ধর্ষণের অভিযোগ, মীমাংসার জন্য এক টেবিলে শাকিব

ধর্ষণের অভিযোগ, মীমাংসার জন্য এক টেবিলে শাকিব

অনলাইন ডেস্ক

চিত্রনায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ একাধিক লিখিত অভিযোগ করেছেন চলচ্চিত্র প্রযোজক রহমত উল্লাহ। সেই অভিযোগ মীমাংসার জন্য চেষ্টা করছেন শাকিব খান।  

আজ রাজধানীর একটি রেস্তোরাঁয় প্রযোজক সমিতির নেতা খোরশেদ আলম খসরুর সহযোগিতায় শাকিব ও প্রযোজক রহমত উল্লাহ মুখোমুখি হন। তবে সহসাই মীমাংসা হচ্ছে না এটি, এর নেপথ্যে রয়েছে অনেক ঘটনা।

বৃহস্পতিবার বিকেলে খোরশেদ আলম খসরু গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মীমাংসার জন্য আমরা বসেছিলাম। আমরা দুই পক্ষের বক্তব্যই শুনেছি। যেটা বুঝতে পারছি যে সহসাই মীমাংসা হচ্ছে না। কেননা অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে দুজনের।

আবার আমাদের বসতে হবে। ’ 

হয়তো কয়েক ধাপে বসার পরে বিষয়টির সমাধান হতে পারে বলে জানালেন খসরু।

১৫ মার্চ বিকেলে সশরীরে এফডিসিতে উপস্থিত হয়ে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি, পরিচালক সমিতি, শিল্পী সমিতি এবং ক্যামেরাম্যান সমিতিতে অসদাচরণ, মিথ্যা আশ্বাস, ধর্ষণ এবং পেশাগত দায়িত্ব পালনে অবহেলার লিখিত অভিযোগ করেন চলচ্চিত্র প্রযোজক রহমত উল্লাহ।  

অভিযোগপত্র অনুযায়ী ২০১৭ সালে পূর্ব চুক্তি মোতাবেক অভিনেতা শাকিব খান ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমার কাজে অস্ট্রেলিয়া যান। সিনেমার শুটিং চলাকালে শাকিব খান যে ক্ষতিকর কাজগুলো করেছেন সেগুলো এই প্রযোজক যেসব অভিযোগ করেছেন। তা হলো―

১. আমাদের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নেওয়া সত্ত্বেও কোনো রকমের পূর্বঘোষণা ছাড়াই শুটিং বাতিল করে দিতেন।

২. তার খাদ্যাভ্যাসজনিত চাহিদা ছিল এমন যে হঠাৎ করে তিনি অদ্ভুত রকমের খাবার খেতে চাইতেন, আর তাতেই পুরো শুটিং ইউনিট নিয়োজিত হতো তার পছন্দের খাবার খুঁজে বের করার জন্য। এতে করে শুটিংয়ের কাজে যেমন ব্যাঘাত হতো, তেমনি চলচ্চিত্রের নির্মাণ ব্যয় নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বেড়ে গিয়েছিল।

৩. তিনি শুটিং করতে আসতেন নিজের ইচ্ছামতো সময়ে। অনেক সময় এমন হতো যে অত্যন্ত ব্যয়বহুল সেট বানিয়ে আমরা তার জন্য অপেক্ষা করতাম। তিনি হয়তো শেষ বেলায় দুই-এক ঘণ্টা অভিনয় করার জন্য আসতেন। এভাবে শুটিং না করেও সবার বেতন দিয়ে আমরা শুধু অপেক্ষা করতাম তিনি আসবেন বলে।

৪. এখন বর্ণনা দিচ্ছি তার ব্যয়বহুল যৌনাচারের। তাকে নিয়মিত পতিতালয়ে নিয়ে যেতে হতো, আর তা না হলে তার হোটেলকক্ষে অস্ট্রেলিয়ান যৌনকর্মীদের নিয়ে আসতে হতো। এই ব্যাপারটি ছিল প্রতিদিনের রুটিন। কখনো কখনো একাধিকবার। এই সব যৌনকর্মীদের মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক আমাদেরকেই দিতে হতো।

৫. একবার তিনি আমাদের একজন নারী সহ-প্রযোজককে কৌশলে ধর্ষণ করেন। ভুক্তভোগী এই নারীকে তিনি অত্যন্ত পৈশাচিকভাবে নির্যাতন করেন। গুরুতর জখমসহ রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছিল। নির্যাতিতা তখন এ ব্যাপারে অস্ট্রেলিয়ান পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। নির্যাতিতা নিজেও একজন বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত নারী। আমি সেই ফৌজদারি অভিযোগের সাক্ষী ছিলাম। এই ঘটনার পর তিনি এবং তার পরিবার সামাজিকভাবে যেই গ্লানি এবং কুৎসার স্বীকার হন, তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে একটা পর্যায়ে তার নিজের এবং তার পরিবারের টিকে থাকাটাই অসম্ভব হয়ে পড়ে। ওই দিন আমরা যখন সহকর্মীকে নিয়ে হাসপাতালে ব্যস্ত, শাকিব খান সেদিন কাউকে কিছু না জানিয়ে অস্ট্রেলিয়া থেকে চুপিসারে চলে যান।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, এর পর থেকে শাকিবের সঙ্গে বিভিন্ন সময় যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। পরবর্তীতে ২০১৮ সালে তিনি আবার অস্ট্রেলিয়ায় আসলে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। সামাজিক চাপে এবং আরো নিগ্রহের ভয়ে নির্যাতিতা প্রকাশ্যে মুখ খুলতে রাজি না হওয়ায় শাকিব সেই যাত্রায় ছাড়া পেয়ে যান।

তবে এ অভিযোগের বিষয়ে শাকিব খানের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। আশিকুর রহমান পরিচালিত ‘অপারেশন অগ্নিপথ’ সিনেমাটির শুটিং ২০১৭ সালে শুরু হলেও আজও শেষ হয়নি এর কাজ। কারণ হিসেবে শাকিব খানের অসহযোগিতা অভিযোগে উল্লেখ করেছেন সিনেমাটির প্রযোজক।

এ সিনেমায় জুটি বেঁধে অভিনয় করছিলেন শাকিব খান ও অভিনেত্রী শিবা আলী খান। অন্যদের মধ্যে আরও অভিনয় করেছেন মিশা সওদাগর, টাইগার রবি প্রমুখ।

news24bd.tv/কেআই