২০২৪ সালের হজের বিমান ভাড়া কমানোর দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)। রোববার (৫ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠি পাঠান হাবের সভাপতি এম.শাহাদাত হোসাইন তসলিম।
প্রধানমন্ত্রী বরাবর এ চিঠিতে হাব জানিয়েছে, আপনার সরাসরি দিকনির্দেশনা ও প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনায় আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়েছে এবং বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনা সৌদি সরকারের কাছেও প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশের হজযাত্রীদের কল্যাণে ও সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে আপনার নেয়া সকল পদক্ষেপ এরই মধ্যে সর্বমহলে বিশেষ করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মাঝে প্রশংসিত ও সমাদৃত হয়েছে।
হজযাত্রীদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স প্রথা বাতিল, আধুনিক ই-হজ ব্যবস্থাপনা, হজযাত্রীদের সৌদি আরবের ইমিগ্রেশন বাংলাদেশে সম্পন্নকরণ, আশকোনা হজ ক্যাম্প সংস্কার ও বর্ধিতকরণসহ হজযাত্রীদের ভোগান্তি নিরসনকল্পে সামগ্রিক হজ ব্যবস্থাপনায় ইতিবাচক পরিবর্তনের জন্য আপনি যে অসামান্য ভূমিকা রেখেছেন তা বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনার ইতিহাসে মাইলফলক হয়ে থাকবে। এ জন্য বাংলাদেশের সকল হজযাত্রী ও হজ এজেন্সির পক্ষ থেকে আপনার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
এতে বলা হয়, পবিত্র হজের সঙ্গে বাংলাদেশের মুসলমানদের আবেগ-অনুভূতি নিবিড়ভাবে জড়িত। বিষয়টি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভীষণ রকমের স্পর্শকাতর।
২০২৪ সালের হজের বিমান ভাড়া ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত ভাড়া বিগত বছর থেকে ২৯৯৭ টাকা কম হলেও, বিভিন্ন বিষয়াদি বিবেচনায় আরও কমানো সম্ভব। যেহেতু বিমান একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, তাই তাদের একক কর্তৃত্বে ভাড়া নির্ধারণ যথাযথ হয়নি বলে হাব কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ মনে করে।
বর্তমানে এয়ারলাইন্সগুলো প্রায় ৭৫ হাজার টাকায় ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রিটার্ন টিকিট বিক্রি করছে এবং প্রায় ২০% আসন খালি রেখে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। হজের সময় প্রায় শতভাগ যাত্রী নিয়ে ফ্লাইট গমন করে। তাছাড়া খালি ফিরতি ফ্লাইটের পরিচালনা ব্যয়ও কম। সাধারণ ফ্লাইটের বিপণন ও সিস্টেম পরিচালনায় অতিরিক্ত ব্যয় করতে হয়, যা হজের ফ্লাইটে করতে হয় না। সে হিসাবে ডেডিকেটেড হজ ফ্লাইটের সর্বোচ্চ দেড় লাখ টাকা বিমান ভাড়া হতে পারত।
চিঠির শেষাংশে বলা হয়, আপনি হজযাত্রীদের কল্যাণে সর্বদাই নিবেদিত এবং আধুনিক ও কল্যাণমুখী হজ ব্যবস্থাপনায় আপনার ভূমিকা সর্বমহলে প্রশংসিত। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সারা দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমগণ কেবল আপনার দিক তাকিয়ে আছে। অতএব বর্তমান প্রেক্ষিত বিবেচনায় একটি স্বতন্ত্র টেকনিক্যাল কমিটির মাধ্যমে হজযাত্রীদের বিমান ভাড়া কমিয়ে হজ প্যাকেজ পুনঃনির্ধারণের বিষয়ে আপনার সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের জন্য দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। এর মধ্যে সাধারণ প্যাকেজের মূল্য ৫ লাখ ৭৮ হাজার ৮৪০ টাকা। আর বিশেষ হজ প্যাকেজের মূল্য ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩২০ টাকা। সাধারণ প্যাকেজের ব্যয় ২০২৩ সালের হজ প্যাকেজের চেয়ে ৯২ হাজার ৪৫০ টাকা কম। আর বিমান ভাড়া ২ হাজার ৯৯৭ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
১৪৪৫ হিজরি সনের ৯ জিলহজ তারিখে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ২০২৪ সালের ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৪ সালের হজযাত্রীর কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন। সরকারি মাধ্যমের কোটা ১০ হাজার ১৯৮ জন আর বেসরকারি এজেন্সির কোটা ১ লাখ ১৭ হাজার।
news24bd.tv/Aa