সুন্দরবনে তাণ্ডব চালাচ্ছে ‘রিমাল’ 

ঘূর্ণিঝড় (ফাইল ছবি)

সুন্দরবনে তাণ্ডব চালাচ্ছে ‘রিমাল’ 

অনলাইন ডেস্ক

ভারত ও বাংলাদেশের সুন্দরবন এলাকা দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করেছে ঘূর্ণিঝড় ‌‘রিমাল’। এখন সুন্দরবন এলাকায় ঝড়টি তাণ্ডব চালাচ্ছে। ঝড়টি সাতক্ষীরা, খুলনা, যশোর, মেহরপুরের ওপর দিয়ে উত্তরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সুন্দরবনের করমজল এলাকা প্রায় দুই ফুট পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

প্রবল দমকা বাতাস বইছে। তবে বৃষ্টির পরিমাণ কম।

সুন্দরবন বন বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানান, বাতাসে গতি খুব বেশি। নদীতে পানি বাড়ছে।

বিশেষত: সাগর উপকূলের দুবলা, তিনকোণা দ্বীপ এলাকায় তিন থেকে চার ফুট উচ্চতায় পানি উঠেছে। এখন ভাটা চলমান রয়েছে। রাত ১১টার দিকে আবার জোয়ার আসবে। ওই সময়ে আরো পানি বাড়তে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র মোংলার দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চল দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম শুরু করেছে।

ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র আরো উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে আগামী ১-২ ঘণ্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম করবে। সম্পূর্ণ ঘূর্ণিঝড়টি তার পরবর্তী ৫-৭ ঘণ্টার মধ্যে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করতে পারে।  প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রর ৬৪ কিমি এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিমি। যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

এর আগে নদীবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও উপকূলীয় ১৬ জেলায় বিপৎসংকেত জারি করে আবহাওয়া অফিস। রোববার (২৬ মে) দুপুর ২টার বিশেষ ওই বিজ্ঞপ্তিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ আরো উত্তর দিকে অগ্রসর হয়েছে। এটি আজ দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৩১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২২০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরো উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। এর কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।

পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরসহ উপকুলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা ও পটুয়াখালীকে ১০ নম্বর মহাবিপৎসংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরসহ উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও চাঁদপুর এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চরগুলো ৯ নম্বর মহাবিপৎসংকেতের আওতায় রয়েছে। এ ছাড়া খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরগুলোকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উপকূলের ১৬ জেলা এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চরগুলো স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুট ফুট বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে দেশের সব বিভাগেই দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (৮৯ মিলিমিটার বা বেশি) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ী অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে।

news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক