সাধু সাধু সাধু ধ্বনিতে মুখরিত চীবর দানোৎসব

সাধু সাধু সাধু ধ্বনিতে মুখরিত চীবর দানোৎসব

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি প্রতিনিধি

পার্বত্যাঞ্চলে মাসব্যাপী শুরু হয়েছে কঠিন চীবর দানোৎসব। পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসরত বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের সাধারণত প্রবারণা পুর্ণিমা উৎসবের পর দিন থেকে এ চীবর দানোৎসব পালন করা হয়। চলবে মাসব্যাপী। পাহাড়ের বিভিন্ন বিহারে পালন করা হবে এ উৎসব।

সর্বশেষ রাঙামাটি রাজবন বিহারের কটিন চীবর দানোৎসবের মধ্যদিয়ে শেষ হবে এ দানোৎসব। এ উৎসবের কারণে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠে পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীরা। বসে মেলা। আয়োজর করা হয় নানা কমসূচি।

সোমবার দুপুরে রাঙামাটি বড়ুয়া জনকল্যাণ সংস্থার উদ্যোগে বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দানোৎসবের আয়োজন করা হয়। পঞ্চশীল প্রার্থণার মধ্যদিয়ে সূচনা করা হয় এ দানোৎসব। এতে পূর্ণার্থীদের উদ্দেশ্যে ধর্মদেশনা প্রদান করেন পশ্চিম গহিরা শান্তিধাম বৌদ্ধ বিহার অধ্যক্ষ ভদন্ত মৈত্রীপ্রিয় মহাথেরো।

এসময় পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ, বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সংঘরাম বৌদ্ধ বিহার অধ্যক্ষ ভদন্ত শ্রদ্ধালংকার মহাথেরো, বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহার ও রাঙামাটি বড়ুয়া জনকল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক উদয়ন বড়ুয়ার, সংঘরাম বৌদ্ধ বিহারে অধ্যক্ষ ধর্মর্কীতি মহাথেরো, ধর্মচক্র বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত পাঞাবংশ মহাথেরো, বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহার ও রাঙামাটি বড়ুয়া জনকল্যাণ সংস্থার সভাপতি সুপ্রিয় বড়ুয়া, বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারের সহ সভাপতি রণজিৎ কুমার বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠান শুনুতে মঙ্গলাচরণ পাঠ করেন, বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ করুনাপাল ভিক্ষু। এসময় ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষের সাধু সাধু সাধু ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে চারপাশ। ঢল নামতে থাকে পুর্ণার্র্থীদের।

এর আগে রাঙামাটি বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারে কঠিন চীবর দান উপলক্ষে ভোর থেকে শুরু করা হয় নানা কর্মসূচি। তার মধ্যে ছিল- পরিত্রাণ পাঠ, পুষ্পপূজা ও ভিক্ষুসংঘের প্রাতঃ রাশ, জাতীয় পতাকা ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, বুদ্ধপূজা, শীলগ্রহণ, সংঘদান ও ভিক্ষু সংঘের ধর্ম দেশনা, অনুত্তর পূণ্যক্ষেত্র ভিক্ষু সংঘকে পিন্ডদান, কঠিন চীবর দান, ভিক্ষু সংঘের ধর্মোপদেশ।

এছাড়া দেশ ও জাতীর কল্যাণ, শান্তি কামনাতে আকাশ প্রদ্বীপ প্রজ্জ্বলন করে বৌদ্ধ ধর্মালম্বী তরুণ-তরুণীরা। শান্তির বার্তা বয়ে আনতে উড়ানো হয় হরেক রঙের ফানুস।

প্রসঙ্গত, তিন মাস বর্ষাবাস সমাপনান্তে পর ভিক্ষুসংঘকে অধীত জ্ঞান প্রচারের জন্য গ্রাম-গঞ্জে যেতে হয়। এ সময় তাঁরা কল্যাণের বাণী প্রচার করেন। যাতে দেব-মনুষ্যসহ সব প্রাণীর কল্যাণ সাধিত হয়। এসময় বৌদ্ধ ধর্মালম্বীরা তাদের সম্মান জানাতে বিহারে বিহারে আয়োজন করা হয় কঠিন চীবর দানোৎসব।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)