দুধের লিটার ১৫০ টাকা, গোমূত্রের ৩৫০!

গোমূত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে

দুধের লিটার ১৫০ টাকা, গোমূত্রের ৩৫০!

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

ভারতের গুজরাট, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যের পথ অনুসরণ করে কলকাতায় গত তিন-চার বছরে তুঙ্গে উঠেছে গোমূত্রের বিক্রি।

আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্র গোমূত্রের রোগ প্রতিরোধক গুণের দাবিকে বিন্দুমাত্র স্বীকৃতি বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে ‘গোমূত্র চিকিৎসা ক্লিনিক’। বিক্রি হচ্ছে ‘গোমূত্র ক্যাপসুল’ এবং ‘ডিস্টিল্ড’ ও ‘মেডিকেটেড’ গোমূত্র! 

‘গোটাটাই ভণ্ডামি। গাছগাছালি থেকে রাসায়নিক বের করে ওষুধ হতে পারে।

তার ফার্মাকো কাইনেটিক্স ও ডায়নামিক্স রয়েছে। গোমূত্রের এমন কিছুই নেই’, বলছেন ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজে ফার্মাকোলজির শিক্ষক স্বপন।

গোমূত্র আনিয়ে ব্যবসায়ী ললিত আগরওয়াল বললেন, ‘গত কয়েক বছরে এখানে গোমূত্রের চাহিদা পাঁচ গুণ বেড়েছে। মাসে প্রায় ১০ হাজার লিটার গোমূত্র বিক্রি হয় পশ্চিমবঙ্গে।

এ রাজ্যে তেমন উৎপাদন নেই। তাই আমরা নাগপুর থেকে আনিয়ে দিই। ’

‘এক লিটার গোমূত্রের দাম ৩৫০ টাকা। আর ওখান থেকে আনা দুধ আমরা বিক্রি করি ১৫০ টাকা লিটারে। ’

সাধারণত কলকাতায় গরুর দুধ লিটার প্রতি ৩৫-৪৮ টাকার মধ্যে মেলে। তার প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গোমূত্র। নাগপুরের যে ‘গো বিজ্ঞান অনুসন্ধান কেন্দ্র’ থেকে ললিতেরা কলকাতায় গোমূত্র ও দুধ আনান, সেটি মূলত আরএসএস-পোষিত সংস্থা। গোটা ভারতে তাদের ৫০০-র বেশি গোশালা রয়েছে।

সেখানকার চিফ কোঅর্ডিনেটর সুনীল মানসিংহের দাবি, ‘পশ্চিমবঙ্গেও আমরা ১৬টি জায়গায় গোশালা শুরু করেছি। সেখান থেকেও কিছুদিনের মধ্যে ডিস্টিল্ড গোমূত্র মিলবে। ’

ক্যালকাটা পিঁজরাপোল সোসাইটি কোঅর্ডিনেটর সর্বেশ্বর শর্মা বলেন, ‘প্রতি বছর ২০-২৫ শতাংশ হারে গোমূত্রের বিক্রি বাড়ছে। কলকাতায় মাসে প্রায় ৩ হাজার লিটার গোমূত্র বিক্রি হয় আমাদের। ১ লিটার গোমূত্রের দাম পড়ে ১৭৫ টাকা। সেখানে আমরা ১ লিটার দুধ বিক্রি করি ৫০ টাকায়। ’

মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে গোমূত্র থেরাপি ক্লিনিকের বীরেন্দ্র জৈন বললেন, ‘কলকাতাতেও আমাদের অনেক রোগী আছে। অনেক নেতারা ওষুধ নিয়ে যান। মেডিকেটেড গোমূত্র ২১০ টাকা করে লিটার বিক্রি করি। মাসে আড়াই থেকে তিন হাজার লিটার বিক্রি হয়। ’

সমাজতত্ত্বের শিক্ষক অভিজিৎ মিত্রের ব্যাখ্যায়, ‘পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ভিন্ন সংস্কৃতি গ্রহণে একটু বেশি এগিয়ে। এ রাজ্যে এখন গণেশ পুজো, ধনতেরস, বিয়েতে মেহন্দির ধুম। তেমন ভাবেই চলে এসেছে গোমূত্র। ক্রমবর্ধমান ‘মাল্টিরেসিয়াল সোসাইটি’ বা হিন্দিবলয়ের মানুষের সংখ্যাবৃদ্ধির প্রভাবও এর পিছনে রয়েছে। ’

সূত্র: আনন্দবাজার

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর