নাটোরে গরিবের জন্য বিনামূল্যের দোকান, নিচ্ছেন যার যেটা পছন্দ

নাটোরে গরিবের জন্য বিনামূল্যের দোকান, নিচ্ছেন যার যেটা পছন্দ

নাটোর প্রতিনিধি

আর মাত্র দুই দিন পরেই ঈদ উল ফিতর। নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় বাজারে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে কেনাবেচা। নিজেদের সাধ্যমত কেনাকাটা করছে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

তবে বাজারের পাশেই অবস্থিত শিক্ষা সংঘ স্কুল মাঠে দেখা মিললো ব্যতিক্রমী চিত্র।

সেখানে বিনামূল্যে ঈদের নতুন পোশাক নিতে শত শত মানুষের ভিড় দেখা যায়। গুরুদাসপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিয়ার রহমান বাধন প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরেও দুই দিন ব্যাপী উপজেলার হত দরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষদের জন্য বসিয়েছেন বিনামূল্যের দোকান।

বৃহস্পতিবার দুপুরে শিক্ষা সংঘ স্কুল মাঠে গিয়ে দেখা যায়, মাঠ ভর্তি বিভিন্ন শ্রেণির বয়সের মানুষ ভিড় জমিয়েছে। সামনেই সারি সারি টেবিলে সাজানো রয়েছে নতুন পোশাক।

ব্যানারে স্লোগান ছিলো ‘বিনামূল্যের দোকান, যার যেটা পছন্দ নিয়ে যান’।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত প্রায় ১ হাজার মানুষের সমাগম ঘটে স্কুল মাঠে। টেবিলে রাখা নতুন পোশাক যার যেটা পছন্দ সেটা নিয়ে হাসি খুশি চলে যাচ্ছেন। পর্যাপ্ত নতুন পোশাকের মধ্যে রাখা ছিলো, শিশুদের জামা, প্যান্ট, থ্রি-পিছ, সালোয়ার কামিজ, বোরখা, পায়জামা, বয়স্কদের পাঞ্জাবী, লুঙ্গি ও নারীদের শাড়ি।

উপজেলার বিয়াঘাট গ্রাম থেকে আসা সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী রেহনুমা খাতুন জানায়, ‘আমার বাবা ৫ বছর পূর্বে মৃত্যুবরণ করেছে। বাবার মৃত্যুর পর থেকেই আমাদের পরিবারে অভাব অনটন নেমে আসে। মা অন্যের বাড়িতে পরিশ্রম করে যে আয় করে সেই টাকা দিয়েই সংসার আর পড়াশোনার খরচ চলে। বিশেষ দিনগুলোতে নতুন পোশাক তেমন কেনা হয় না। গত তিন বছর যাবত প্রতিটি ঈদে বাধন ভাই আমাকে ও আমার মাকে নতুন পোশাক উপহার দেন। বাধন ভাইয়ের এই বিনামূল্যের দোকান থেকে আমরা পছন্দ মত পোশাক নিতে পারি। '

৮০ বছরের বৃদ্ধ রমজান আবেগ আপ্লুত হয়ে জানান, 'বিগত ৫ বছর যাবত আমাকে বাধন প্রতিটি ঈদে নতুন পোশাক উপহার দেয়। এছাড়াও বিভিন্ন সমস্যায় তার কাছে সহযোগিতা পেয়ে থাকি। ’

গুরুদাসপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিয়ার রহমান বাধন বলেন, ‘আমি গত ৭ বছর যাবত বছরের বিশেষ দিনগুলোতে এই কার্যক্রমগুলো করে থাকি। এটা আমার ভালো লাগে। রাজনীতির পাশাপাশি নিজেদের ব্যবসা বাণিজ্য রয়েছে। বর্তমানে ব্যবসাতেই মনোযোগ বেশি দিয়েছি। সমাজের হত দরিদ্র অসহায় ছিন্নমূল মানুষদের পাশে দাঁড়াতে পারলে আমার ভালো লাগে। '

তিনি আরও বলেন, 'আমার বাবাও সব সময় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বাবা ও ভাইদের পরামর্শে গত কয়েকবছর যাবত এই বিনামূল্যের দোকান বসিয়ে নতুন পোশাক উপহার দিয়ে থাকি। আমি বেঁচে থাকা পর্যন্ত এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। '

news24bd.tv/FA

এই রকম আরও টপিক