যুবদলকর্মী বাবুল বিএনপির হাইকমান্ডকে জড়িয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে: র‌্যাব

সংগৃহীত ছবি

যুবদলকর্মী বাবুল বিএনপির হাইকমান্ডকে জড়িয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে: র‌্যাব

অনলাইন ডেস্ক

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বড় নাশকতার পরিকল্পনা করছেন দুর্বৃত্তরা। তাঁদের সহযোগিতা করছেন বিএনপি ও জামায়াতের কিছু নেতাকর্মী। তাঁরা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বোমা তৈরির জন্য বিস্ফোরক সংগ্রহ করছেন। যুবদল কর্মী বাবুল মিয়াকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর ফকিরাপুল কালভার্ট রোড এলাকার একটি বাড়ি থেকে মো. বাবুল মিয়া (৪০) ও তাঁর ঘনিষ্ঠ মো. মাসুদ শেখকে (৪৫) গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তাঁদের কাছ থেকে উচ্চমাত্রার ছয় কেজি ১০০ গ্রাম বিস্ফোরক পাউডার, ১৫৭ বোতল ফেন্সিডিল, একটি ডিজিটাল পরিমাপক যন্ত্র, ১০টি মোবাইল ফোন এবং নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়।  

বুধবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর কাওরান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ এসব তথ্য জানান।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে এবং যুবদলে বড় পদ পাওয়ার আশ্বাসে বিভিন্ন নেতাকর্মীর কাছে বিস্ফোরক সরবরাহ করতেন বাবুল মিয়া।

এসব বিস্ফোরক দ্রব্য দিয়ে ককটেল ও বোমা তৈরি করে বিভিন্ন স্থানে বিস্ফোরণ ঘটানো হত। এভাবে অবরোধ ও হরতালে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে, ক্ষতি করা হচ্ছে জানমালের।  

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘বাবুল মুগদা থানার ৭২ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের কর্মী। তিনি মুগদা থানা যুবদলের পদপ্রত্যাশী। নাশকতামূলক কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশ নিলে তাঁকে উচ্চপদ দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয় দলের উচ্চপর্যায় থেকে। সেই আশ্বাসে তিনি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বোমা তৈরির উদ্দেশ্যে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক পাউডার সংগ্রহ করে নিজের কাছে মজুত রাখেন। এ কাজে তাঁকে সাহায্য করেন মুগদা থানার যুবদল নেতা জসীমউদ্দিন বাবু ও মো. আল মামুন পান্না। বিভিন্ন সময় দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে নেতাকর্মীদের কাছে সেসব বিস্ফোরক সরবরাহ করতেন বাবুল। ’

র‍্যাবের এই অধিনায়ক বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর এবং নির্বাচনের সময় বড় ধরনের নাশকতা সৃষ্টির জন্য এই বিস্ফোরক সংগ্রহ করা হয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালানোর সময় তাঁকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ’

মাসুদ শেখ সম্পর্কে র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘তিনি ১৯৯৮ সালে খুলনা জেলা স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। ২০০২ সালে ঢাকা আল-আমিন বিস্কুট কোম্পানিতে সেলসম্যান হিসেবে চাকরি করেন। ছয় বছর চাকরি করার পাশাপাশি তিনি মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাসুদ নিজেকে বিএনপির সমর্থক বলে পরিচয় দেন। রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী এবং একই দলের সম্পৃক্ততার কারণে মাদক কারবার বিস্তারে গত এক বছর ধরে বাবুলের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন মাসুদ। ’

আরিফ মহিউদ্দিন আরও জানান, বাবুল মুগদা এলাকায় নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করার পর ফকিরাপুলের কালভার্ট রোডে মাসুদের বাসায় আত্মগোপণ করতেন। বাবুলকে অর্থ দিয়ে সহায়তা করতেন এবং বিস্ফোরক দ্রব্য নিজ বাসায় গোপনে রাখতে সহায়তা করতেন মাসুদ।

মাসুদের বাসায় বিরোধী দলের বিভিন্ন নেতাকর্মীর যাতায়াত ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাসুদ দীর্ঘদিন ধরে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে মাদক সরবরাহ করে আসছিলেন। এর আগে তিনি মাদকসহ তাঁর নিজ এলাকা খুলনায় গ্রেফতার হন। তাঁর পরিবার গত ১৫ বছর ধরে বাসাবো এলাকায় বসবাস করছে। কিন্তু মাসুদ ফকিরাপুলের কালভার্ট রোডে বাসা ভাড়া নিয়ে মাদক ও বিস্ফোরক দ্রব্য মজুত করতেন। অবরোধকে কেন্দ্র করে তাঁর বাসায় ককটেলসহ বিভিন্ন বিস্ফোরক দ্রব্য তৈরি করা হত এবং সেখানে বিরোধী দলের বিভিন্ন নেতাকর্মীর যাতায়াত ছিল। ’

news24bd.tv/আইএএম