (৩০) ও রাহুল মিয়া (২২) এবং তার ভাই হারেজ আলী (৫০)।
এদিকে শনিবার দুপুরে হাবিবুর রহমান তার স্ত্রী ও ছেলেসহ ৬ জনকে আদালতে পাঠালে ৩ আসামি হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
পুলিশ জানায়, ২০১৮ সালে উপজেলার ভাইটকামারী গ্রামের ফজল মিয়ার কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানের ভাগনে শাহ কামাল ৫৫ শতক জমি বর্গা নেয়। পরে ২০১৯ সালে হাবিবুর রহমানের সঙ্গে ফজল মিয়ার পরিবারের ঝগড়া বাঁধে। তখন হাবিবুর রহমানের গুলিতে ফজল মিয়ার ছেলে ইদ্রিস আলীর হত্যার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় হাবিবুর, তার স্ত্রী-সন্তান ও ভাতিজাসহ কয়েজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়। তাঁদের সবাই এখন জামিনে রয়েছেন।
এদিকে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফজল মিয়া সেই জমি বুঝিয়ে দেননি শাহ কামালকে। ৭০ হাজার টাকাও দেননি। এ নিয়ে জামিনে বের হওয়ার পর থেকেই শাহ কামালের বর্গা নেওয়া জমির টাকা উদ্ধারে তোড়জোড় করেন হাবিবুর ও তাঁর সহযোগীরা। পরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আপন ভাগনেকে হত্যার পরিকল্পনা করেন হাবিবুর। পরে হাবিবুর, তার স্ত্রী ঝর্না ও হাবিবুরের ভাই হারেজের পরিকল্পনা অনুযায়ী হাবিবুরের ছেলে শান্ত ও তার দুই ভাতিজা মস্তু ও রাহুল গত বৃহস্পতিবার রাতে শাহ কামালকে ঘরে ডেকে আনে। পরে ছুরি দিয়ে শাহ কামালের গলা কেটে হত্যা নিশ্চিত করে। পরে মরদেহ বস্তায় ভরে পার্শ্ববর্তী লিলুখালের পাড়ে ফেলে আসেন।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার দিদারুল ইসলাম বলেন, আসামিদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি, রক্তমাখা ন্যাকড়া, হ্যান্ড গ্লাভস ও রক্তমাখা এক জোড়া জুতা উদ্ধার করা হয়। তিনজন আসামি হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এছাড়াও ছয়জন আসামিকেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
news24bd.tv/তৌহিদ