ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক উগ্র জাতীয়তাবাদী চিন্তার প্রতিচ্ছবি: শেখ পরশ

খাদ্য বিতরণ করছেন শেখ ফজলে শামস্ পরশ

ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক উগ্র জাতীয়তাবাদী চিন্তার প্রতিচ্ছবি: শেখ পরশ

অনলাইন ডেস্ক

ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক উগ্র জাতীয়তাবাদী চিন্তার প্রতিচ্ছবি বলে মন্তব্য করেছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর দনিয়া কলেজ মাঠে এক হাজার গরিব ও অসহায় মানুষের মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহারের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।  

প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরশ বলেন, বঙ্গবন্ধু একমাত্র নেতা, যিনি সারা বিশ্বে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন বাঙালি জাতির জন্য একমাত্র জাতিরাষ্ট্র- প্রাণপ্রিয় বাংলাদেশ। তাই তিনি একদিকে যেমন বিশ্বের সমগ্র বাঙালি জনগোষ্ঠীর প্রাণের নেতা, অন্যদিকে শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের নেতা, বিশ্ব মানবতার নেতা।

বঙ্গবন্ধু শুধু একটি স্বাধীন দেশই দিয়ে যাননি, বাংলাদেশের গরিব-দুখীসহ সব নাগরিক যাতে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে বাঁচতে পারে, সেজন্য একটা রূপকল্পও তৈরি করে দিয়ে গেছেন। সোনার বাংলা আদর্শিক ও মৌলিক চরিত্র হলো স্বনির্ভর অর্থনীতি, শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা ও ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র গড়ে তোলা। শোষণমুক্ত রাষ্ট্র গড়ে তুলতে হলে মুজিব আদর্শকে ধারণ করে প্রত্যেক নেতাকর্মীকে অবশ্যই মানবিক হতে হবে। ইতিহাসের কী নিদারুণ নিটোল পরিণতি-একজন পিতা হাজারো অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করে বিশ্বের বুকে সর্বজনীন আদর্শিক একটি স্বাধীন দেশকে অর্থনীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগসহ সব দিক থেকে বিশ্বের বুকে সফল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
পিতা ও কন্যার এমন সাফল্য, সুযোগ্য নেতৃত্ব বিশ্বের ইতিহাসে সত্যিই বিরল। ’

তিনি বলেন, ‘আজকে বঙ্গবন্ধুকন্যা এ দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। তার একটা উৎকর্ষ উদাহরণ। সর্বজনীন পেনশন প্ল্যান এই স্কিমের আওতায় সরকারি চাকরীজীবী ব্যতীত দেশের সকল নাগরিক পেনশন সুবিধার অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে। কারো বয়স ১৮ বছরের বেশি হলেই এখন এটিতে নিবন্ধন করতে পারবেন। যাদের চাকরি নেই, তাদের জন্য এই ব্যবস্থা। প্রায় ১০ কোটি মানুষের কথা বিবেচনায় রেখে চালু করা হয়েছে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা (স্কিম)।  

তিনি বলেন, ১৫ বছর পেছনের দিকে তাকান- দেখতে পাবেন বিএনপির সময় কী বিপরীত এবং দুর্বিষহ অবস্থা ছিল। আপনাদের আয় কত ছিল? শিক্ষার সুযোগ কী ছিল? চিকিৎসার ব্যবস্থা কী ছিল? আপনাদের বাসস্থানের চিন্তা কে করে যাচ্ছেন? জননেত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য অংশগ্রহণমূলক এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নির্বাচন। সকলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার অধিকার আছে; কাউকে বাধা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। ভিন্ন প্রার্থীর অংশগ্রহণ ছাড়া-গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে না। যুবলীগ কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা চাই না। বিশৃঙ্খলা এবং হট্টগোল সম্পূর্ণরূপে পরিহার করতে হবে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে হবে এবং সংঘাত সম্পূর্ণরূপে পরিহার করতে হবে। যুবলীগের কেউ যদি নির্বাচন সংক্রান্ত কোনো প্রকার সংঘাতে জড়িত হয় তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

তিনি বলেন, আজকে মুক্তিযুদ্ধের সময় যেই ভারত আমাদের শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে, আমাদের অস্ত্র দিয়ে, প্রশিক্ষণ দিয়ে আমাদের সাহায্য করেছে বিএনপি-জামাত তাদের এখন বিরুদ্ধাচারণ করছে। বিদেশি শক্তির উমকানি এবং প্রতিশ্রুতিতে এই অবস্থান নিয়ে থাকলেও এই আন্দোলনের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। কারণ, দেশের একটি বিরাট জনগোষ্ঠীকে ভারতীয় পণ্য বিলাসিতার জন্য নয়, বরং বেঁচে থাকার জন্য ব্যবহার করতে হয়। ভারতীয় পণ্য বর্জন আন্দোলন উগ্র জাতীয়তাবাদী প্রতিক্রিয়াশীল চিন্তা-ভাবনারই প্রতিচ্ছবি। তাই আমি বলি নতুন প্রজন্মকে এ সকল অপপ্রচার ও দুরভিসন্ধি সম্পন্ন আন্দোলনকে প্রতিহত করতে হবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাইন উদ্দিন রানা, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ। সঞ্চালনা করেন এইচ এম রেজাউল করিম রেজা, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ।

news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক