রমজান মাসে যে আমলগুলো গুরুত্বপূর্ণ 

প্রতীকী ছবি

রমজান মাসে যে আমলগুলো গুরুত্বপূর্ণ 

অনলাইন ডেস্ক

রমজান মাসে রোজা পালনের পাশাপাশি কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে যা পালন করা উচিৎ। এসব আমলসমূহ হলো :

সিয়াম পালন করা
ইসলামের পাঁচটি রুকনের একটি হল সিয়াম। আর রমজান মাসে সিয়াম পালন করা ফরজ। সেজন্য রমজান মাসের প্রধান আমল হলো সুন্নাহ মোতাবেক সিয়াম পালন করা।

আল্লাহ তাআলা কুরআনে উল্লেখ করেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের প্রতি রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন তোমাদের আগের লোকেদের প্রতি ফরজ করা হয়েছিল, যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার। ’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৩)
 
মহান আল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে”। [সূরা আল-বাকারাহ : ১৮৫]

সিয়াম পালনের ফযিলাত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ইখলাস নিয়ে অর্থাৎ একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে সন্তুষ্টি করার জন্য রমাদানে সিয়াম পালন করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। ’ [সহীহ বুখারী : ২০১৪]

‘যে কেউ আল্লাহর রাস্তায় (অর্থাৎ শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশী করার জন্য) একদিন সিয়াম পালন করবে, তাদ্বারা আল্লাহ তাকে জাহান্নামের অগ্নি থেকে সত্তর বছরের রাস্তা পরিমাণ দূরবর্তীস্থানে রাখবেন’।

[সহীহ মুসলিম : ২৭৬৭]

সময় মত সালাত আদায় করা
সিয়াম পালনের সাথে সাথে সময় মত নামায আদায় করার মাধ্যমে জান্নাতে যাওয়ার পথ সুগম হয়। কুরআন মাজীদে বলা হয়েছে: ‘নিশ্চয় সালাত মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয। ’ [সূরা নিসা : ১০৩]

এ বিষয়ে হাদীসে এসেছে-আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর নবী! কোন আমল জান্নাতের অতি নিকটবর্তী? তিনি বললেন, সময় মত নামায আদায় করা। [সহীহ মুসলিম : ২৬৩]

সহীহভাবে কুরআন শেখা
রমজান মাসে কুরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে। এ মাসের অন্যতম আমল হলো সহীহভাবে কুরআন শেখা। কুরআন শিক্ষা করা ফরয করা হয়েছে। কেননা কুরআনে বলা হয়েছে, ‘পড় তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন’। [সূরা আলাক : ১]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআন শেখার নির্দেশ দিয়ে বলেন:‘‘তোমরা কুরআন শিক্ষা কর এবং তিলাওয়াত কর’’ [মুসনাদ আলজামি : ৯৮৯০]

অপরকে কুরআন পড়া শেখানো
রমজান মাস অপরকে কুরআন শেখানোর উত্তম সময়। এ মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে সাহাবীদেরকে কুরআন শিক্ষা দিতেন। এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি সেই, যে নিজে কুরআন শিক্ষা করে ও অপরকে শিক্ষা দেয়’। [সহীহ আল-বুখারী : ৫০২৭]

‘যে আল্লাহর কিতাব থেকে একটি আয়াত শিক্ষা দিবে, যত তিলাওয়াত হবে তার সাওয়াব সে পাবে’ [সহীহ কুনুযুস সুন্নাহ আন-নবুবিয়্যাহ : ০৭]

সাহরী খাওয়া
সাহরী খাওয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে এবং সিয়াম পালনে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হাদীসে এসেছে, ‘সাহরী হল বরকতময় খাবার। তাই কখনো সাহরী খাওয়া বাদ দিয়ো না। এক ঢোক পানি পান করে হলেও সাহরী খেয়ে নাও। কেননা সাহরীর খাবার গ্রহণকারীকে আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর ফেরেশতারা স্মরণ করে থাকেন’। [মুসনাদ আহমাদ : ১১১০১, সহীহ]

সালাতুত তারাবীহ পড়া
সালাতুত তারাবীহ পড়া রমজান মাসের অন্যতম আমল। তারাবীহ পড়ার সময় তার হক আদায় করতে হবে। হাদীসে এসেছে- ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াব হাসিলের আশায় রমজানে কিয়ামু রমাদান (সালাতুত তারাবীহ) আদায় করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে’ [সহীহ আল-বুখারী : ২০০৯]

তারাবীহ এর সালাত তার হক আদায় করে অর্থাৎ ধীরস্থীরভাবে আদায় করতে হবে। তারাবীহ জামায়াতের সাথে আদায় করা সুন্নাহ এর অন্তর্ভুক্ত।  

হাদীসে আছে, ‘যে ব্যক্তি ইমামের সাথে প্রস্থান করা অবধি সালাত আদায় করবে (সালাতুত তারাবীহ) তাকে পুরো রাত কিয়ামুল লাইলের সাওয়াব দান করা হবে’। [সুনান আবূ দাউদ : ১৩৭৭, সহীহ]

(সংগৃহিত)

এই রকম আরও টপিক