বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সামরিক শক্তিতে কে এগিয়ে?

সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সামরিক শক্তিতে কে এগিয়ে?

অনলাইন ডেস্ক

বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মিয়ানমার জান্তার প্রবেশে উদ্বেগ বাড়ছে বৈশ্বিক মহলে। যদিও বাংলাদেশ বরাবরই বলে আসছে কারও সাথে বৈরিতা নয়, সবার সাথে বন্ধুত্ব। তবুও সবার জানার আগ্রহ যদি বাংলাদেশ-মিয়ানমার কখনও বিরোধে জড়িয়ে পড়ে তাহলে সামরিক শক্তিতে কে এগিয়ে থাকবে?

সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার প্রতিবছর একটি তালিকা প্রকাশ করে থাকে। এতে তারা কোন দেশের সামরিক শক্তি কতটা তা প্রকাশ করে।

এতে দেখা গেছে, সেনা ও অন্যান্য কিছু বিষয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে থাকলেও সামরিক যানের দিক থেকে কিছুটা এগিয়ে মিয়ানমার।

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্স ২০২৪ অনুযায়ী, বিশ্বে সামরিক শক্তিতে মিয়ানমারের অবস্থান যেখানে ৩৫ তম, সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান ৩৭ তম। বাংলাদেশের যেখানে রয়েছে প্রায় ১ লাখ ৬৩ হাজার সৈন্য সেখানে মিয়ানমারের রয়েছে দেড় লাখের কিছু বেশি।

একইসাথে আধা-সামরিক বাহিনীতেও বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে।

দেশে প্রায় ৬৮ লাখের বিশাল এক আধা-সামরিক বাহিনী রয়েছে। অন্যদিকে, মিয়ানমারের আধা-সামরিক বাহিনীতে সদস্য রয়েছে মাত্র ৫৫ হাজার। প্রতিবেদন অনুযায়ী, মিয়ানমারের ২০ হাজার রিজার্ভ ফোর্স থাকলেও বাংলাদেশের এমন কোনো ফোর্স নেই।

প্রতিরক্ষা বাজেটেও এগিয়ে বাংলাদেশ। বছরে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষাখাতে ব্যয় হয় ৬৯৯ কোটি মার্কিন ডলার। যেখানে মিয়ানমারের বাৎসরিক প্রতিরক্ষা বাজেট মাত্র ২৭০ কোটি মার্কিন ডলার।

বাংলাদেশের চেয়ে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কাছে বেশি কামান রয়েছে

তবে যুদ্ধবিমানের সংখ্যায় মিয়ানমারের তুলনায় পিছিয়ে বাংলাদেশ। দেশের বিমান বাহিনীর কাছে ২১৬টি বিমান রয়েছে, যেখানে যুদ্ধ বিমান রয়েছে ৪৪টি। অন্যদিকে, মিয়ানমারের বিমান বাহিনীর কাছে মোট বিমান রয়েছে ২৯৩টি, যার এর মধ্যে যুদ্ধবিমান ৫৮টি।

বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর কাছে বিশেষ যুদ্ধবিমান রয়েছে চারটি। অন্যদিকে, মিয়ানমারের কাছে এ ধরনের যুদ্ধবিমান রয়েছে পাঁচটি।

এছাড়া মিয়ানমারের বিমান বাহিনীর কাছে ৮০টি হেলিকপ্টার রয়েছে। সেখানে বাংলাদেশের কাছে হেলিকপ্টার রয়েছে ৭৩টি। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের কোনো অ্যাটাক হেলিকপ্টার না থাকলেও মিয়ানমারের রয়েছে ৯টি।

যুদ্ধবিমানের সংখ্যায় মিয়ানমারের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ

ট্যাঙ্কের সংখ্যার দিক থেকেও এগিয়ে মিয়ানমার। দেশটির সামরিক বাহিনীর কাছে বর্তমানে ৭০৫টি ট্যাঙ্ক। অন্যদিকে, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর কাছে রয়েছে ৩২০টি ট্যাঙ্ক।

এদিকে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর কাছে সব মিলিয়ে ১৩ হাজারেরও বেশি সামরিক যান রয়েছে। যেখানে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কাছে রয়েছে আট হাজারের কিছু বেশি সামরিক যান।

কামানের সংখ্যার দিক মিয়ানমার বেশ এগিয়ে। দেশটির সামরিক বাহিনীর কাছে দুই হাজারেরও বেশি কামান আছে, যার মধ্যে ২১৫টি স্বয়ংক্রিয় কামান রয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর কাছে সব মিলিয়ে ৪৬৪টি কামান রয়েছে বলে জানিয়েছে গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার। এর মধ্যে স্বয়ংক্রিয় কামান রয়েছে মাত্র ২৭টি।

এছাড়া মোবাইল রকেট প্রজেক্টরের সংখ্যাতেও মিয়ানমারের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিবেদন অনুযায়ী মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কাছে ৫৮০টিরও বেশি রকেট প্রজেক্টর রয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর কাছে মোবাইল রকেট প্রজেক্টর রয়েছে মাত্র ৭১টি।

বাংলাদেশের চেয়ে নৌ-শক্তিতে এগিয়ে মিয়ানমার। দেশটির নৌ-বাহিনীর কাছে বিভিন্ন ধরনের মোট ৩৬২টি যুদ্ধজাহাজ রয়েছে। আর বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর কাছে সব মিলিয়ে যুদ্ধজাহাজ রয়েছ ১৯০টি।

বাংলাদেশের যুদ্ধজাহাজ 'ওমর ফারুক'

তবে ফ্রিগেটকর্ভেটের মতো যুদ্ধজাহাজের সংখ্যায় মিয়ানমারের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। মিয়ানমারের ছয়টি ফ্রিগেট থাকলেও বাংলাদেশের রয়েছে সাতটি। মিয়ানমারের তিনটি কর্ভেট যুদ্ধজাহাজের বিপরীতে বাংলাদেশের রয়েছে ছয়টি।

তবে সাবমেরিনের সংখ্যায় আবার মিয়ানমার এগিয়ে আছে। মিয়ানমারের নৌবাহিনীর কাছে এখন পর্যন্ত তিনটি সাবমেরিন রয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর কাছে সাবমেরিন রয়েছে দু’টি।  সূত্র: বিবিসি

news24bd.tv/FA

এই রকম আরও টপিক