ঈদকে কেন্দ্র করে কুড়িগ্রামে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট গোপনে বিক্রি করে আসছিল একটি প্রভাবশালী কালোবাজারি চক্র। বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে টিকিট কালোবাজারির ওই চক্রের দুইজনকে টিকিটসহ হাতেনাতে আটক করেছে। তারা হলেন- মিলন মিয়া (২৭) ও আহসান হাবিব (২৫)। আটক মিলন রেলস্টেশন সংলগ্ন কালে মৌজার রফিকুল ইসলামের ছেলে এবং অপর আহসান খলিলগঞ্জ স্কুল এন্ড কলেজ সংলগ্ন মেসার্স মাহি ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী বলে জানা যায়।
পুলিশ ও এলাকাবাসীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে একদল কালোবাজারির অপতৎপরতার কারণে সাধারণ যাত্রীরা দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়েও ট্রেনের টিকিট সংগ্রহ করতে পারছিলেন না। প্রতিদিন সকালে লাইনের শুরুতে সিন্ডিকেট করে কালোবাজারি ও তাদের সহযোগীরা দাঁড়িয়ে আগেভাগেই সব টিকিট কিনে নিতো। পরে তাদের কাছ থেকে দ্বিগুণ কিংবা তিনগুণ চরা দামে টিকিট নিতে বাধ্য হচ্ছিলেন সাধারণ যাত্রীরা। সম্প্রতি ঈদের কারণে ঢাকা থেকে কুড়িগ্রাম ও কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকা ট্রেনের টিকিট কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল অনেক যাত্রীকে।
প্রকৃত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশী দামে কালোবাজারে টিকিট মিললেও অফলাইন এবং অনলাইনে কোন টিকিট পাওয়া যাচ্ছিল না। এমনকি সবসময় টিকিট কাউন্টারের সামনে ২০টি চেয়ার লাইন করে বসিয়ে রাখারও অভিযোগ ছিল। চেয়ারগুলোর মালিক স্থানীয় দোকানদার ও প্রভাবশালী হওয়ায় সাধারণ যাত্রীদের পক্ষে চেয়ারের বাঁধা ভেঙে টিকিট সংগ্রহ অসম্ভব হয়ে পড়ছিল।
এমতাবস্থায় কয়েকজন যাত্রী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজু আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনকে জানায়। তারা দুজন স্টেশন মাষ্টারের সাথে দেখা করেও বিষয়টি সুরাহা করতে পারেননি। পরে তারা ফোনে পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবহিত করলে গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে দুজন টিকিট কালোবাজারিকে আটক করে। তবে অন্যরা এসময় সটকে পড়ে।
কুড়িগ্রাম রেল স্টেশন মাস্টার সামসুজ্জোহা জানান, ঈদ উপলক্ষে যাত্রীবেশী কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্য অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। যাত্রীবেশে টিকিট সংগ্রহ করে অধিক দামে কালোবাজারিরা টিকিট বিক্রি করে আসছিল। আমরা প্রতিহত করতে হিমশিম খাচ্ছিলাম। কুড়িগ্রাম পুলিশের গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আশিকুর রহমান জানান, কালোবাজারিদের আটক করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
news24bd.tv/desk