আমেরিকান ইসরায়েলী হামলার বিরুদ্ধে এই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছে আমেরিকান হিন্দু, আমেরিকান ইহুদি, আমেরিকান কৃষ্ণাঙ্গ, খৃস্টান ( সবচেয়ে বেশি, সে তুলনায় মুসলমান অনেক কম), আমেরিকান চাইনিজ এবং আমেরিকান হেন কোনও বর্ণ নেই যারা এই আন্দোলনে নেই। তারপরও বাংলার মূলধারার গন মাধ্যম বলে যে মাধ্যম তাদের এমন নিঃস্পৃহ উদাসীনতার কারণ কী ? আমেরিকান মুসলিম সমাজও আলাদা করে কিছু বলছে না। কেবল ওখানকার অর্থাৎ প্যালেস্টাইনের বেসামরিক নাগরিক হত্যাকাণ্ডের বিরোধিতা, কোন ভাবেই সে বিরোধিতা "মুসলিম-উম্মা-অনুভূতি" বলে নয়।
অতএবঃ বাংলার মূলধারার গণমাধ্যম যেহেতু বুঝতে পারে যে আমেরিকায় আন্দোলনরত এই শিক্ষার্থীদের আগ্রহটা মুসলমান বা প্যালেস্টাইনদের প্রতি নয়, কিংবা কোনও ঘৃণাও নয় সে ইহুদি ঘৃণা বা ইসরাইল ঘৃণা নয়; বরং তাদের আগ্রহটা আমেরিকান পররাষ্ট্র নীতি বা তার অবস্থান সম্পর্কে ।
সুতরাং; অনুভূতি খোঁজার পর নিঃস্পৃহ থাকা বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যম যদি আমেরিকান এই শিক্ষার্থী সমাজের প্যালেস্টাইন সমর্থনকে ধর্মীয় সম্পর্কের সংগে যুক্ত করে সেটা ভুলই করবে।
আরেকটা প্রশ্ন, আমেরিকান শিক্ষার্থীরা প্যালেস্টাইনের পক্ষে অবিরাম এবং নিরলস আন্দোলন করে যাচ্ছে তার কী যথার্থ প্রচার বাংলাদেশের মূলধারার গণমাধ্যম দিচ্ছে ? অনেকের মতে "না একেবারেই না", বরং পারলে যেন তারা এমন সংবাদ বাংলার জনগণকে বেমালুম ভুলে যেতে দিতে চায়। কখনো শেষের পাতার, শেষের কলামে্ শেষে- ইঞ্চি খানেক থাকে, সেও যদি ভাগ্য ভাল হয় থাকে।
মূলধারার গণমাধ্যমের এহেন মহান ভূমিকার পেছনের রহস্য বা কারণ কি হতে পারে, যদিও এমন প্রশ্নও নাকি না করা কর্তব্যের মধ্যে পরে। যদিও গণমাধ্যমের এমন আচরণের অন্তর্নিহিত মাজেজা সাধারণের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়, কিন্তু সবই তো আর এমনিতেই ঘটে না, বরং এই সব কিছুরই একটা ব্যাখ্যা থাকে পেছনে।
গন মাধ্যমের এই ভূমিকার কারণ কী এই যে ? যেহেতু তারা বুঝতে পারে যে আমেরিকান শিক্ষার্থীদের এই যে প্যালেস্টাইনের পক্ষে অবস্থান তার সঙ্গে ধর্ম প্রীতির কোন সম্পর্ক নেই অর্থাৎ এমন নয় যে মুসলমান বলেই আমেরিকান শিক্ষার্থীরা পক্ষ করছে। আবার এমনও নয় যে ইহুদিদের বিরুদ্ধে বলে তারা প্যালেস্টাইনের পক্ষ করছে। এই বাস্তবতাটিই হয়ত গনমাধ্যাম কর্তৃপক্ষের ধর্মানুভূতির উত্তেজনা লেজটির যে মানদণ্ড; সেই মানদণ্ডকে ঠিক তেমন করে দোলা দিতে ব্যার্থ হচ্ছে আমেরিকান প্যালেস্টাইন সমর্থনের শিক্ষার্থী সমাজ!
লেখক: নিউইয়র্কের শিক্ষাবিভাগে কর্মরত। যুক্তরাষ্ট্রের সিবিএস টেলিভিশনের সাংবাদিক।
news24bd.tv/ডিডি