গৃহকর্মীর রহস্যজনক মৃত্যু ঘিরে বনশ্রীতে উত্তেজনা,সংঘর্ষ

রাজধানীর বনশ্রী এলাকার এক বাসায় গৃহকর্মীর রহস্যজনক মৃত্যুকে ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এলাকাবাসী গৃহকর্মীর মৃত্যুকে 'হত্যা' দাবি করে ওই বাসায় হামলা ও ভাঙচুর চালিয়েছে। এছাড়া দোষীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে তারা রাস্তা অবরোধ ও যানবাহনেও ভাঙচুর চালিয়েছেন। বিকাল ৫টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পুলিশের সাথে এলাকাবাসীর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলছে। পুলিশ বাসার মালিক ও দারোয়ানকে আটক করেছে।

জানা যায়, আজ সকালে ‘বি’ ব্লকের ৪ নম্বর রোডের এক বাসার নীচ তলায় লাইলী (২৫) নামে এক গৃহকর্মীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়। এরপর দুপুর ২টার দিকে এলাকাবাসী ওই বাসা ঘেরাও করে ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে  সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) বাচ্চু মিয়া জানান, সকালে ওই গৃহকর্মীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। লাইলীর লাশ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

জানা গেছে, বনশ্রীর পাশে হিন্দুপাড়া বস্তিতে দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে থাকতেন লাইলী। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়িয়া উপজেলার আজুয়াটালী গ্রামে তাঁর বাড়ি। লাইলীর স্বামী নজরুল ইসলাম ভারতের কারাগারে বন্দী।

সকালে হাসপাতালে বাড়ির গৃহকর্তা মইনুদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, তিনি পরিবার নিয়ে এই বাসায় থাকেন। লাইলী তাঁর ফ্ল্যাটে প্রতিদিনের মতো আজ সকালে কাজ করতে আসেন। ফ্ল্যাটে ঢুকেই একটি কক্ষের ভেতর গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন। এ সময় ডাকাডাকি করলেও লাইলী দরজা খুলছিলেন না। তখন বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক টিপুকে জানানো হয়। একপর্যায়ে দরজার ছিটকিনি ভেঙে কক্ষটির ভেতরে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় লাইলীকে পাওয়া যায়। সেখান থেকে উদ্ধার করে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়।

এদিকে লাইলীকে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন লাইলীর জা শাহনাজ। খবর পেয়ে উত্তেজিত জনতা ছুটে এসে বিক্ষোভ, ভাঙচুর শুরু করে। পরে রামপুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইনুল ইসলাম খান মাইকিং করে সবাইকে সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দেন। বলেন, বাসার মালিক ও দারোয়ানকে আটক করে পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।