পবিত্র শবে মেরাজের রাতের ফজিলত ও আমল

পবিত্র শবে মেরাজ

পবিত্র শবে মেরাজের রাতের ফজিলত ও আমল

অনলাইন ডেস্ক

আজ পবিত্র শবে মেরাজ। রজব মাসের ২৬ তারিখের রাতটি মুসলিমদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ফারসিতে শব শব্দের অর্থ রাত এবং আরবিতে মেরাজের অর্থ ঊর্ধ্বগমন। অন্যান্য মুসলিম দেশের মতো বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মহিমান্বিত রাতটি ইবাদত করে থাকেন।

আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে এই রাতে তারা পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, নফল নামাজ আদায়, জিকির-আজকার, দোয়া-দরুদ ও ইবাদত-বন্দেগি পালন করবেন।

মহানবী মুহাম্মদ (সা.)-এর অলৌকিক ও ঐতিহাসিক ঘটনার স্মারক দিবস হিসেবে মুসলিম বিশ্বে পবিত্র শবে মেরাজ পালিত হয়। এ রাতে মহানবী (সা.) সাত আসমান পেরিয়ে মহান আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং মুসলিমদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নিয়ে ফেরেন।

মেরাজের রাতে মহানবী (সা.) সাত আসমান পেরিয়ে মহান আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করনে ।

পবিত্র মেরাজ শরিফের ঘটনা ঘটার আগে রাসূল (সা.)-এর ওপর একের পর এক দুর্যোগ নেমে এসেছিল। স্নেহময় চাচা আবু তালেবের ইন্তেকাল, প্রিয়তমা স্ত্রী খাদিজা (রা.)-এর ইন্তেকাল এবং তায়েফবাসীদের অভাবনীয় অত্যাচার, প্রিয় রাসূল (সা.)-এর নবুয়তের মহাগুণাবলির অন্যতম উজ্জ্বল নিদর্শন হলো মেরাজের ঘটনা।  

নবুয়ত ঘোষণার প্রকাদশ বছরে কারও মতে দশম বছরে রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত রাতে প্রথমে কাবা শরিফ থেকে জেরুজালেমে অবস্থিত বায়তুল মোকাদ্দাসে গমন করেন এবং সেখানে তিনি নবিদের জামাতে ইমামতি করেন। অতঃপর বোরাক নামক বিশেষ বাহনে আসীন হয়ে ঊর্ধ্বলোকে সপ্তম আকাশে সিদরাতুল মুনতাহায় গমন করেন মাহনবি (সা.)।  

এর আগে আকাশের সাত স্তরে মহানবিকে স্বাগত জানান হজরত আদম (আ.), হজরত ঈসা (আ.), হজরত ইয়াহইয়া (আ.), হজরত ইদ্রিস (আ.), হজরত হারুন (আ.), হজরত মুসা (আ.) এবং হজরত ইবরাহিম (আ.)। সপ্তম আকাশে পৌঁছে জিবরাইল (আ.) জানালেন, এরপর তার যাওয়ার অনুমতি নেই। অতঃপর রফরফ নামে একটি যানে করে রাসূল (সা.) ৭০ হাজার নুরের পর্দা ভেদ করে আরশে আজিমে পৌঁছান। সেখানে এক ধনুক দূরত্ব থেকে আল্লাহর সঙ্গে তার কথোপকথন হয়।

ইরশাদ হয়েছে, পবিত্র ও মহিমাময় তিনি যিনি তার বান্দাকে রাতে মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা ভ্রমণ করিয়েছেন, যার আশপাশ আমি বরকতময় করেছি, তাকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য, তিনি সর্বশ্রোতা সর্বদ্রষ্টা। ’ (সুরা : বনি ইসরাইল, আয়াত : ১)

শবে মেরাজের রাতের ফজিলত ও আমল
মুসলমানরা এ মহিমান্বিত রাতটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত, নফল নামাজ আদায়, জিকির-আসকার, দোয়া-দরুদ ও ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে পালন করবেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, এ রাতে নফল ইবাদত করবে ও দিনে রোজা পালন করবে। (ইবনে মাজাহ)। ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো নামাজ; সুতরাং নফল ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো নফল নামাজ। প্রতিটি নফল ইবাদতের জন্য তাজা অজু বা নতুন অজু করা মোস্তাহাব। বিশেষ ইবাদতের জন্য গোসল করাও মোস্তাহাব। ইবাদতের জন্য দিন অপেক্ষা রাত শ্রেয়তর।

আরও পড়ুন: পরকালে শাস্তির মুখোমুখি হবে অবৈধ মজুদদাররা

হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) বলেছেন, এ রাত যখন আসে, তখন তোমরা এ রাতটি ইবাদত-বন্দেগিতে কাটাও এবং দিনের বেলায় রোজা রাখো; কেন না, এদিন সূর্যাস্তের পর আল্লাহ তাআলা দুনিয়ার আসমানে নেমে আসেন এবং আহ্বান করেন; কোনো ক্ষমাপ্রার্থী আছ কি? আমি ক্ষমা করব; কোনো রিজিকপ্রার্থী আছ কি? আমি রিজিক দেব; আছ কি কোনো বিপদগ্রস্ত? আমি উদ্ধার করব। এভাবে ভোর পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা মানুষের বিভিন্ন প্রয়োজনের কথা উল্লেখ করে আহ্বান করতে থাকেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ১৩৮৪)।

news24bd.tv/aa