গাজীপুরের কালীগঞ্জ পৌর এলাকায় রাজপাড়া গ্রামে পার্শ্ববর্তী বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অন্যের জমি জোরপূর্বক দখল করে রাস্তা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী মো. ইসমাইল হোসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউএনও খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান।
জানা গেছে, কালীগঞ্জ পৌর এলাকার রাজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. ইসমাইল হোসেন, সাফিউদ্দিন, হাফিজউদ্দিন, গিয়াসউদ্দিন, সুরুজ মিয়া, সফিকুল
ইসলাম ও মোসলেমা খাতুনের মূলগাঁও মৌজার আর.এস ২৮, ২০৫ ও ৩১৪ খতিয়ানে ২৬, ২৯, ৩০, ৩১ ও ৮২ দাগে ১৫০ শতাংশ ভোগদখলীয় পৈত্রিক জমি।
কিন্তু গত ৩১ মার্চ উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার মো. আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে অজ্ঞাত ৭০-৮০ জন ভাড়াটে লাঠিয়াল মাটি কাটার ভেকু নিয়ে হামলা চালায়। তারা ১৫০ শতাংশ জমির প্রায় ৭০ শতাংশ ইরি ধান ও সবজি ক্ষেতে বড় বড় গর্ত করে মেম্বারের মুরগি খামারের জন্য ৫০০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২০ ফুট প্রস্থের রাস্তা নির্মাণ করে। জমির মালিকরা এর প্রতিবাদ করতে গেলে মেম্বারের ভাড়াটে বাহিনী তাদের মারধর এবং ভেকু দিয়ে রাস্তার সাথে পিশে দেওয়ার হুমকি দেয়।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, এটা পুরনো সরকারি হালট (জমিজমার মধ্যবর্তী চওড়া আইল) ছিল।
পৌর এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদ রাস্তা করতে পারে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোন লিখিত অনুমতি না মৌখিকভাবে পৌরসভার কাছে অনুমতি নিয়েছি। তবে কোন বরাদ্দ থেকে এই রাস্তা করা হয়েছে সে ব্যাপারে তিনি কোনো জবাব না দিয়ে এরিয়ে যান।
এ ব্যাপারে বাহাদুরসাদী ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাহাবুদ্দিনের সাথে কথা বলার জন্য তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
কালীগঞ্জ পৌর মেয়র মো. লুৎফুর রহমান জানান, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কখনো জোরপূর্বক রাস্তা নির্মাণ করে না। আর সরকারি হালট হলে ওই মেম্বার কাগজপত্র দাখিল করুক। তবে কারো ক্ষতি করে রাস্তা নির্মাণ করা ঠিক হয়নি। আর রাস্তা নির্মাণের ব্যাপারে পৌরসভার কাছেও কোনো অনুমতি নেয়নি।
ইউএনও খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান জানান, অভিযোগ পেয়েছি এবং ওই ইউপি মেম্বারকে গর্ত করা কৃষি জমি মাটি দিয়ে ভরাটের নির্দেশ দিয়েছি।
পাশাপাশি যে জমিতে রাস্তা তৈরি করা হয়েছে তা আদৌ সরকারি হালট কিনা- এ ব্যাপারে তদন্ত করে দেখার জন্য এসিল্যান্ডকে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সোহাগ হোসেন বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশ অনুযায়ী তদন্ত কাজ চলছে। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারবো।
জিন্নাহ্/অরিন/নিউজ টোয়েন্টিফোর