গুলিস্তানে বিস্ফোরণ: দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি

সংগৃহীত ছবি

গুলিস্তানে বিস্ফোরণ: দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি

অনলাইন ডেস্ক

রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারে ক্যাফে কুইন ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনায় আরও শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। তবে নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় উদ্ধার অভিযান রাতের মতো স্থগিত করেছে ফায়ার সার্ভিস।

রাত পৌনে ১১টার দিকে উদ্ধার অভিযান স্থগিতের কথা জানান ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগীয় উপপরিচালক দিনমনি শর্মা। তিনি বলেন, ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় ভবনের ভূগর্ভে উদ্ধারকাজ চালানো সম্ভব নয়। তাই উদ্ধারকাজ স্থগিত করা হয়েছে।
আজ বুধবার সকালে সেনাবাহিনী আসবে, তারপর উদ্ধার কাজ শুরু হবে।

আরও পড়ুন... ভবনের বেজমেন্টে বিস্ফোরণ, বিস্ফোরকের আলামত মেলেনি: সেনাবাহিনী

মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে এলাকাটি। বিস্ফোরণস্থলে কাজ করেছে ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট ও ৫টি অ্যাম্বুল্যান্স।

জানা গেছে, পাশাপাশি দুটি বহুতল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একটি ভবন সাততলা এবং আরেকটি ভবন পাঁচতলা। এর মধ্যে সাততলা ভবনের বেসমেন্ট, প্রথম ও দ্বিতীয় তলা বিধ্বস্ত হয়েছে। আর পাঁচতলা ভবনের নিচতলাও বিধ্বস্ত হয়েছে। এই ভবনের দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংকের কার্যালয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকট শব্দে বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে চারদিক ধোঁয়ায় ছেয়ে যায়। বিস্ফোরণে ইট-পলেস্তারা, কাঠের টুকরো বহু দূর পর্যন্ত ছিটকে পড়ে। এতে অনেকে আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর।

আরও পড়ুন...রাজধানীতে দুই বিস্ফোরণের ঘটনা ‌নিয়ে যা বললেন ফখরুল

ফায়ার সার্ভিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার বলেন, খবর পেয়ে প্রাথমিকভাবে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করে। পরে তাদের সঙ্গে আরো ছয়টি ইউনিট যোগ দেয়। এসি বিস্ফোরণ থেকে এ ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বলেও জানান ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।

বিস্ফোরণে নিহত ১৮ জনের লাশ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। এদের মধ্যে ১৭ জনের নাম-পরিচয় হাসপাতালের রেকর্ড বইয়ে নথিভুক্ত রয়েছে।

বিস্ফোরণে নিহতরা হলেন- মো. সুমন (২১), ইসহাক মৃধা (৩৫), মুনসুর হোসেন (৪০), মো. ইসমাইল (৪২), আল আমিন (২৩), রাহাত (১৮), মমিনুল ইসলাম (৩৮), নদী বেগম (৩৬), মাঈন উদ্দিন (৫০), নাজমুল হোসেন (২৫), ওবায়দুল হাসান বাবুল (৫৫), আবু জাফর সিদ্দিক (৩৪), আকুতি বেগম (৭০), মো. ইদ্রিস (৬০), নুরুল ইসলাম ভুঁইয়া (৫৫), হৃদয় (২০), সম্রাট ও সিয়াম (১৮)।

আরও পড়ুন...গুলিস্তানে বিস্ফোরণ: হাসপাতালে ভীড় এড়াতে এজিবি মোতায়েন

বিস্ফোরণের পরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন ডিএমপি কমিশনার কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এরপর কাজ শুরু করেছে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। কোনো নাশকতা থেকে বিস্ফোরণ, নাকি গ্যাস জমে বিস্ফোরণ হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, অনেক সময় মিথেন গ্যাস, এসির গ্যাস বা পয়োঃগ্যাস জমে এমন বিস্ফোরণ হতে পারে। এখন এটা নাশকতা না দুর্ঘটনা, তা আমাদের দায়িত্বরত বিশেষজ্ঞ দল তদন্ত শেষ করে বিস্তারিত বলতে পারবেন

news24bd.tv/আইএএম