লাশ গ্রহণ করলেন না বাবা-মা

সংগৃহীত ছবি

লাশ গ্রহণ করলেন না বাবা-মা

অনলাইন ডেস্ক

ট্রেনে কাটা পড়া ঢাকা বিজ্ঞান কলেজের মেধাবী ছাত্র সাঈদের লাশ গ্রহণ করেননি তারা বাবা। পরে সহপাঠীদের সহযোগিতায় বাড্ডা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।  শুক্রবার (১৩ জানুয়ারি) বাদ মাগরিব বিজ্ঞান কলেজ মাঠে জানাজার পর রাতেই বাড্ডা কবরস্থানে দাফন করা হয়।

জানা যায়, ধর্মান্তরিত হওয়ায় কৈশোরে ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন সাঈদ আবদুল্লাহ (২২)।

পরে কক্সবাজারের চকরিয়া গ্রামার স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে ঢাকায় একটি কলেজে ভর্তি হন তিনি। ছাত্র পড়িয়ে নিজের থাকা-খাওয়া এবং পড়াশোনার খরচ চালাতেন সাঈদ। চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষায় উতীর্ণ হন। অপেক্ষায় ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার।
কিন্তু ট্রেনে কাটা পড়ে অবসান হলো তার জীবন সংগ্রামের।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকার তেজগাঁওয়ে রেললাইন পার হওয়ার সময় দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়। কমলাপুর থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনে কাটা পড়ে সাঈদ ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।

আরও পড়ুন: যেসব জেলায় শৈত্যপ্রবাহ বইবে

পশ্চিম কোনাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সইফুল হক বলেন, সাঈদ আবদুল্লাহর বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের হেতালিয়া পাড়ায়। তার নাম জুয়েল শীল। বাবার নাম বিধু কুমার শীল। সে দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। বিষয়টি জানতে পেরে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেন পরিবারের স্বজনরা এবং সম্পর্ক চ্ছিন্ন করেন। সাঈদ এসএসসি পাস করে ঢাকায় গিয়ে তেজগাঁও সরকারি বিজ্ঞান কলেজে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়।

সাঈদের মৃত্যুর খবর শুনে তার বাবা-মাকে লাশ গ্রহণের জন্য অনুরোধ করতে এলাকাবাসীর পক্ষে আমরা গিয়েছিলাম। কিন্তু ওর বাবা তার লাশ গ্রহণ করবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন।

সাঈদের সহপাঠী আবদুল্লাহ নোমান বলেন, সাঈদ অনেক কষ্ট করে চলত। কিন্তু কারও কাছে কিছু খুলে বলত না। পরিবার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করলেও সাঈদ তার মায়ের সঙ্গে গোপনে দেখা করত।

তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপুর্ব হাসান বলেন, সাঈদের লাশ তার বাবা গ্রহণ করবেন না বিষয়টি চকরিয়া থানার মাধ্যমে নিশ্চিত হই। পরে তারা সহপাঠীদের জিম্মায় হস্তান্তর করি।  

 news24bd.tv/হারুন