সাগর পাড়ে ২০০ বছরের রাস পূর্ণিমা পূজা শুরু

সাগর পাড়ে ২০০ বছরের রাস পূর্ণিমা পূজা শুরু

শেখ আহসানুল করিম, বাগেরহাট

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জে বঙ্গোপসাগর পাড়ে দুবলার চরের আলোরকেলে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নান। রোববার সন্ধ্যায় আলোরকোলে অস্থায়ী মন্দিরে রাস পূর্ণিমা পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে সুন্দরবনের সাগর পাড়ে ২০০ বছর ধরে চলে আসা রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নানের প্রাথমিক পর্ব।

সোমবার ভোরে দিনের প্রথম জোয়ারে সমুদ্রের লোনা পানিতে সনাতন হিন্দু ধর্মালম্বীদের পুণ্যস্নানের মধ্যদিয়ে শেষ হবে রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নান।

গতকাল (শনিবার) সকাল থেকে বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার পাঁচটি নৌরুট দিয়ে রাস পুণ্যস্নানে যোগ দিতে নৌপথে সুন্দরবনের আলোরকেলে যেতে শুরু করেছে পূর্ণার্থীরা।

বিগত দিনে রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নানে সব ধর্মবর্ণের মানুষদের মিলন মেল বা উৎসব এবার হবে না। এবার রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নানে যেতে পারছেন শুধু সনাতন হিন্দু ধর্মালম্বীরা। এজন্য তাদের সুন্দরবন বিভাগ থেকে পাশ-পারমিট নিতে হয়েছে। সাথে রাখতে বলা হয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্র ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দেওয়া নাগরিকত্বের সনদপত্র।

সাগর পাড়ে রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নানে যাওয়া-আসা নির্বিঘ্ন করতে নেওয়া হয়েছে চারস্তরের কঠোর নিরাপত্তা।

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম জানান, সনাতন হিন্দু ধর্মালম্বীদের ঐতিহ্যবাহী রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নানে আগে প্রতি বছর লক্ষাধিক লোক অংশ নিলেও এবার কোনো মেল হবে না। এবার সুন্দরবন বিভাগের অনুমতিপত্র নিয়ে শুধু সনাতন হিন্দু ধর্মালম্বীরা রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নানের অংশ নিতে পারবে। অন্য ধর্মের কাউকে রাস পুণ্যস্নান চলাকালে সুন্দরবনে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। বনরক্ষী, পুলিশ, কোস্টগার্ড ও র‌্যাব সদস্যদের নিয়ে নেওয়া হয়েছে চারস্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থানে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। আলোরকেলে রাস পুণ্যস্নানে যেতে বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার পাঁচটি নৌরুট নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। এক একটি নৌযানে সবোর্চ্চ ৫০জন পূণ্যার্থী যেতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তারা সাথে করে কোনো ধরনের মাংস নিতে পারবে না। রাস পুণ্যস্নানে অংশ নেওয়া কেউ হরিণসহ কোনো প্রকার বন্যপ্রাণী শিকার, খাওয়া ও সংরক্ষণ এবং গাছপালা কাটতে পারবে না। আসা-যাওয়াসহ আলোরকোলে অবস্থনকালে পূণ্যার্থীরা সুন্দরবনের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারবে না।

এজন্য সুন্দরবনের বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্টসহ নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান এই বন কর্মকর্তা।

news24bd.tv তৌহিদ

এই রকম আরও টপিক