নদ বেষ্টিত কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলা অবশেষে যোগাযোগের আওতায় আসছে। আগামী জুন মাসে চিলমারী-রৌমারী ২১ কিলোমিটার রুটে ফেরি সার্ভিস চালুর মাধ্যমে দীর্ঘদিনের ভোগান্তি দূর হচ্ছে এই দুটি উপজেলার মানুষের। বৃহস্পতিবার ফেরি চলাচলের সম্ভাব্যতা যাচাই ও রুট পরির্দশন করেছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরিণ নৌপরিবহন কর্পোরেশনের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল। তারা চিলমারী ও রৌমারী উভয় প্রান্তের ঘাট, সংযোগ সড়ক ও নাব্যতা যাচাই
করেন।
এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন- বিআইডব্লিউটিসির জেনারেল ম্যানেজার (মেরিন) হাসেমুর রহমান, পরিচালক (বাণিজ্য) এসএম আশিকুজ্জামান, নির্বাহী প্রকৌশলী রুবেলুজ্জামান বিদ্যুৎ, বাংলাদেশ অভ্যন্তরিণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আরিফ প্রমুখ।
সকালে রৌমারী প্রান্তে প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এমপি। রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা প্রকৌশলীসহ কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া কুড়িগ্রাম সফরে এসে রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলা পরিদর্শনে যান।
স্থানীয়রা জানান, ফেরি সার্ভিস চালু না থাকায় স্বাধীনতার পর থেকে রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ নৌকাযোগে ব্রহ্মপুত্র পাড়ি দিয়ে জেলা সদরে এসে প্রশাসনিক, ব্যক্তিগত ও আদালত সংক্রান্ত কাজ করতেন। কিন্তু বন্যা
ও ঝড়ে প্রবল ঝুঁকি এবং গ্রীষ্মকালে নাব্যতা সংকটে যাতায়াত ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল হয়ে দাঁড়ায়। ব্যয় হয় প্রচুর সময়। বেশিরভাগ সময় কাজ শেষ করতে নৌকার অভাবে রাত্রিযাপন করতে হয় কুড়িগ্রাম শহরে। ফেরি সার্ভিস চালু হলে চিলমারী-রৌমারী-রাজীবপুর নয়, কুড়িগ্রামের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ অনেক সহজ হবে, যাতায়াত খরচও কমে যাবে।
বিআইডব্লি উটিসির জেনারেল ম্যানেজার (মেরিন) হাসেমুর রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবের নির্দেশে তারা ফেরি চলাচলের সব ধরনের কারিগরি দিক সরেজমিন পরিদর্শনের জন্য এসছেন। শীঘ্রই এই রুটের নাব্যতা ধরে রাখতে ডেজিংসহ অন্যান্য কাজ করা হবে। পাশাপাশি দুদিকের ঘাটের উন্নয়নও করা হবে।
নির্বাহী প্রকৌশলী রুবেলুজ্জামান বিদ্যুৎ জানান, বর্তমানে চিলমারী-রৌমারী নৌরুটের দৈর্ঘ্য ২১ কিলোমিটার। তবে ড্রেজিং এর মাধ্যমে এই রুটের দৈর্ঘ্য ১৩-১৪ কিলোমিটারে নামিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। সেক্ষেত্রে যাত্রীদের সময় ও অর্থ বাঁচবে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘মূলত মুখ্য সচিব স্যারের নির্দেশনায় ব্রহ্মপুত্র নদে চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে ফেরি চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রাথমিক প্রস্তুতি শেষে শীঘ্রই ফেরি সার্ভিস চালু হবে। ’
news24bd.tv/তৌহিদ