ইনানের পাশে দাঁড়ানো নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারি, আহত ৩

ছাত্রলীগ

ইনানের পাশে দাঁড়ানো নিয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারি, আহত ৩

অনলাইন ডেস্ক

প্রোগামে জায়গা নিয়ে দাঁড়ানো ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানকে সালাম দেয়াকে কেন্দ্র করে তার উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় একজন গুরুতরসহ তিনজন আহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এ ঘটনা ঘটে। শেখ ইনান নিজে এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সিনিয়র নেতারা উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও দুই দফায় এ সংঘর্ষ হয়।

সংঘর্ষে জড়ানো দুই পক্ষই শেখ ইনানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

গুরুতর আহত হলেন সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়াও সমাজ কল্যাণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী ও হল ছাত্রলীগের কর্মী সাইদুর রহমান শান্ত এবং তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের এক কর্মী আহত হয়েছেন।

ঘটনার সময় লাঠি, স্টাম্প, হকিস্টিক ও গাছের ডাল দিয়ে কামরুলের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয় বলে উপস্থিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন।

এ ঘটনায় বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগের পরিকল্পনা ও কর্মসূচিবিষয়ক উপসম্পাদক মাসফি-উর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিঝুম ইফতার, থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী ও বিজয় একাত্তর হলের ছাত্রলীগ কর্মী শিক্ষার্থী ফজলে নাভীদ অনন, মারুফ, পরশ প্রমুখের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে।

মাস্টার দা সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের উপ তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক সিফাত আল শাফী বলেন, আমাদের হলের স্পোর্টসে ইনান ভাইকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য মধুর ক্যান্টিনে প্রোগ্রামে এসেছিলাম। তখন সূর্যসেন হল ছাত্রলীগ ও একাত্তর হল ছাত্রলীগ গিয়ে ভেতরে দাঁড়ালে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি ও বাকবিতণ্ডা হয়। আমরা তখন ভিতরে গিয়ে স্লোগান দেই। ইনান ভাই প্রবেশ করলে সালাম দেয়া নিয়ে একটু ঝামেলা হয়। পরে মধুর ক্যান্টিন থেকে কামরুল বের হলে, তার ওপর অতর্কিত হামলা হয়। তার ওপর লাথি দিয়ে ফেলে দিয়ে হকিস্টিক, স্টাম্প, গাছের ঢাল দিয়ে হামলা চালানো হয়। তাকে রক্ষা করতে গিয়ে শান্তও মাথায় আঘাত পায়। কামরুলের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক।

মাস্টার দা সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের উপশিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক মো. ওয়ালি উল্লাহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হল ছাত্রলীগে অনুপ্রবেশকারী জামাত-শিবিরের এজেন্ট, চিহ্নিত সন্ত্রাসী মাসফিউর, মারুফ, পরশ, অনন, নিঝুম ও অন্যান্য কর্তৃক সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান ও সাইদুর রহমান শান্ত'র উপর মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে রড, স্টাম্প ও ধারালো অস্ত্রশস্ত্র সহ এই সন্ত্রাসী হামলার বিচার চাই। আমার ভাই আহত কেন, বিচার চাই।

এদিকে অভিযুক্ত সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিঝুম ইফতার ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি মিরপুর চিড়িয়াখানায় যাবো বলে হল থেকে বের হই, পরে মধুর ক্যান্টিনে যাই। ইনান ভাই আসার আগেই আমি সেখান থেকে চলে আসি। পরবর্তীতে মেট্রোরেলে এসে মিরপুর হয়ে এখন চন্দ্রিমা উদ্যানে আছি। এছাড়া বাকি অভিযুক্তদের ফোনে পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও কল রিসিভ করেননি যায়নি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান।

প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ, অসদাচরণ ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি সাময়িক বহিষ্কার হন ২০২১-২০২২ সেশনের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিজয় একাত্তর হলের ছাত্রলীগ কর্মী ফজলে নাভীদ অনন। এছাড়াও ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে সিনিয়রকে মারধরের ঘটনায় হল ছাত্রলীগের পরিকল্পনা ও কর্মসূচিবিষয়ক উপসম্পাদক মাসফি-উর রহমানকে হল থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করে হল কর্তৃপক্ষ।

news24bd.tv/aa