স্বর্ণ চোরাচালান জুয়েলারি শিল্পের সবথেকে বড় বাধা বলে জানিয়েছেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির (ডিএফডি) চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। সরকারি বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বাংলাদেশের এ শিল্প বিশ্বমানের পর্যায়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) কাওরান বাজারে এটিএন বাংলা টেলিভিশন ভবনে জুয়েলারি শিল্পের বিকাশ নিয়ে আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন দলকে দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ ।
এসময় তিনি বলেন, দেশের বৈদেশিক আয়ের সিংহভাগই আসে তৈরি পোশাক রপ্তানি ও অভিবাসী কর্মীদের প্রেরিত রেমিট্যান্স থেকে।
ডিএফডি চেয়ারম্যান বলেন, অভ্যন্তরীণ বাজারের চাহিদা মিটিয়ে জুয়েলারি শিল্প একদিন বিশ্ববাজারে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। বাংলাদেশের জুয়েলারি শিল্প তথা স্বর্ণ ব্যবসায়ের সবচেয়ে বড় ক্ষত হচ্ছে চোরাচালান। স্বর্ণ চোরাচালান স্বর্ণ ব্যবসায়ের জন্য একটি কালো দাগ।
তিনি বলেন, স্বর্ণ চোরাচালানের কারণে সরকার একদিকে যেমন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, অন্যদিকে বৈধ ব্যবসায়ীরা স্বর্ণ তথা জুয়েলারি ব্যবসা পরিচালনা করতে হিমশিম খাচ্ছেন। তবে প্রকৃত জুয়েলারি ব্যবসায়ীরা স্বর্ণ চোরাচালানের সাথে জড়িত নয়। স্বর্ণ চোরাচালান বন্ধে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে আরও কঠোর নজরদারী করতে হবে।
আইনি দুর্বলতার কারণে স্বর্ণ চোরাচালান সংক্রান্ত মামলার বিচার দীর্ঘায়িত উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রায় প্রতিদিনই বিমান বন্দরে স্বর্ণের ছোটবড় চোরাচালান জব্দ হচ্ছে। স্বর্ণের চোরাচালান জব্দ হলেও কিছু কিছু অবৈধ স্বর্ণের ক্যারিয়াররা ধরা পড়লেও নেপথ্যের হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। এরা এতই শক্তিশালী যে সবসময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও দুবাই থেকে স্বর্ণ চোরাচালান নিয়ন্ত্রণ করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এটিএন বাংলা ও এটিএন নিউজের চেয়ারম্যান ড. মাহফুজুর রহমান। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ, বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন (বাজুস) এর সাবেক সভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায়, এটিএন বাংলার সিনিয়র উপদেষ্টা নওয়াজীশ আলী খান, অধ্যাপক ড. আবু সৈয়দ মো. আজিজুল ইসলাম ও এটিএন বাংলার উপদেষ্টা তাশিক আহমেদ।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে চ্যাম্পিয়ন দল ঢাকা কলেজের বিতার্কিকদের ফুলের মালা পরিয়ে অভিনন্দন জানান অতিথিরা। একইসাথে বিতার্কিকদের চ্যাম্পিয়নশিপ ট্রফি তুলে দেওয়া হয়।
ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, জুয়েলারি শিল্পের বিকাশে কর সুবিধা প্রদান করা উচিত। বাংলাদেশ যাতে কোনোভাবে স্বর্ণ চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহার না হয় তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি আরও বলেন, সরকারি বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা থাকলে জুয়েলারি শিল্প একদিন রপ্তানিখাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
এসময় হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, বাংলাদেশ জুয়েলারি এসোসিয়েশনের বর্তমান সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে সকল ছোট বড় জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানকে এক ছাতার নিচে আনার যে প্রচেষ্টা তা নিশ্চয়ই এই শিল্পের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। বাংলাদেশের বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের উদ্যোগে তৈরি হচ্ছে গোল্ড রিফাইনারি। একইসাথে দেশে প্রথমবারের মতো স্থাপিত হতে যাচ্ছে বিশ্বমানের জুয়েলারি পার্ক। যার মাধ্যমে মেড ইন বাংলাদেশ লেখা সোনার বার বিশ্ববাজারে রপ্তানি করা সম্ভব হবে।
