'প্রথম আলো আমাকে কোনো পুরস্কার দেয়নি'

সংগৃহীত ছবি

'প্রথম আলো আমাকে কোনো পুরস্কার দেয়নি'

অনলাইন ডেস্ক

ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক রিয়াজ। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে 'প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতা'র অভিযোগ তুলেছিলেন হারুনুর রশীদ কাজল (জ্যাম্বস্ কাজল) নামের এক পরিচালক। এবার রিয়াজ ওই পরিচালকের বিরুদ্ধেই মামলা করেছেন। এছাড়াও কয়েক দিন আগেই দেশের একটি জাতীয় দৈনিকের নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধনেও উপস্থিত ছিলেন এই অভিনেতা।

এসব নিয়ে রিয়াজ চলে আসছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের নানা প্রতিক্রিয়ায়। এসব প্রতিক্রিয়া ও সমসাময়িক কয়েকটি বিষয় নিয়ে এক জাতীয় দৈনিকের সঙ্গে কথা বলেন রিয়াজ।

জ্যাম্বস কাজল নামের ওই পরিচাঅইকের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে নায়ক জানান, এফডিসিতে সংবাদ সম্মেলন করে একজন পরিচালক আমাকে নানা কথা বলেছেন। নানা নোংরা বিশেষণ দিয়ে বিশেষায়িত করেছেন।

নোংরা উপাধি দিয়েছেন। কেন করেছেন আমি বুঝতে পারিনি, এখানে আমার কী দোষ ছিল সেটাও বুঝতে পারিনি। যার ফলে আমি আদালতে গিয়েছি, আইনের দ্বারস্থ হয়েছি। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আইনের আশ্রয় নেওয়া আমার নাগরিক অধিকার। বিজ্ঞ আদালত সেটা আমলে নিয়ে মামলা রেজিস্ট্রি করেছেন এবং পিবিআইকে তদন্তভার দিয়েছেন। আমি আদালতের প্রতি আস্থাশীল। বাংলাদেশের আইনের প্রতি আস্থাশীল। আমি সবাইকে বলেছিলাম যে এটার বিরুদ্ধে মামলা করব। তাই এটা করা ছাড়া আমার কোনো উপায় ছিল না।

তিনি বলেন, আজকে ফেসবুকের যুগে মানুষ আঙুল তুলে কথা বলতে পারে না, আমার সম্পর্কে পজিটিভ কথাই বলে। আমি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত না। আমি একটি আদর্শকে ধরে রেখেছি, লালন করি―এটাই কি আমার দোষ? আমি রাজনীতিতে কখনোই কোনো দলের সদস্য না। আমি বঙ্গবন্ধুকে পছন্দ করি। আমি মনে করি বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ, এটা আমার বিশ্বাস, এটা আমার চেতনা। এটা একটা মানুষের ক্ষেত্রে হতেই পারে। ভিন্নমত থাকতে পারে অন্যদের। এটা ছাড়া আমার কোনো শত্রু নেই, আমার কোনো হেটার্স নেই আমি মনে করি। এ রকম একটা সময় এসে একজন পরিচালক আমাকে নিয়ে এমন অভিযোগ তুলবে, আমি মনে করি আমার আরো একটি মানহানি মামলা করার দরকার। আমার আইনজীবী আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন, সেটাও হয়তো করব।  

কয়েকদিন আগে প্রথম আলোর নিবন্ধন বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছিলেন রিয়াজ। অথচ একাধিকবার মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছেলিন এই অভিনেতা। এ প্রসঙ্গে রিয়াজ জানান, বিষয়টা হচ্ছে এই স্বাধীনতা তো ৩০ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে পেয়েছি, বঙ্গবন্ধুর সারা জীবনের অর্জন এই স্বাধীনতা। তার সারা জীবনের আত্মত্যাগের ফসল পাওয়া এই স্বাধীনতা। স্বাধীনতার শত্রুরা স্বাধীনতার পর থেকেই ছিল বাংলাদেশে। বিভিন্ন রকম রং বদল করে ছিল। যার ফলশ্রুতিতে বঙ্গবন্ধু ১৫ আগস্ট মারা যান। এর পরও কিন্তু এই চক্র নানাভাবে ষড়যন্ত্র করেই গেছে। আজকে এত বছর পরে এসেও কেউ যখন প্রশ্ন করে এই স্বাধীনতা দিয়ে কী করব, চালডাল বা মাংসের স্বাধীনতা চাই। স্বাধীনতার সাথে এটার কোনো সম্পর্ক নেই।

তিনি আরও জানান, যখন দায়িত্বশীল পত্রিকা এমন সংবাদ করে তখন এটাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ বলে মনে হয়। এ ধরনের সংবাদ কাম্য না, অন্তত স্বাধীনতাকে নিয়ে।  

রিয়াজ আরও জানান, 'আমিও ফেসবুকে দেখেছি, রিয়াজ সাতটা মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছেন, তারপরও প্রথম আলোর বিরুদ্ধে উনি কেন দাঁড়াচ্ছেন? 

'আমার কথা হচ্ছে, প্রথম আলো আমাকে কোনো পুরস্কার দেয়নি। আমাকে পুরস্কার দিয়েছে মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কারের দর্শকরা। আমার দর্শকরা তারকা জরিপের মাধ্যমে পুরস্কার দিয়েছে। সেটা প্রথম আলোর মাধ্যমে আমি পেয়েছি। এই পুরস্কারে প্রথম আলোর কোনো ক্রেডিট নেই। প্রথম আলো যদি বলে পুরস্কারটা আমি দিয়েছি, তাহলে সেটা আমি ছুড়ে ফেলে দেব। এটা আমাকে দিয়েছে আমার অডিয়েন্স, আমার দর্শক। তারা ভালো মনে করেছে, যোগ্য মনে করেছে। দর্শকরা যোগ্য মনে না করলে তো আমি প্রথম আলোর কাছ থেকে পুরস্কার পেতাম না', বলেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, 'তারপরও ধরলাম প্রথম আলোর কাছ থেকে পুরস্কারটা আমি পেয়েছি। বা প্রথম আলোই আমাকে পুরস্কারটা দিয়েছে। এখানে যদি আমি বলতে চাই, আমার বাবা যদি গলা টিপে আমার মাকে মেরে ফেলে, তাহলে কি আমি আমার বাবাকে ছেড়ে দেব? আমি বলব না যে আমার বাবা অন্যায় করেছে? তার বিরুদ্ধে মামলা করব না? কারণ আমার মা তো আমাকে জন্ম দিয়েছে। স্বাধীনতার প্রশ্নে, সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বাংলাদেশে কোনো ছাড় নয়, এই যে আমরা অক্সিজেন নিতে পারছি- এটার প্রশ্নে কাউকে ছাড় দেওয়ার পক্ষে না আমি, সে যে-ই হোক না কেন। স্বাধীনতার প্রশ্নে, বাবাকেও আমি ছাড় দিতে রাজি নই। '

news24bd.tv/রিমু