আজকের রায়ে আটকে আছে মির্জা আব্বাসের নির্বাচনের পথ

ফাইল ছবি

আজকের রায়ে আটকে আছে মির্জা আব্বাসের নির্বাচনের পথ

অনলাইন ডেস্ক

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করা হবে আজ বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর)। তার বিরুদ্ধে দুদক আইনের ২৬(২) ও ২৭(১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

প্রথমটিতে সর্বোচ্চ তিন বছর, অপরটিতে ১০ বছরের সাজার বিধান রয়েছে। ধারা দুটির অভিযোগ প্রমাণিত হলে নির্বাচনের পথ বন্ধ হবে মির্জা আব্বাসের।

ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম বিকালে রায় ঘোষণা করবেন।

এ বিষয়ে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংবিধানের ৬৬(২) (ঘ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কেউ নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে যদি কমপক্ষে দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং তার মুক্তিলাভের পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হলে তিনি কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

সর্বশেষ ২০১৮ সালে দণ্ডপ্রাপ্ত বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতা নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগের দাবিতে সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেছিলেন। তাদের আবেদন শুনে ওই বছরের ২৭ নভেম্বর আপিল বিভাগ বলেছিলেন, আপিল বিচারাধীন থাকলেও বিচারিক আদালতে দুই বছরের বেশি সাজাপ্রাপ্তরা যতক্ষণ পর্যন্ত উচ্চ আদালত থেকে খালাস না পাবেন এবং উচ্চ আদালত সাজা স্থগিত না করবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত দণ্ডিত কারো নির্বাচনে অংশ নেয়ার সুযোগ থাকবে না।

মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে মামলায় দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, এ মামলায় মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি আমরা। দুদক আইনের ২৬(২) ধারায় তিন বছর ও ২৭(১) ধারায় ১০ বছরের সাজা প্রত্যাশা করছি।

তিনি বলেন, এ মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হলেই সর্বনিম্ন তিন বছরের সাজা হবে। সেক্ষেত্রে সংবিধান অনুযায়ী তিনি কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।

তবে মির্জা আব্বাসের আইনজীবী মহি উদ্দিন চৌধুরী বলেন, মির্জা আব্বাস ঢাকার মেয়র ও মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার বিরুদ্ধে দুদকের আনা অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। সাক্ষ্যপ্রমাণেও তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। মূলত নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলো দ্রুত শেষ করা হচ্ছে।

গত ২২ নভেম্বর আসামি ও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায়ের দিন ধার্য করেন আদালত। এর আগে গত ৫ নভেম্বর এ মামলায় মির্জা আব্বাসকে গ্রেপ্তার দেখায় আদালত।

ওইদিন মামলাটি যুক্তিতর্ক থেকে ফিরিয়ে পুনরায় সাফাই সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আবেদন করেন আব্বাসের আইনজীবী। এরপর মির্জা আব্বাসসহ পাঁচজন সাফাই সাক্ষী দেন। অপর চারজন হলেন- অ্যাডভোকেট এ কে এম শাহজাহান, এনআরবি ব্যাংকের চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট নুরুল হোসেন খান এবং ঢাকা ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা শাহজাহান মিয়া ও কাজী শিফাউর রহমান হিমেল।

প্রসঙ্গত, মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন ৭ কোটি ৫৪ লাখ ৩২ হাজার ২৯০ টাকার সম্পদ অর্জন এবং ৫৭ লাখ ২৬ হাজার ৫৭১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর রমনা থানায় মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক মো. শফিউল আলম। তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ২৪ মে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. খায়রুল হুদা।

তদন্তে তার বিরুদ্ধে ৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ২২ লাখ টাকার সম্পত্তির তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। ওই বছরের ১৬ জুন অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে এ মামলার বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এ মামলার বিচার চলাকালীন আদালত ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

news24bd.tv/FA

এই রকম আরও টপিক