'সালাম পার্টি' থেকে সাবধান!

সংগৃহীত ছবি

'সালাম পার্টি' থেকে সাবধান!

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

দেখলে মনে হবে কোনো কর্পোরেট অফিসের বড় অফিসার অথবা বড় ব্যবসায়ী। বাচনভঙ্গি ও চালচলনে আধুনিকতার ছোঁয়া। হঠাৎই আপনার সামনে হাজির হয়ে সম্মানের সঙ্গে দেবে সালাম। আপনিও হয়তো থমকে দাঁড়াবেন, কৌতুহলী হয়ে উঠবেন।

আর এই কৌতুহলের সুযোগ নিয়েই হাতিয়ে নেওয়া হবে আপনার টাকা-পয়সা, মোবাইল ইত্যাদি। হ্যাঁ, এরাই ‘সালাম পার্টি’। রাজধানীতে এরকমই একটি সক্রিয় ‘সালাম পার্টি’ চক্রের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পল্টন থানা পুলিশ।

গ্রেপ্তাররা হলো- মো. জিতু (৪৯), মিজান (৩৫), আকতার হোসেন (৪৫), রিপন (২৮) ও পিন্টু মিয়া (৩১)।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাইয়ের এক লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। গত ২৮ মার্চ বিকেল পাঁচটার দিকে পল্টন মডেল থানাধীন দি আইডিয়াল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামন থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে পল্টন থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এ চক্রের সদস্যরা বর্তমান সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে। উন্নতমানের শার্ট, প্যান্ট, জুতো এমনকি কোর্ট ও টাই পড়ে ঘুরে বেড়ায় টার্গেটের সন্ধানে। বিশেষ কায়দায় তারা চাকু, চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্র নিজেদের প্যান্ট বা কোটের পকেটে লুকিয়ে রাখে। যা বাইরে থেকে দেখলে বোঝার উপায় নেই।

ভদ্রলোকের বেশ ধরে তারা ২/৩ ঘণ্টার জন্য রিক্সা ভাড়া করে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাঘুরি করতে থাকে। ব্যাংক অথবা এটিএম বুথের পাশে একজন তীক্ষ্ন দৃষ্টিতে অবস্থান নিয়ে থাকে। লক্ষ রাখে কে কত টাকা নিয়ে বের হচ্ছে। নিজেদের টার্গেট পেয়ে গেলে ওই লোকের পিছু নেয় তারা। পথের মধ্যে মোবাইলে তাদের অপর সঙ্গীদের জানিয়ে দেয় তাদের অবস্থান। এক পর্যায়ে সুবিধামতো জায়গায় রিক্সা নিয়ে ঘোরাঘুরিকারীদের একজন সেই ব্যক্তির সামনে এসে সালাম দিয়ে বলে, ‘ভাই কেমন আছেন? আপনি অমুক না?’ এরই মধ্যে এ চক্রের ছদ্মবেশী আরো কয়েকজন রিক্সাকে ঘিরে ফেলে। নিজেরা নিজেদের গায়ে ধাক্কা দিয়ে তা না হলে অন্য কোনোভাবে টার্গেট ব্যক্তির আশেপাশে একটা জটলা তৈরি করে। এ সুযোগে অন্য সহযোগীরা ভিকটিমের পকেটে হাত ঢুকিয়ে যা পায় নিয়ে নেয় বা তার হাতে ব্যাগ থাকলে ব্যাগসহ টাকা মোবাইল নিয়ে যায়। তারপর খুব দ্রুত সটকে পরে। এভাবে ভিকটিমের চারপাশে হঠাৎ করে জটলা শুরু হয় আর হঠাৎ করেই জটলা শেষ হয়ে যায়। মাঝখান থেকে নাই হয়ে যায় ভিকটিমের টাকা-পয়সা, মোবাইল, মানিব্যাগ ইত্যাদি।

গ্রেপ্তাররা আরো জানায়, তারা নির্দিষ্ট এলাকায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কাজ করে। এক এলাকার সিন্ডিকেট অন্য এলাকায় কাজ করে না। এরা এলাকা ভিত্তিক ৪/৫ জনের দল হয়ে কাজ করে থাকে। গ্রেপ্তার চক্রটি রাজধানীর শান্তিনগর, পল্টন ও কাকরাইল এলাকায় কাজ করত।

এমন চক্রের হাত হতে নিরাপদ থাকতে দরকার আপনার সচেতনতা। টাকা উত্তোলনের সময় আপনার আশপাশে নজর রাখুন। এমন কোনো সন্দেহভাজন কেউ আপনাকে তাদের টার্গেট বানাতে ওঁৎ পেতে রয়েছে কি না। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে পুলিশের সহায়তা নিন। আপনার বড় অংকের টাকা বহনের ক্ষেত্রে থানায় যোগাযোগ করুন। পুলিশ আপনাকে নিরাপদে টাকা বহনে মানি এস্কর্ট সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।

(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)

সম্পর্কিত খবর