মার্কিন দূতাবাসের সামনে সেলফি তুলে বিপাকে এক বাংলাদেশি

সংগৃহীত ছবি

মার্কিন দূতাবাসের সামনে সেলফি তুলে বিপাকে এক বাংলাদেশি

অনলাইন ডেস্ক

উৎসাহের বশে কলকাতার মার্কিন দূতাবাসের ছবি তুলে বিপাকে পড়লেন এক বাংলাদেশি নাগরিক। আইএসআইয়ের চর অথবা জঙ্গি সংগঠনের সদস্য সন্দেহে ‘সন্দেহভাজন’ ব্যাক্তি হিসেবেই ওই বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করে কলকাতার শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ। পুলিশের পাশাপশি দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের গোয়েন্দারাও।  

কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে, আটক বাংলাদেশি যুবকের নাম মুহাম্মদ মিজানুর রহমান।

২৬ বছর বয়সী ওই যুবক বাংলাদেশের মেহেরপুরের গাংনি থানা এলাকার নিশিপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি আমেরিকায় যাওয়ায় জন্য গত রোববার কলকাতায় এসেছিলেন ভিসা আবেদনের জন্য। তার এক আত্মীয় অদিতি মেহেক রহমান বর্তমানে থাকেন আমেরিকার ভার্জিনিয়া রাজ্যে। সেখানেই যেতে চান মিজানুর।
কিন্তু বাংলাদেশ থেকে ভিসা পেতে ১৮ লাখ বাংলাদেশি টাকা লাগবে বলে জানায় বাংলাদেশি দালাল। তাই আত্মীয়র পরামর্শ মত কলকাতায় সস্তার দালাল ধরে সহজে ভিসা পেতে কলকাতায় আসেন ওই বাংলাদেশি যুবক।  

বাংলাদেশি পরিচিতদের মাধ্যমে কলকাতায় হরিশ নামে এক দালালের স্মরণাপন্ন হন মিজানুর। গত সোমবার সকাল ১০টায় হরিশ হোচিমিন সরণিতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের সামনে আসার কথা বলে মিজানকে। কথা মত সোমবার সকালেই মার্কিন দূতাবাসের সামনে হাজির হন মিজান। অপেক্ষারত অবস্থাতেই তিনি যে কলকাতার মার্কিন দূতাবাসে এসেছেন, তার ‘প্রমাণ’ দিতে মার্কিন দূতাবাসকে পিছনে রেখে সেলফি তুলে ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে আমেরিকায় তার আত্মীয়কে পাঠান। তিনি জানতেন না কলকাতায় বিদেশি দূতাবাসের সামনে ছবি তোলা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এদিকে ফেসবুক মেসেঞ্জার ব্যবহার করে মার্কিন দূতাবাসের ছবি পাঠাতেই তার নজরে আসে মার্কিন গোয়েন্দাদের। দূতাবাসের তরফে তৎক্ষণাৎ বিষয়টি জানানো হয় কলকাতা পুলিশকে।  

এরপরই তোলপাড় হয় কলকাতার পুলিশ মহলে। ‘সন্দেহভাজন’ ব‌্যক্তি হিসেবে দূতাবাসের সামনে থেকেই মিজানুরকে আটক করে কলকাতা পুলিশ। তাকে নিয়ে আসা হয় কলকাতার সেক্সপিয়ার সরণি থানায়। দফায় দফায় চলে জিজ্ঞাসাবাদ। পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে থানায় এসে জিজ্ঞাসাবাদ চালায় পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের গোয়েন্দারাও। পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এর চর বা জঙ্গি সংগঠনের সদস্য কী না তা নিশ্চিত হতে পরীক্ষা করা হয় তার মোবাইল, প্রয়োজনীয় নথিপত্র, ভারতীয় দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশে তার পরিস্থিতি সম্পর্কেও নিশ্চিত হন গোয়েন্দারা।  

দীর্ঘ প্রায় ৭ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার অসৎ কোনো উদ্দেশ্য সম্পর্কে গোয়েন্দারা ধারণা না পাওয়ায় সোমবার রাতে অবশ্য তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। যদিও কলকাতা পুলিশ বলছে ওই যুবককে সন্দেহের উর্ধ্বে রাখা হয়নি তাই ওই যুবক যতক্ষণ কলকাতায় অবস্থান করবে ততক্ষণ নজরদারি চলবে।
news24bd.tv/aa