৬১ কেজি স্বর্ণ জব্দের মামলায় আ. লীগ নেতাসহ খালাস পেলেন ১১ জন 

৬১ কেজি স্বর্ণ চোরাচালানের মামলায় সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতা রিয়াজ উদ্দিনসহ ১১ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত। তবে সোনা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত  এস কে মোহাম্মদ আলী হোসেন নামে এক আসামিকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে। অর্থদণ্ড আনাদায়ে তাকে আরও ৩ মাস কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।  সোমবার ঢাকার ১৩ তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ কুদরত এ এলাহী এ রায় ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রায়ের বিষয়টি জানা গেছে।

খালাস পাওয়া অপর আসামিরা হলেন, সিভিল এভিয়েশনের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম, হাজী মুজিবর রহমান, সালেহ আহমেদ, আবু আহমেদ, নবী নেওয়াজ খান, ওমর ফারুক, আলী হোসেন, উজ্জ্বল ঘোষ ও পঙ্কজ সাহা।  

এ সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর শহিদ উদ্দিন বলেন, ‘কোনো মামলায় লঘুদণ্ড ও গুরুদণ্ড দেয়ার এখতিয়ার আদালতের। আর মামলায় যারা খালাস পেয়েছেন তাদের সম্পর্কে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চার্জশিটে তাদের দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির সহযোগী বলেছেন। কিন্তু সহযোগীতার কোনো ডকুমেন্ট ছিলো না। সাক্ষ্য দেয়ার সময়ও সে সম্পর্কে কোনো তথ্য উপাত্ত আসে নাই। তাই হয়তো আদালত তাদের খালাস দিয়েছেন। আমরা বিস্তারিত রায় পেলে পর্যালোচনা করে দেখবো যে আপিল করা যায় কি না। ’  

২০১৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর পুরানা পল্টনের ২৯/১ নম্বর বাসার ছয়তলার ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। এ সময় আসামি মোহাম্মাদ আলী হোসেনের কাছ থেকে ৬১ কেজি ৫৩৮ গ্রাম ওজনের ৫২৮টি স্বর্ণের বার ও বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। বালিশের কভার, সোফার কুশনের ভেতর, জাজিম-তোশকের নিচে, আলমারি ও বাসার ফলস (কৃত্রিম) ছাদের ওপর পাওয়া যায় পাঁচ বস্তা দেশি-বিদেশি মুদ্রা ও সোনার বার। এর আনুমানিক মূল্য ৩০ কোটি টাকার বেশি। ব্যাংকে রাখা নিরাপদ মনে না করায় আসামি মোহাম্মদ আলী সাড়ে চার কোটি টাকা ও ১৫ লাখ সৌদি মুদ্রা বাসায় রাখেন। এ ঘটনায় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় বলা হয়, সোনা চোরাচালানে এস কে মোহাম্মদ আলীসহ সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ জড়িত। এ মামলায় উত্তরার একটি বাসা থেকে ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন গ্রেপ্তার হন। পরে তিনি জামিন পায়।

২০১৬ সালের ২ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (ডিবি) গোলাম সাকলায়েন ১২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

চার্জশিটে বলা হয়, আসামি এস কে মোহাম্মদ আলীসহ অন্য আসামিরা সংঘবদ্ধ চোরাচালান চক্রের সক্রিয় সদস্য। পরস্পরের যোগসাজশে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া চোরাচালানের মাধ্যমে সোনার বার এনে বাসায় জমা রাখতেন। পরে আসামি উজ্জ্বল, বাবু ও পংকজদের সহায়তায় সোনা বিক্রি করে আসছিলেন। মোহাম্মদ আলী হুন্ডির আড়ালে মুদ্রা ও সোনা চোরাচালান ব্যবসা করে আসছিলেন।

news24bd.tv/aa