মালদ্বীপ-পাকিস্তান মহড়া, আতঙ্কে দিল্লি

মালদ্বীপ ও পাকিস্তানের নৌ-মহড়া নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কে আছে ভারত। ভারত মহাসাগরে অবস্থিত দেশ মালদ্বীপের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে (ইইজেড) এ মহড়া হয়।

আর আগে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান হিসেবে বিরল সফরে মালদ্বীপ যান জেনারেল অসিম কমর জাভেদ বাজওয়া। তার দুই পূর্বসূরিদের কেউ মালদ্বীপ সফর করেননি। তখনই এই মহড়ার ব্যাপারে মালের সঙ্গে ইসলামাবাদের কথা হয়।

মালদ্বীপে ৪ ফেব্রুয়ারি ৪৫ দিনের স্থায়ী জরুরি অবস্থার পর তার সফরটিই ছিল সর্বোচ্চ মর্যাদার কোনো বিদেশীর সফর। সফরে তিনি মালদ্বীপের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আদম শরিফ উমার, প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন আবদুল গাইয়ুমের সাথেও সাক্ষাত করেন।

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট দপ্তর থেকে জারি করা ইস্তেহারে তাদের মধ্যে ১ এপ্রিলের বৈঠকে আলোচ্যসূচি সম্পর্কে কিছু বলা হয়নি। এতে উল্লেখ করা হয়, ইয়ামিন আশা প্রকাশ করেছেন, মালদ্বীপ ও পাকিস্তান অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করবে। দুই দেশের বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা আরো ঘনিষ্ঠ করবে।

জবাবে জেনারেল বাজওয়া বলেন, ভ্রাতৃপ্রতীম দুই দেশের উচিত তাদের মিত্রতা আরো জোরদার করা। তবে পাকিস্তানি জেনারেলের সঙ্গে মালদ্বীপের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বৈঠকেই সবচেয়ে উদ্বিগ্ন হয়েছে দিল্লি।

মালদ্বীপের প্রতিরক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মালদ্বীপের প্রতিরক্ষামন্ত্রী আদম শরিফ উমার ও পাকিস্তানি সামরিক প্রধানের বৈঠককালে তারা সামরিক প্রশিক্ষণ, চিকিৎসা সহায়তা ও মালদ্বীপের বিশেষ অর্থনৈতিক জোনে যৌথভাবে টহলদানের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

ইইজেডে মালদ্বীপ ও পাকিস্তানি নৌবাহিনীর যৌথ টহল নিয়ে আলোচনা নিশ্চিতভাবেই ভারতের জন্য চিন্তার কারণ হবে। মালদ্বীপের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা মূলত প্রশিক্ষণ, পোর্ট ভিজিট ও মাঝে মাঝে বহুপক্ষীয় মহড়াতেই সীমিত।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে, মালদ্বীপের ভূখণ্ডে যৌথ টহল নিয়ে আলোচনার বিষয়টি যাচাই করতে চাইবে ভারত।

এদিকে এক কর্মকর্তা জানান, মালদ্বীপ ও পাকিস্তানি নৌবাহিনীর মহড়ার খবর সত্য হলে তা নিশ্চিতভাবেই ভারতের জন্য হবে বিপদসঙ্কেত।

এখন পর্যন্ত কেবল ভারতই মালদ্বীপের সাথে ইইজেডে যৌথ টহল দিয়ে থাকে। ইইজেডের আয়তন প্রায় ৯ লাখ বর্গকিলোমিটার। এলাকাটির ওপর নজরদারির জন্য ভারত তার নৌ ও বিমান সম্পদ ব্যবহার করে। মালদ্বীপের ইইজেডের একটি বড় অংশই ভারতের আঞ্চলিক পানিসীমার কাছে।

উল্লেখ্য, ২০১৬র’ ভারত-মালদ্বীপ প্রতিরক্ষা সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, ভারত প্রত্যক্ষভাবে উপকূলীয় এলাকায় নজরদারি চালাবে। মালদ্বীপ ছাড়াও মরিশাস, শ্যাসেলসের মতো ভারত মহাসাগরীয় দেশগুলোতেও নজরদারি কাজে সহায়তা দিয়ে থাকে ভারত।

পাকিস্তান সেনাপ্রধানের মালদ্বীপ সফরকে শুরুতেই ‘রাজনৈতিক ইঙ্গিত’ হিসেবে মনে করেছিল ভারত। তাছাড়া জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের পরপরই এ সফরটি হওয়ায় এর গুরুত্ব বেড়ে যায়। জরুরি অবস্থার সমালোচনা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও আরো কয়েকটি পাশ্চাত্যের দেশ।

নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)