আর মাত্র ক'দিনেই ক্যালেন্ডারের পাতা থেকে বিদায় নিচ্ছে ২০২৩ সাল। ২০২৪ সালকে বরণ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে সবাই।
সিনেমাপ্রেমীদের জন্য ২০২৩ বছরটি ছিলো বেশ আগ্রহের। ঢালিউড, টালিউড, বলিউডের মতো ইন্ডাস্ট্রির পাশাপাশি হলিউড ইন্ডাস্ট্রির বেশ কিছু সিনেমা রয়েছিল আলোচিত-সমালোচিত।
১. ওপেনহাইমার: হলিউডের জনপ্রিয় পরিচালক ক্রিস্টোফার নোলানের পরিচালনায় সিলিয়ান মারফির অভিনীত ওপেনহাইমার সিনেমাটি সাড়া ফেলেছিলো গোটা বিশ্বে। সিনেমাটিকে এখন পর্যন্ত বায়োপিক জগতের মধ্যে সবচাইতে সফল বায়োপিক হিসাবে আখ্যা দিয়েছেন সিনেমাপ্রেমী ও ফিল্ম ক্রিটিকস। আমেরিকার পদার্থবিজ্ঞানী জে রবার্ট ওপেনহাইমার ছিলেন একজন পদার্থবিজ্ঞানী।
পারমানবিক বোমার উৎপত্তি নিয়ে তৈরি বায়োপিকটি বিশ্বব্যাপী আয় করে নিয়েছে ৯৫২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ঘরোয়া মার্কেটে ৩২৬ মিলিয়ন আয়ের পাশাপাশি আন্তর্জাতিকভাবে ৬২৬ মিলিয়নের বেশি আয় করেছে এটি। এ বছর সেরা আয়কারী হলিউড সিনেমার তালিকায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওপেনহাইমার।
২. বার্বি: এ বছরটাই যেন ‘বার্বি’ময়। বার্বির গোলাপি আভা ছড়িয়েছে গোটা বিশ্বে। ট্রেলার প্রকাশের পর থেকেই গোলাপি জগতে মাত হয়ে ছিলেন কোটি দর্শক অনুরাগী। আর সিনেমা মুক্তির পর থেক ট্রেন্ডিংয়ের শীর্ষে জায়গা করে নেয় বার্বি। বার্বি সিনেমাটিতে এক কল্পিত জগতের বাস্তবায়ন করে দর্শক সমালোচকদের প্রশংসায় ভেসেছেন পরিচালক গ্রেটা গারউইগ ও অভিনেত্রী মার্গট রবি।
বক্স অফিসে রীতিমতো দাপিয়ে বেড়িয়েছে সিনেমাটি। বিশ্বব্যাপী প্রায় ১.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসা করেছে বার্বি। ঘরোয়া মার্কেটে সিনেমাটি আয় করেছে প্রায় ৬৩৬ মিলিয়নের বেশি। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তুলে নিয়েছে ৮০৫ মিলিয়নের বেশি। সব মিলিয়ে বলতে গেলে এ বছর বক্স অফিসের লাগাম ধরে রেখেছিল বার্বি। বছর শেষে হলিউডের শীর্ষ আয়কারী সিনেমা হিসেবে বার্বি শীর্ষস্থান দখল করে রেখেছে। সর্বাধিক আয়ের পাশাপাশি এবার অস্কারের মঞ্চেও সুনাম কুড়াতে প্রস্তুত সিনেমাটি।
৩. কিলার্স অব দ্য ফ্লাওয়ার মুন: মার্টিন স্কোরসেজির পরিচালনায় এবং অস্কারজয়ী হলিউড তারকা লিওনার্ডো ডি ক্যাপ্রিওর অভিনীত কিলার্স অব দ্যা ফ্লাওয়ার মুন চলচ্চিত্রটিও হলিউড ছাপিয়ে বিশ্বব্যাপী বেশ আলোচিত হচ্ছে।
২০২৩ সালের ২০ অক্টোবর মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমাটি বক্স অফিসে এখন পর্যন্ত ১৫৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি ব্যবসা করেছে।
৪. মিশন ইম্পসিবল - ডেড রেকনিং পার্ট ওয়ান: টম ক্রুজের দুনিয়া কাঁপানো ফ্র্যাঞ্চাইজির সপ্তম চলচ্চিত্র ‘মিশন: ইম্পসিবল - ডেড রেকনিং পার্ট ওয়ান’ এ বছর ৮ জুলাই মুক্তি পায়। সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী ৫৬৭.৫ মিলিয়নের বেশি আয় করেছে।
ঘরোয়া বক্স অফিসে ১৭২ মিলিয়ন ও আন্তর্জাতিক বাজারে আয় করেছে ৩৯৫ মিলিয়নের বেশি। বছরের সর্বাধিক আয়ের তালিকায় আট নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে এটি।
৫. এলিমেন্টাল: ডিজনির অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র এলিমেন্টাল এ বছর ১৬ জুন মুক্তি পায়। সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী ৪৯৬ মিলিয়নের বেশি আয় করেছে।
ঘরোয়া বক্স অফিসে ১৫৫ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ৩৪১ মিলিয়নের বেশি আয় করে বছরের সর্বাধিক আয়ের তালিকায় নয় নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে এটি।
৬. দ্য লিটল মারমেইড: ডিজনির সাড়া জাগানো চলচ্চিত্র ‘দ্য লিটল মারমেইড’ এ বছর দর্শকপ্রিয়তার পাশাপাশি ৫৬৯ মিলিয়নের বেশি আয় করেছে।
ঘরোয়া বক্স অফিসে ২৯৮ মিলিয়নের বেশি এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ২৭১ মিলিয়নের বেশি আয় করে সিনেমাটি এ বছর হলিউডের সর্বাধিক আয়ের তালিকায় সাত নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে।
৭. ফাস্ট এক্স: ফাস্ট এন্ড ফিউরিয়াস ফ্র্যাঞ্চাইজির আরেকটি ধামাকা ‘ফাস্ট এক্স’ এ বছর বক্স অফিসে বেশ সাড়া ফেলেছে। ২০২৩ সালের ১৯ মে মুক্তিপ্রাপ্ত ভিন ডিজেলের সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী আয় করেছে ৭০৪.৭ মিলিয়নের বেশি।
ঘরোয়া মার্কেটে এটি ঘরে তুলেছে ১৪৬ মিলিয়ন ও আন্তর্জাতিক বাজারে ৫৫৮ মিলিয়নের বেশি আয় করে নিয়েছে এটি। হলিউডে এ বছরের সর্বাধিক আয়ের তালিকায় পাঁচ নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে এটি।
৮. স্পাইডার-ম্যান: এক্রস দ্য স্পাইডার-ভার্স: মার্ভেলের প্রত্যাশিত চলচ্চিত্র ‘স্পাইডার-ম্যান: এক্রস দ্য স্পাইডার-ভার্স’ এ বছর ২ জুন মুক্তি পায়। তবে প্রত্যাশা অনুযায়ী আয় করতে পারেনি এটি। এ বছর মার্ভেলের অন্যান্য চলচ্চিত্রের মতো স্পাইডারম্যান অ্যানিমেশনটিও কিছুটা হতাশ করেছে দর্শকদের।
সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী আয় করেছে ৫৬৯ মিলিয়নের বেশি যার মধ্যে ঘরোয়া বক্স অফিসে আয় করেছে ৬৯০ মিলিয়নের বেশি। যার মধ্যে ঘরোয়া বক্স অফিসে ৩০৯ মিলিয়নের বেশি এবং আন্তর্জাতিকভাবে ৩৮১ মিলিয়নের অধিক আয় করেছে এটি। বছরের সর্বাধিক আয়ের তালিকায় ছয় নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে এটি।
৯. গার্ডিয়ানস অফ দ্য গ্যালাক্সি ভলিউম- ৩: মার্ভেলের আরেকটি চলচ্চিত্র এ বছর সর্বাধিক আয়ের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। ৫ মে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী আয় করেছে ৮৪৫ মিলিয়নের বেশি।
যার মধ্যে আমেরিকায় ৩৫৯ মিলিয়ন এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ৪৮৬ মিলিয়নের বেশি আয় করেছে এটি। বছরের সেরা আয়কারী সিনেমার তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে ‘গার্ডিয়ানস অফ দ্য গ্যালাক্সি ভলিউম ৩’।
১০. অ্যান্ট-ম্যান অ্যান্ড দ্য ওয়াস্প: কোয়ান্টুম্যানিয়া: মার্ভেলের ‘অ্যান্ট-ম্যান অ্যান্ড দ্য ওয়াস্প: কোয়ান্টুম্যানিয়া’ ২০২৩ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পেয়েছিল।
পল রুড অভিনীত চলচ্চিত্রটি বিশ্বব্যাপী বক্স অফিসে আয় করেছে ৪৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যার মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আয় করেছে ২১৪.৫ মিলিয়ন এবং আন্তর্জাতিকভাবে আয় করেছে ২৬১.৫ মিলিয়ন। বক্স অফিসের নিরিখে হলিউডের সর্বাধিক আয়ের তালিকায় দশ নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে এটি।
news24bd.tv/SC
